আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
মস্কোতে এসে অব্দি এরা গুরুর গার্লফ্রেন্ড 'লুদমিলা'কে কাছ থেকে দেখেছে –অতীব সুন্দরী হবার পরেও অতি ভক্তিতে কেউ একবারের বেশী দু’বার মুখ তুলে তাকায় নি। চুলা আর ফেরদাউস এখনো কোন মাইয়া যোগাড় করতে পারেনি। ভাষা জানেনা আর ভিসার সমস্যা আছে বলে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এরা কেউ বাইরে যায় নাশ। গেলেও- চোরের মত অতি সন্তর্পণে। রাস্তা ঘাটে শপিং মলে কিছু রুশ নারীকে দেখেছে এরা মাত্র- কারো গা ঘেঁষে দাঁড়ানোর সুযোগ ও হয় নি কখনো। সেজন্য মাঝ বয়েসি দোকানদার মহিলাদের সুযোগ পেয়ে কেউ কেউ বড় ত্যক্ত করে।
গুরু আচমকা ফোন করে জানালেন যে, আজকে সন্ধ্যায় তাঁর দু’জন নারী অতিথি তাদের ওখানে। রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যেই তাদের এখানে আসা। তারা যান সাধ্যমত খাতির যত্ন করে। কোনরকম অসম্মান করলে ঘাড় মটকে দিবেন।
মুল বিষয় হোল; মেয়ে দুটো হোল গুরু’র মেয়ে বন্ধুর বান্ধবীর ছোট বোন আর তাঁর ক্লাসমেট। এরা দু’জন সুদূর ভারোনেঝ থেকে মস্কোতে আসছে কি একটা পরীক্ষা দেবার জন্য। মস্কোতে তাদের কোন আত্মীয় স্বজন নেই। বোনের বান্ধবীকে বলে থাকার একটা যায়গার ব্যবস্থা করেছে।
তাদের আসার খবরে ওদের মধ্যে দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হোল। ঘর দোর গোছ-গাছের জন্য হুলস্থূল শুরু হয়ে গেল! দিনের আলোয় পর্দা সরিয়ে রুমের দিকে তাকিয়ে সবাই মনে মনে নিজেকেই গালি দিল! এতদিন আমরা এমন শুয়োরের খোঁয়াড়ে ছিলাম।যেখানেই হাত দেয় সেখানেই স্তুপাকৃত ময়লা।বিকেল থেকে শুরু হোল রান্নার আয়োজন- সবাই খুব আনন্দ চিত্তে রান্না করছে আর গুরুর সেই গান গাচ্ছে~ নো উইমেন নো ক্রাই~
ওই মেয়েটারা বোধ হয় ইংরেজি বোঝেনা – নাহলে কি দারুন খুশী হোত এই গান শুনে।
ভাবত;ছেলেগুলো কতই না মানবিক-উদার এরা গান গায় একসাথে গলা মিলিয়ে~ নো উইম্যান নো ক্রাই~
আজকে ওরা এখনো কেউ মদ স্পর্শ করেনি। মাতাল না হয়েই কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বুজে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে গাচ্ছে,ওহ হো ইয়া~ নো উইম্যান নো ক্রাই~ আহা হা ~নো উইম্যান নো ক্রাই~
ওরা অকারণে হাসছে। এ ওর দিকে ইশারায় চোখে চোখে কথা বলছে, দুষ্টু মিষ্টি কথা! রাঁধুনিকে আজ সবাই রান্নার টিপস দিচ্ছে। রাশিয়ানরা খাবে ঝাল যেন না হয় বস। কালো রুটি আনা হইছে? ও আল্লাহ কালো রুটি ছাড়া মাংসের ঝোল খাবে ক্যামনে?
লিটন মামু, তুমি যাও না মাগাজিনে( শপিং মল)- কালো রুটি আর শসা নিয়ে আস? লিটন মামু হেসে বলে -কিরে মাসুম্যা, শালা নোয়াখাল্যা- আমারে ভুং ভাং দিয়ে একলা পাঠাইবা। আমি পুলিশের হাতে ধরা খাই আর তোমরা এইখানে মৌজ মাস্তি কর!
