somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তেল নিয়ে তেলেসমাতি ~ সাথে ফাও একটি কৌতুক

০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

~নাম না জানা কারো -কার্টুন চিত্র।ফেসবুক থেকে।
গুরুগম্ভীর বিষয়ে লেখার আগে একখানা কৌতুক দিয়ে শুরু করি। মনটা হালকা হবে। হয়তোবা এ কারনে লেখাটা পড়তে ভালো-ও লাগতে পারে। (ও একটা কথা ব্লগারদের অতি প্রিয় ব্লগার আহমেদ জী এস- এর আজকের একটা পোষ্ট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই লেখাটা শেয়ার করছি।)
ভীর রাতে কোন এক মরুভূমিতে বন্ধ থাকা একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে দুই এলিয়েন নেমেছিল।
তারা একটি পাম্পের কাছে গেল। কম বয়েসী এলিয়েনটি ধারনা করল যে এটি এই গ্রহেরই কোন প্রাণী হবে। যুবক এলিয়েন এটিকে বাবু সম্বোধন করে বলল, 'হ্যালো, আমরা শান্তি স্থাপন করতে এখানে এসেছি। তুমি তোমার নেতার কাছে আমাদের নিয়ে যাও।'
স্বভাবতই 'পাম্প' কোন সাড়া দিল না ।
কোন উত্তর না পেয়ে যুবক এলিয়েনটা রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। বুড়ো এলিয়েন তাকে বুঝিয়ে বলল, -' ঠান্ডা হও বাছা-আমি যদি তুমি হতাম, তাহলে আমি আরো নরম হতাম।'
যুবক এলিয়েন তার সতর্কতা উপেক্ষা করে ভীষন রাগত কন্ঠে তার অভিবাদনের পুনরাবৃত্তি করল। আবার কোনো সাড়া পাওয়া গেলনা। পাম্পের উদ্ধত আচরণে হতবাক ও অপমানিত হয়ে সে তার ভয়ানক আস্ত্রখানা বের করে পাম্পের দিকে টার্গেট করে অধৈর্য হয়ে বলল, 'হ্যালো, পৃথিবীবাসী।আমরা শান্তির জন্য এসেছি। আমাদের এভাবে অবহেলা করবে না! আমাদের নেতার কাছে নিয়ে যাও, নইলে তোমাদের ধ্বংস করে দিব!'
বুড়ো এলিয়েন আবার তার সঙ্গীকে সতর্ক করে দিয়ে বলল, 'আমার মনে হয় না তোমার সেটা করা উচিৎ হবে। ওকে অযথাই ক্ষেপিয়ে দিও না।
'ননসেন্স', উদ্ধত, যুবক এলিয়েন উত্তর দিল। সে পাম্প লক্ষ্য করে গুলি চালাল। প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হল। একটি বিশাল অগ্নিগোলক তাদের দিকে ছুটে আসল এবং সেই আগুন আর বাতাসের ঝাপটায় যুবক এলিয়েনটিকে উড়িয়ে নিয়ে ফেলল প্রায় দুই’শ গজ দুয়ে এক এক ক্যাক্টাসের ঝোপের মধ্যে।
ধোঁয়ার চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেল! আগুনে ঝলসে যাওয়া শরির আর কাঁটা ঝোপে ক্ষতবিক্ষত হয়ে তার তখন মরন দশা!
আধঘণ্টা কেটে গেল। অবশেষে যখন সে জ্ঞান ফিরে পেল, তখন সে তার তিনটি চোখের ফোকাস ঠিক করল, তার কুচকে যাওয়া জৈব অ্যান্টেনা কোনমতে টেনে টুনে সোজা করে দিল বয়স্ক বুদ্ধিমান এলিয়েন।
এর পরে তাকে কোন মতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল স্পেস শাটলে।
অবশেষে বড় এক শান্তির নিঃশ্বাস নিয়ে যুবক বলল 'কী ভয়ঙ্কর প্রাণী!', আরেকটু হলে তো অক্কা পেতাম। তা দাদু, তুমি কিভাবে জানলে যে সে এত বিপজ্জনক?'
বৃদ্ধ এলিয়েন আরো কাছে এসে তার দিকে বন্ধুত্বপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ফিস ফিস করে উত্তর দিল,
'বহু আগে গ্যালাকটিক মহাকাশ ভ্রমণের সময় আমার পুর্বপুরুষদের কাছ থেকে জেনেছিলাম; কখনোই অচেনা গ্রহের এমন কোন প্রাণীর সাথে ঝামেলা করবে না যারা তাদের ‘পুরুষাঙ্গ’ কাঁধের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে এনে কানে ঢুকিয়ে রাখে।
বি.দ্র. মুল লেখার সাথে এই কৌতুকের কোন সম্পর্ক নেই।

