somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ৬ টি কারণে দক্ষ কর্মীরা চাকরি ছেড়ে চলে যায়

২৬ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বলা হয়ে থাকে কর্মীদের চাকরি ছেড়ে দেবার পেছনে প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার নয়, বরং ম্যানেজমেন্টের ব্যর্থতাই মূল কারণ। একটি সমসাময়িক জরিপে দেখা গেছে, আমেরিকান একই প্রতিষ্ঠানে গড়ে দেড় বছরের বেশি কাজ করে না সেখানকার কর্মচারীরা। অনেক ভাল ভাল প্রতিষ্ঠানের অনেক ভাল বেতনের চাকরীও ছেড়ে চলে যাচ্ছেন সেখানকার বেশিরভাগ কর্মচারী। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ম্যানেজমেন্টের ব্যর্থতা। দূর্বল কর্মী-ব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে সেরা কর্মীটি হারিয়ে ফেলছে তার কাজের আগ্রহ। এই কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী-ব্যবস্থাপনার উপর অনেক বেশি দিচ্ছে। ব্যবস্থাপনার যে সকল ভুলের কারণে সাধারণত কর্মচারীরা চাকরী ছেড়ে দিতে অথবা চাকরী পরিবর্তন করে থাকেঃ

১. দূরদর্শী কর্ম-পরিকল্পনার অভাব
অধিকাংশ কর্মচারীই তাদের কাজ সম্পর্কে আগে থেকে অবগত থাকতে চায়। তারা চায় প্রতিষ্ঠানে তাদেরকে কি ধরণের কাজ করতে হতে পারে সে সম্পর্কে একটি নিশ্চিত ধারণা। তারা নিশ্চিত থাকতে চায় এই কাজের জন্য তারা ঠিক কতো পারিশ্রমিক পেতে যাচ্ছে। সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত থাকতে চায়। ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের দূরদর্শী পরিকল্পনা কর্মচারীদের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হলে সাধারণত কর্মচারীরা সে প্রতিষ্ঠানে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

২. প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যের সাথে বিচ্ছিন্নতা
প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই তাদের কর্ম পরিচালনার সুবিধার্থে একটি নির্দিষ্ট মিশন বা উদ্দেশ্য ধার্য করে থাকে। এই উদ্দেশ্যটি যথা সম্ভব সহজ উপায়ে কর্মীদের সামনে তুলে ধরতে হয়। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সম্পর্কে জনমনে একটি স্বচ্ছ ধারণা থাকলে তা কর্মচারীদের কাজে উৎসাহ জোগায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে গুগল (Google) এর কথা। গুসলের সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষেরই কোন ধারণা নেই। কিন্তু এই সংস্থাটির উদ্দেশ্য, "বিশ্বের সকল প্রকার তথ্য সংগঠিত করা এবং তা বিশ্ব জুড়ে সহজলভ্য ও ব্যবহার উপযোগী করে তোলা" যা আমাদের সবার কাছেই খুব সহজবোধ্য ও সুস্পষ্ট।

৩. সহানুভুতির অভাব
বর্তমান যুগে একই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন কাজ করার বাসনা নিয়ে কেউ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে না। এযুগের কর্মীরা সবসময় ভাল সুযোগের সন্ধান করতে থাকে এবং সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পছন্দ করে। এরপরেও কর্মীদেরকে প্রতিষ্ঠানে আটকে রাখার একটি সহজ এবং কার্যকরি পদ্ধতি হচ্ছে, কর্মীদের মন্তব্য প্রকাশ করার জায়গা তৈরী করে দেয়া। কর্মীদের বিশ্বাস করাতে হবে যে, তাদের সকল প্রকার মন্তব্য প্রতিষ্ঠানটির জন্য খুবই মূল্যবান। তাছাড়া সহামুভূতিশীল আচরণের ফলে কর্মীটি নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করবে এবং কর্মক্ষেত্রে তার দয়িত্বশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

৪. মোটিভেশনে ব্যর্থতা
অনেক সময় কাজের ধরণ অনেক সহজ হয়ে থাকলেও, কার্যকরি উৎসাহের অভাবে কর্মীরা কাজ ছেড়ে চলে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পর্যাপ্ত উৎসাহ প্রদানের কারণে অনেক কঠিন কঠিন কাজও কর্মীদের দিয়ে করিয়ে নেয়া সম্ভব। কাজের প্রতি কর্মীদের উৎসাহ জোগানো সম্পূর্ণটাই ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় কেউ কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা কাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কর্মীরা আর্থিক পুরুষ্কারের বদলে কাজের সাফল্যটাই মুখ্য করে দেখে থাকে। সাধারণত এক্সট্রিনসিক (extrinsic) ও ইনট্রিনসিক (intrinsic) এই দুইটি উপায়ে কর্মীদের কাজের উৎসাহ জোগানো যেতে পারে। এক্সট্রিনসিক মোটিভেশন বলতে সাধারণ বেতন, বোনাস ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহ প্রদান করাকে বোঝায়। এবং ইনট্রিনসিক মোটিভেশন বলতে কর্মীর কাজের সাফ্যলের জন্যে তাকে বিশেষ প্রশংসা প্রদান করাকে বোঝানো হয়ে থাকে।

৫. অনিশ্চিত ভবিষ্যত
প্রত্যেক কর্মচারীই পদোন্নতির আশা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে থাকে। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পর থেকে কর্মীদের অভিজ্ঞতা এবং কাজের মান বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তখন যে চায় একই প্রতিষ্ঠানে তার পদোন্নতি ঘটুক। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে একজন কর্মচারীর ভবিষ্যত অবস্থান যদি অনিশ্চিত হয় দাঁড়ায়, তবে সে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের চেষ্টা করে থাকে।

৬. একঘেয়েমিতা
কর্মীদের কাজের পরিমাণ নির্ভর করে কর্ম পরিবেশের উপর। একটি নির্দিষ্ট ডেস্কে বসে একনাগাড়ে কাজ করে যেতে হলে, কর্মীদের কাজের গতি ধীর হয়ে যায়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে কর্মীরা অলস। একই জায়গায় বসে গতানুগতিক বিষয় নিয়ে অনেক সময় ধরে কাজ করার ফলে এমনটা হয়ে থাকে। কাজের পরিবেশ যদি চিত্তাকর্ষক ও সহায়ক হয়, তবে এই সমস্যাটা সহজেই দূর করা সম্ভব। গতানুগতিক নয়টা-পাঁচটা সময়সূচী পরিবর্তনের মাধ্যমে কর্ম পরিবেশে একটু ভিন্নতা আনা সম্ভব।


মূলঃ ফর্বস
View this link
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×