আজ পহেলা বৈশাখ। ১৪১৮। বছরের প্রথম দিন। বিশাখা নামক নক্ষত্রটিতে পূর্নিমা হওয়ার পর যে মাস শুরু হয় তার নাম বৈশাখ। এর উদ্যোক্তা ছিলেন সম্রাট আকবর। বাঙালির ঐতিহ্যের দিন। দিনটিকে ঘিরে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। এদিনের মঙ্গল শোভাযাত্রা সবচেয়ে মজার। আমরা একাধিক বর্ষের সম্মুখিন হই। পহেলা বৈশাখ- বাংলাবর্ষ; থার্টি ফাস্ট নাইট-ইংরেজী বর্ষ; পহেলা মহররম-আরবী বর্ষ। আরবী নববর্ষকে ঘটা করে পালন করতে দেখা যায় না। আমি বুঝিনা একটি জাতি কতটি নববর্ষকে সাদর সম্ভাষণ জানাবে। বাংলা বর্ষ আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির সাথে জড়িত, ইংরেজী বর্ষ ব্রিটিশদের চাপিয়ে দেয়া একটি সংস্কৃতি, আর আমরা মুসলিম বলে পালন করি হিজরী নববর্ষ। অবশ্য পূর্বে হিজরী বর্ষকেই বিশ্বের সর্বত্র একযোগে অনুসরণ করা হতো। অত:পর মুসলিম জাতির আধিপত্য বিনাশ হয়ে যায়। পরবর্তীতে একটি বিশেষ জাতির কারণে পুরো বিশ্বে চাপিয়ে দেয়া হয় ইংরেজী নববর্ষ।
পহেলা বৈশাখে আমরা নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করে থাকি। তার মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা। আদিবাসী নৃত্য, লোকনৃত্য, বাউল গীতি, গম্ভীরা। গ্রামীন ঐতিহ্যকে এদিন ফুটিয়ে তোলা হয়। খাওয়া হয় পান্তা ইলিশ। পড়া হয় লুঙ্গি, শাড়ি.গামছা..পাঞ্জাবি। অনেকে মাথায় কৃষকের টুপি পড়েন। শুধু একদিনই বা্ঙ্গালিকে স্বরণ করা হয়। বাঙালি সাজা হয়। এক প্রকার ব্যঙ্গাত্বক হিসেবে দেখা হয় এটাকে। আপনি একদিন পুরো বাঙালি সাজবেন। অর কোন দিন খবর থাকবে না। এদিন অনেকে দেশীয় পণ্যের প্রতি অনেক আকর্ষণ দেখায়। পণ্য কিনেও থাকে। ভালতো। আজকের দিনের আকাঙ্খা যদি পুরো বছর থাকতো। কতই না ভাল হতো। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সম্ভাবনা নতুন করে দেখা দিতো। আত্মকর্মসংস্থানের পথ তৈরী হতো। বিদেশী পন্যের প্রতি অমাদের আগ্রহ কমাতে হবে। নিজ দেশের পণ্যের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে।
আজকে ক্যাম্পাসে অনেক মজা হল। বিশেষ করে মঙ্গল শোভাযাত্রায়। খুব নাচা নাচি হল। ক্যামম্পাস মেতে উঠেছিল। পহেলা বৈশাখকে বরণ করে নিল আমাদের পুরো ক্যাম্পাস। সাজ সাজ রব উঠেছিল আমাদের ক্যাম্পাসে। বিবর্তন মার্কেটিং বিভাগের একটি সংগঠন। বহুজাতিক কোম্পানি রবি’র পৃষ্ঠপোষকতায় ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। প্রথমে লোকনৃত্য, বাউল গীতি, আদিবাসী নৃত্য প্রদর্শন করা হয়েছিল। পরে যা দেখাল মনে হল এটি কি থার্টি ফা্সট নাইট নাকি পহেলা বৈশাখ। ব্যান্ড সঙগীত। পশ্চিমার সংস্কৃতির আদলে ড্যা্ন্স। এগুলো বাঙালিত্বকে প্রতিনিধিত্ব করে না। আজকে কি উপভোগ করলাম.....পহেলা বৈশাখ নাকি থার্টি ফাস্ট নাইট........পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে এসব কি দেখলাম......এগুলো বাঙালিত্বকে প্রতিনিধিত্ব করে না।
শাকির আহমাদ
১৪ এপ্রিল ২০১১ইং
সময় রাত: ১০:৩০টা
শের-ই-বাংলা হল
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