কটু কি মনটা ভাল হোল? আসুন এবার এর পরে গত ৬ই আগষ্ট জ্বালানী প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য ও আমার নিজস্ব কিছু পরিসংখ্যান উপস্থাপন করতে চাচ্ছি। এই প্রশ্নগুলো অনেকের মাথায় ঘুরপাক খায় কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয়; সঠিক কোন সদুত্তর মেলে না। আমরা কারো কাছে ব্যাখ্যা চাইয়ে পারিনা আর এর ব্যখ্যা দিতে গনপ্রজাতন্ত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই সকল কর্মচারীরা রাজী নন।

৬ আগস্ট ২২ জ্বালানী প্রতিমন্ত্রীঃ
নসরুল হামিদ বলেন, গত ফেব্রুয়ারি থেকে বিপিসি ৮ হাজার কোটি টাকার উপরে লস করেছে। ওই টাকা তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে চলে গেছে। এখন অনেকে বলেন, লাভের টাকা কি আপনারা ধরে রাখছেন? আমরা লাভের টাকা তো ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইনে খরচ করে ফেলেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা গভীর সমুদ্র থেকে পাইপলাইনে তেল নিয়ে আসতেছি, সেখানে খরচ করছি। ভবিষ্যতে আমরা রিফাইনারি করবো, সেই জায়গাতে আমরা কনসালটেন্সিতে খরচ করেছি প্রচুর টাকা। বিভিন্ন প্রজেক্টে খরচ করছি যেন নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহটা রাখা যায় কিন্তু তেলের দাম তো নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্ববাজার।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতি ব্যারেল ডিজেলের দাম মাস দুয়েক আগে ১৭০ ডলারে পৌঁছে গিয়েছিল। তখন যদি দাম সমন্বয় করা হতো, তাহলে ডিজেলের দাম হতো ১৬০ টাকা। এখন কিছুটা কমে ১৩৯ ডলারে নেমেছে। আমরা চিন্তা করলাম, এখন যদি দাম সমন্বয় করি তাহলে তো আমার ১৬০ টাকা করতে হচ্ছে না। এখন বিপিসির আমদানি খরচ হচ্ছে প্রতি লিটারে ১২২ টাকা। সেখান থেকেও কমিয়ে ১১৪ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১১৪ টাকা করার পরও কিন্তু বিপিসির লস করতে হবে। যদি প্রতি ব্যারেলে ৭৯ ডলার থাকে, তাহলে বিপিসির লস হয় না। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও কিন্তু দাম ১১৪ টাকা। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১২২ টাকা তেলের দাম, আমেরিকায় যেটা ৫৫ টাকা ছিল, এখন ১৫৫ টাকা। এটা অস্বাভাবিক একটি পরিস্থিতি। আমি মনে করি, এই সমন্বয়টা সবাইকে কষ্ট দেবে; এটা আমি স্বীকার করে নিচ্ছি কিন্তু উপায় কী?’
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি এই সমন্বয়টা না করতাম তাহলে বিপিসির পক্ষে অসম্ভব ছিল তেল ইমপোর্ট করা। আরেক দিকে ডলারের দামও বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অকটেন ও পেট্রলের দাম বাড়ানো হয়েছে, কারণ অকটেন খুব অল্প পরিমাণ ব্যবহার করা হয়। কিছুটা আমদানি করি, কিছুটা উৎপাদন করি। দুটি সমন্বয় করেই অকটেন সরবরাহ করা হয়। আগে অকটেন আমরা পুরোটাই উৎপাদন করতে পারতাম কিন্তু অকটেনের চাহিদা বেড়ে গেছে। আর অকটেন ও পেট্রলের দামটা যদি বেশি পার্থক্য থাকে, তাহলে ভেজাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে আমরা এই পরিস্থিতিতে যেতে বাধ্য হয়েছি।
( গতকাল চ্যানেল ২৪ এর খবরঃ বিপিসির মোট লাভ ছিল; ৪৮ হাজার কোটি টাকা। আজ প্রথম আলোতে লিখেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। মন্ত্রী বলেছেন কিছু টাকা ব্যাঙ্কে রাখা হয়েছে। এখন বলছেন সব টাকা খরচ হয়ে গেছে!! চ্যানেল ২৪ এর প্রতিবেদনে উন্নয়ন ও লোকসান সহ বিপিসি হিসাব দিতে পেরেছে; ২৬ হাজার কোটি টাকার, আরো ২২ কোটি টাকা থাকার কথা। সেই টাকা কই গেল!! প্রতিমন্ত্রী একবার মনে হয় বলেছিলেন ব্যাঙ্কে কিছু টাকা গচ্ছিত আছে।)