সবাই হো হো করে হাসে। মাসুম হাসতে হাসতে বলে,- ঠিক আছে মামু চল আমরা দুইজনেই যাই।
সন্ধ্যের মুখে মেয়ে দুটো আসল। এমন পরির মত মেয়ে মস্কোতেও কদাচিৎ চোখে পড়ে। ওদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সবাই হাঁ হয়ে গেল। এতগুলো ছেলে দেখে মেয়ে দুটো ঘাবড়াল না। প্রিভেদ' বলে সম্ভাষন জানিয়ে গায়ের ভারি পোষাক দরাজার পাশে যথা স্থানে ঝুলিয়ে- উঁচু বুট জোড়া জুতার সেলফে রেখে গট গট করে রুমের দিকে এগিয়ে গেল। ওদিকে দশজন বঙ্গ যুবক তখন থতমত খেয়ে লজ্জা শরমে লেজে গোবরে পাকিয়ে ফেলেছে!
প্রথমে চেহারা দেখে মুগ্ধ হয়ে ছিল এখন ফিগার দেখে টাসকি খেয়েছে। আয় আল্লাহ কি সুন্দর – মনে হয় বেহেস্ত থেকে নেমে আসছে!! যে একটু রুশ ভাষা জানে দু’চার অক্ষর সে আইয়ে আইয়ে বৈঁঠিয়ে বৈঁঠিয়ে বলে রান্নাঘরে নিয়ে বসাল!
তরুনীদ্বয় কারো তেমন তোয়াক্কা না করে নিজেরাই সামোভারে পানি গরম করে শুধু লিকার চা আর কালো রুটি খেল। তারপরে দু’জনে দীর্ঘ এক গল্প জুড়ে দিল।
ওরা ভেবেছি একসাথে গপ সপ হবে, পেগ ঢালা ঢালি হবে। সবাই আবেগ নিয়ে~ নো উইম্যান নো ক্রাই~ গান শোনাবে। ওদের ভাঙ্গা ভাঙ্গা রুশ ভাষা শুনে মেয়েরা খিল খিল করে হেসে গড়িয়ে পড়বে- হয়তো ওদের কারো গায়ের উপরেই পড়বে। কেউ একটু সাহসী হয়ে ওদের কাছে একটু নাচের তালিম নিতে চাইবে- রাতে একসাথে জম্পেশ খানাদানা। তারপর.... ওরা ঘুমাবে কোথায়?
আমাদের রুমে ঘুমালে কি আমরা সারারাত এই রান্না ঘরে কাটাব? দরজা আটকে দিলেতো তাই থাকতে হবে! দরজা কি আটকাবে? না আটকালে... নাহ থাক ভাবতে পারছি না। মেয়ে দুটো গল্প করছে আর ওরা বড় রুম থেকে একজন দু;জন করে এসে ঠারে ঠুরে দেখে যাচ্ছে। কেউবা এমনিতেই রান্না করা তরকারি একটু নেড়ে চেড়ে দিচ্ছে। সাহসী হয়ে একটু কাছ থেকে দেখে কেউ ভিতরে গিয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তাদের দৈহিক সৌন্দর্য আর অপ্সরীর মত রূপের বর্ণনা করছে। সবাই যে কত স্বপ্নের জাল বুনছে- সেটা ঠাহর করতে ঈশ্বরেরও বেগ পেতে হবে বলে মনে হয়!
রাত সাড়ে আটটার দিকে লিটন মামু গিয়ে জিজ্ঞেস করল, কুশাচ বুজেস(খাবা নাকি)?
মেয়ে-দুটো সমস্বরে বলল, নিয়ে- নিয়েত!
মামুর ভাষার দৌড় অতটুকুই! কেন খাবেনা কিজন্য খাবেনা? ওদের জন্য কত খাটুনি করে রান্না করেছে। বাঙ্গালী খাবার একবার খাইলে সারাজীবন আঙ্গুল চাটবে।এইসব কত কথা তাঁর মনের মধ্যে আঁকুলি বিকুলি করছে কিন্তু ভাষা না জানায় কিছুই সে বলতে পারছে না!!! শেষ মেষ উপায়ান্তর না দেখে সিগারেট প্যাকেট বের করে মুখ খুলে তাদের সামনে নিয়ে বলল, কুরিত বুজেস?
