উপমহাদেশে ইসলামের আগমন ঘটেছে পীর/আউলিয়ার হাত ধরে, তাই উনাদের প্রাধান্য এদেশে আগে থেকেও ছিলো, এখনো আছে।লালসালুর মজিদ থেকে গত হয়ে যাওয়া দেওয়ানবাগীর তুলনা করলে দেখা যাবে, বাগী সাহেব উন্নতির গ্রাফ মজিদ থেকে উপরে।পীর ব্যবসায় সফলতার স্পর্শ সবাই হয়তো পায় না। আমি কিছু মুরীদের কারণে একজন জীবন্ত পীরকে চিনি,মুরীদের ভাষ্যমতে:উনি অন্ধকারে আগরবাতির ধোয়ায় অলৌকিক কিছু করতে পারেন, অলৌকিক বলতে যীশুর মত অন্ধকে আলো ফিরিয়ে দেয়ার মত নয়। ভবিষ্যৎ দেখতে পান, সেই অনুযায়ী সতর্ক করেন। উনি সবকিছুই পারেন, কিন্তু উনার স্ত্রী উনাকে ছেড়ে চলে গেছে, পরিবার টিকাতে পারেনি, তাই পা ব্যাথা করলে মহিলা মুরিদ দিয়ে টিপিয়ে নেয়।একদিন উনার কাছের একজন মুরীদের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি দূর্ঘটনায় মারা যায়,ফলে ধীরে ধীরে উনার উপর বিশ্বাস উঠে যায় ও বলতে থাকে উনি কেনো আমাকে আগে জানায়নি। কয়েকমাস পর দেখা গেলো,উনি সেই মুরীদের বাড়ি গিয়ে দেশী মুরগী দিয়ে ভাত খেয়ে বিশ্বাস আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনলো।কিন্তু বউ ফিরিয়ে আনা গেলো না।
তরীকত পন্থিরা নিজের একটু উপরে ভাবে, কারণ আশপাশ সব শরীয়ত নিয়ে ব্যস্ত।তরীকতপন্থীরা উপরে ভাবার কারণেই বোধ হয় দূরত্ব কমে আসছে, সংঘর্ষ দেখেছি কিছুদিন আগে পন্চগড়ে,এটা ভবিষ্যৎ 'এ বাড়তেই থাকবে সম্ভবত।তরীকত থেকে হাকিকত হয়ে মারেফত গিয়ে পৌছালে ব্যবসার চেম্বার খুলে বসা হয়, কিছু সাকসেস রেট খুব কম।।মিডিয়ার ফাঁস করে দেবার কল্যাণে কিছু প্রতিষ্ঠিত করা হয় না,সবাই ভাবতে থাকে আগে সহী পীর/আউলিয়া ছিলো, এখন তা নেই। তাই সবার ভরসা বড়পীর,আজমীর,নেজামউদ্দীনের দরবার। দরিদ্র ঘরে জন্ম নেয়া মমতাজ একসময় পালাগানের আসর জমাতো,পরে টাকা পয়সার কাছাকাছি আসায় ঐ পথ থেকে একটু সরে এসে র্যাপার দিয়ে "লোকাল বাস 'গেয়ে উঠে।বলিউডের এক মুভিতে দেখেছিলাম,গানের জন্য পরিবারচ্যুত হবার পর নিজামউদ্দীনের মাজারে গিয়ে জলসার ঝলক দেখিয়ে, দেশের সেরা গায়ক হয়েছে। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যায় পরিবারচ্যুত হয়ে আমাদের জেমস চট্রগ্রামের স্টেশন রোডের মেসে থেকে সংগ্রাম করে আজকের অবস্থায় এসেছে।
শরীয়ত মানে ইসলামের ভেতর থাকা মানুষগুলো ধর্ম বিশ্বাস দূর্বল হয়, ধর্ম ছেড়ে দেয়, আইডোলজীতে ঝুলে জংগী হয়,ইসলাম নিয়ে গবেষণা করে পছন্দের পণ্থি(সালাফী,ওয়াহাবী,সুন্নি, শিয়া) ডুকে পড়ে। অন্যদিকে আপনারা কখনো দেখেছেন তরীকতপন্থীরা বা মাজারের বিশ্বাসপূজারী লোকজন ঐ বিশ্বাস থেকে সরে এসে ভিন্ন জীবনযাপন করছে? সবাই নিশ্চই মমতাজের পথ খুজে পায় না; হয়তো এদেশে স্টিফেন হকিং জন্মালে উনার রোগ ধরা পড়ার পর উনি শাহজালাল/পরাণের দরবারে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতো;বিগ ব্যাং অন্য কেউ লিখতো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৩