এখন আমার নিজস্ব পরিসংখ্যান তেলের আমদানী মুল্য, পরিশোধনের ব্যয়, ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি, লাভ লস ইত্যাদি বিষয়াদি নিয়ে। এখানে পাঠক বিশেষ ভাবে মনে রাখবেন যে, এতদ বিষয় আমি কোন বিশেষজ্ঞ নই। ভুল-ভ্রান্তি থাকলে সংশোধন করে দিলে আনন্দিত হব।
ক্রুড অয়েল এর মুল্য ফেব্রুয়ারিতে ছিলঃ ৯০.৭৪ ডলার x ৮৬ টাকা/ প্রতি ডলারের মূল্যমান
মার্চ -১৩০ ডলার
এপ্রিল-১১৯ ডলার x ৮৬.৫ টাকা
মে তে সর্বোচ্চ ছিল -১২৩ ডলার x ৮৭.৯০ টাকা
জুন-১১৮ ডলার x ৮৯.০০ টাকা
মধ্য জুলা-তে নেমে আসে ১০০ ডলারে x ৯৪.০০
আগস্টের শুরুতে ছিল ১০৬.৮ x ৯৪.৮৯
৬ আগষ্ট-৯০.৭ মার্কিন ডলার x ৯৫ বাংলাদেশী টাকা= ৮৬১৬.০০
শুল্ক-৩১৮৮.০০
জাহাজ ভাড়া-৯৫ ডলার+ অন্যান্য ৪৭.৫ ডলার(হোল্ডিং চার্জ, ফিডার ভেসেল ভাড়া, হ্যন্ডেলিং চার্জ)= ১৪২.৫০
শিপিং চার্জ- আড়াই লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ ব্যারেল এর একটা ট্যাংকার প্রতিদিনের জন্য অবস্থান কিংবা চলাচল এর জন্য ৪০ থেকে ৭০ হাজার ডলার খরচ লাগে। সেই হিসেবে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে পরিবহনের জন্য ১ ডলার/ ব্যারেল এর কিছু কম বেশী লাগে। পোর্টে যেহেতু মাদার ভেসেল আসার পর্যাপ্ত নাব্যতা নেই সেহেতু বর্হিনোঙ্গর থেকে ফিডার ভেসেলে তেল পোর্ট পর্যন্ত আনতে হয় সেখানে হোল্ডিং চার্জ, ফিডার ভেসেল ভাড়া, হ্যন্ডেলিং চার্জ সহ ধরে নিচ্ছি .৫ ডলার লাগে( আন্তর্জাতিক স্টান্ডার্ড ডাটা থেকে ব্যয় এর হিসাব নেয়া- সত্যিকারের হিসাব জ্বলানী মন্ত্রনালয় ও বিপিসি দিতে পারবে)
রিফাইনারি( সর্বোচ্চ)-১১৪০.০০( ব্যারেল প্রতি)
তেল উতপাদনে মোট খরচ( এভারেজ ব্যারেল প্রতি)-৯৮৯৮.৫০ এভারেজ লিটার প্রতি-৫৮.৬০ বাংলাদেশি মুদ্রায়

পরিবহন ও সরবরাহ খরচ-*২০০.০০( তথ্য পাওয়া যায়নি)
পাইকারি মুল্যে কমিশন-* ১০০০.০০( তথ্য পাওয়া যায়নি)
মোট মুল্য দাঁড়ায়-১১,০৯৮.০০/ প্রতি লিটার ৬৫.৭০ টাকা

ক্রুড অয়েলের মুল্য যদি- ১৩০ ডলার হয় তবে শুল্ক সহ ১৭৮ ডলার হবে। খরচ হবে ৯৮৯৮.৫+ ৫১০৬.০০=১৫,০০৪.০০~ এভারেজ প্রতি লিটার- ৮৮.৭৮
সরকার যদি শুল্ক মওকুফ করে তবে মুল্য আসতে পারে-১০,৪৪৪.০০/ লিটার ৬২ টাকা
৮ আগষ্ট -৮৯.১৯ ডলার /ব্যারেল
* সব হিসাব ব্যারেল প্রতি