মেয়েরা এবার একটু হেসে, সিগারেট নিল! সেও একখানা সিগারেট তাদের সাথে ধরিয়ে একটু ফাঁকে গিয়ে টানল। এর মাঝে মাসুম দু’বার এসে দেখে গেছে। তাঁর চোখে স্পষ্ট ঈর্ষার ছাপ।
মামু যখন বের হবে মেয়ে-দুটো তখন আচমকা জিজ্ঞেস করল, কিছু যদি মনে না করেন, বলবেন কি আমরা কোথায় ঘুমাব?
মামু- যদি কিছু মনে না করেন' ছাড়া কিছুই বুঝেন নাই। তিনি ফ্যাল ফ্যাল করে তাদের দিকে তাকিয়ে রইলেন। একটা মেয়ে তাঁর সমস্যা বুঝে হেসে ফেল, সে মাথার একপাশে দুটো হাত দিয়ে মাথাটা হেলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করতেই মামু’ বুঝে ফেলল।
বড় সড় সেই রুমটাতে সাড়া ফ্লোর জুড়ে কার্পেট বিছানো আর এক কোনে সেমি ডাবল একটা স্প্রিং এর খাট। সেখানেই বিছানা কম্বল সাজিয়ে রাখা। মামু সেখানে গিয়ে তাদের শোবার যায়গা দেখাতেই তারা ঘুমানোর তোড়জোড় শুরু করে দিল।
ব্রাশ করে এসে দুজনেই সবগুলো ছেলের জ্বলন্ত চোখের সামনে-শুধু শুভ রাত্রি বলে পাশাপাশি কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল। উপায়ান্তর না দেখে ওরা ডিম বাতিটা জ্বেলে বড় বাতিটা নিভিয়ে দিল।
এর পরের ঘটনাটা ওদের জন্য দারুন শকড আর অভাবনীয় আর চরম রোমাঞ্চকর ছিল। বাতি নেভানোর পরেই মেয়ে দুটো একে কম্বলের নীচে থেকেই কায়দা করে অন্তর্বাস জোড়া বাদে শরীরের বাকি কাপড় খুলে মাথার কাছে পরিপাটি করে রেখে দিল।তাদের নগ্ন মসৃণ শ্বেত শুভ্র বাহুর জ্যোতি এই অল্প আলোতেও সবার চোখ ঝলসে গেল যেন।
খানিক বাদেই ভারি নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের শব্দে ওরা বুঝে গেল তরুণী-দ্বয় ঘুমিয়ে গেছে।
ওরা সবাই ফিস ফিস করে কথা বলছে।একটু খেয়াল করে কান পাতলে সবার দ্রুত হৃৎস্পন্দনের শব্দ শোনা যেত।
রুমের মুল হিটারটা নষ্ট থাকায়- গুরু বাইরে থেকে একটা হিটার কিনে দিয়েছিল। এমনিতে এটা ফুল হিটে চললেও ঠাণ্ডা লাগে- আজ যেন বড্ড গরম লাগছে, নাকি বাইরে ঠাণ্ডা কঃশ্বাসে? কেউ কেউ বাইরে যাবার বাহানায় দরজার কাছে গিয়ে চুপচাপ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ঘাড়টা লম্বা করে মেয়ে দুটোর মুখাবয়ব কাছ থেকে দেখে লম্বা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলছে! দরজার বামদিক ঘেঁষেই ওদের বিছানা।
রুম থেকে বাইরে বেড়িয়েই খানিক বাদে সে ফিরে আসছে- আর কাছের জনের কাছে ফিস ফিসিয়ে বলছে,- ব্যাডারে কি মাল-ই না একখান!!!
এক ঘণ্টা দুই ঘণ্টা! দশ বারোজন যুবক ছেলের ছাই চাপা দেয়া আগুন নিয়ে কি এক দুঃসহ অপেক্ষা।ওরা সম্ভবত কোনদিন কোন নারীর দৈহিক সংস্পর্শ পায়নি। মদে যেন রুচি নেই ওদের। সবচেয়ে সরেস খানাগুলো পরে রইল কিচেনে- প্রতি সন্ধ্যাবেলার মত মাগনিতোলায় আর সুর উঠছে না~ নো উইমেন নো ক্রাই~
মুরুব্বি হবার সুবাদে, লিটন মামুই অবশেষে মদের বোতলের মুখ খুলল!
এতক্ষণ কারো সুরার টান ছিল না কিন্তু এখন মনে হোল মদ না খেলে তারা উন্মাদ হয়ে যেতে পারে। শুরু হোল মদ খাওয়া- গান নেই, ভাব নেই, জাকোজকা নেই শুধু ‘র’ মদ গেলা। যেন সবাই মিলে চাইছে যত দ্রুত সম্ভব মাতাল হয়ে সবকিছু ভুলে যেতে।
আসর থেকে রিপন কখন উঠে গেছে কেউ টের পায়নি। আচমকা কেউ একজন তাকে লক্ষ্য করে তাঁর কর্মকাণ্ড দেখে অবাক হয়ে চেয়ে রইল।
বাকি সবার নজর ও সেদিকে চলে গেছে। কেউ কেউ উঠে গিয়ে কাছে গিয়ে বসল তাঁর। মেয়েদের বিছানার অতি সন্নিকটে রিপন রুম হিটারটা হাতে তুলে ধরে বসে আছে ভীষণ একাগ্রচিত্তে- চারিদিকে কে কি দেখছে সেদিকে তাঁর হুশ নেই। বলতে হোল না কিছু ওরা সবাই মুহুর্তেই বুঝে গেল সে কি করতে চায়।
আহা সে কি ভয়ঙ্কর প্রতি সেকেন্ড অপেক্ষা। মিনিট বিশেক বাদে এ পাশের মেয়েটা- দু’জনের মধ্যে সে-ই বেশি সুন্দরী। তাঁর শরীরে নড়াচড়ার আভাস।গরমে সে খানিকটা হাঁসফাঁস করছে।কেউ একজন ডিম আলোটাও নিভিয়ে দিয়েছে ততক্ষণে। শুধু রুম হিটারের হলদেটে লাল আভায় মিটার-খানেক যায়গা বেশ স্বপ্নলোকের মত দেখা যাচ্ছে।
একসময় মেয়েটা একপাশের কম্বল তুলে ফেলল- দু'য়েকজন চীৎকার করতে গিয়ে নিজের হাত দিয়েই মুখ চাপা দিল।
অতি সূক্ষ্ম কাজ করা লাল অন্তর্বাসের বাইরের শরীরটা সে যে বড় আরাধ্যের। এটা সিনেমা বা দূরদর্শনের দৃশ্য নয়। জলজ্যান্ত মানবীর প্রায় উলঙ্গ শরীর তাদের চোখের সামনে নাকের কাছে। কি এক অদ্ভুত মোহনীয় পরিবেশ।ছেলেগুলো একসাথে হুমড়ি খেয়ে নিঃশব্দ থেকেও নৈশব্দে জনম জনমের দেখা দেখে নিচ্ছে। নাহ শব্দহীন নয় একেবারে-তাদের প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম চাপা নিশ্বাসের শব্দ সেখানে আছে- আর আছে ভীষণ দ্রুতলয়ে চলা হৃদপিণ্ডের শব্দ। অনাঘ্রাত নারী শরির ছোঁয়ার অতুগ্র বাসনা দমনের ভয়ঙ্কর প্রচেষ্টায় মুষ্টিবদ্ধা হাত সবার।
ধীরে ধীরে ভোর হয়ে গেল। অতি যত্নে রান্না করা খাবারগুলো পড়ে রইল সেভাবেই, সে রাতে আর শোনা হোল না ওদের ~ নো উইমেন নো ক্রাই~