এক ব্যরেল ক্রুড অয়েল থেকে আমরা কি কি পাই;
এক ব্যরেলে থাকে ১৫৯ লিটার
এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেল/ ক্রুড অয়েল/ পেট্রোলিয়াম থেকে পাওয়া যায়;
• ৭৩ লিটার পেট্রোল বা অকটেন- +-১৩০=৯৪৯০.০০
• ৩৬ লিটার ডিজেল *১১৪=৪০১৪.০০
• ২০ লিটার জেট ফুয়েল বা হেভি ফুএল অয়েল *১৩০=২৬০০.০০
• ৬ লিটার প্রোপেন * ৩০=১৮০.০০
• ৩৪ লিটার বিটুমিন, আস্ফাল্ট, সালফার-৫৫.৫=১৮৭০.০০
মোট বিক্রি= +-১৭৪৬৯.০০

* সম্ভবত প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল থেকে ১০ লিটার বেশী উপজাত মেলে।(সংশোধন হতে পারে)
(এখানে কেরোসিন,মটর স্পিরিট,এইস এস ডি, মেরিন ফুয়েল, ফার্নেস ওয়েলের মুল্য ধরা হয়নি। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য জেট ফুয়েলের মুল্য ধরা হয়-১.২২ ডলার/লিটার=১১৫.০০( দেশেরটার দাম বেশী কেন বুঝলাম না ?)। কিছু কিছু বিশেষ তেল বা বিটুমিনের মুল্য মার্চ ২০২২ এর পরে সমন্বয় করা হয়নি)- সুত্র বিপিসি ও সংবাদপত্র
শুল্ক-৩৭ শতাংশ!

রিফাইনারি খরচ-১১৪০.০০
পরিশোধনের খরচঃ ভাল মানের রিফাইনারিতে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করতে ৩-৪ ডলার লাগে। এর সর্বোচ্চ খরচ( মান্ধাতা আমলের রিফাইনারিতে) ১০-১২ ডলার।(সংশোধন হতে পারে)
সরবরাহ খরচ-২০০.০০
পেট্রোল পাম্প মালিকদের ও বিক্রেতাদের কমিশন- +- ১০% হিসেবে( সঠিক তথ্য জানা নেই)
----------------------
প্রতিদিন আমাদের সবমিলিয়ে কত লিটার তেল( পেট্রোল,দিজেল,অকটেন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস ফুয়েল সহ সব ধরনের পেট্রোলিয়াম ফুয়েল) লাগে? সম্ভবত কমবেশী তিন কোটি লিটার! ( বিপিসির কোন তথ্য পাইনি, ওয়ার্ল্ড ও মিটারের তথ্য বিশ্লেষন করে)
গড়ে প্রতি লিটার তেল ১০৩.৩৫ টাকা হিসেবে বিক্রি হয় ৩১০ কোটি টাকার কিছু বেশী।( হিসাবে গড়মিল থাকতে পারে)
তেলের মুল্য ১৩০ ডলার হিসেবে মোট খরচ পড়ে লিটার প্রতি-৮৮.৭৮ টাকা। এর সাথে পরিবহন, কমিশন, চুরি সহ অন্যান্য বাবদ ১২ টাকা= ৯০.৭৮
সেই হিসেবে মোট খরচ দৈনিক = ২৭৩ কোটি টাকার কাছাকাছি।
তার মানে লাভ ৩৭ কোটি টাকা প্রতিদিন। এর পরে ১লক্ষ ৮৮ হাজার ব্যারেল তেলে শুল্ক পাচ্ছে প্রায় ৮৬ কোটি টাকা( ব্যারেল প্রতি ১৩০ ডলার হিসেবে)
বিপিসির আয় সহ সরকারার কোষাগারে জমাহচ্ছে প্রতিদিন ১২৩ কোটি টাকা।( বিপিসি’র টাকা তো সরকারের টাকা না-কি?)
আর ক্রুড অয়েলের দাম যদি ৯০ ডলার হয়? সে হিসাবে না-ই বা গেলাম!

শুধু ক্রুড অয়েল থেকে যে পরিমান ডিজেল,ফার্নেস অয়েল সহ অন্য কিছু অতি প্রয়োজনীয় ও বেশি ব্যাবহৃত জ্বালানী পরিশোধন প্রক্রিয়ায় বের হয় সেটা প্রয়োজনের তুলনায় কম হবার কারনে কিছু আমদানী করতে হয়। সেই আমদানী ব্যয় স্বভাবতই বেশী।
এইসব অতিরিক্ত ব্যয়, আমার হিসেবের ভুল, অতিরিক্ত কিছু খরচ ২০% বাদ দিলেও শ’খানেক কোটি টাকার কাছে থাকে।
( এখানে ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর- এর দেয়া হিসাবগুলো যোগ করে দেয়া যায়।)
এর আগে বিশ্ব বাজারে( করোনাকালীন) তেলের দাম ছুঁয়েছিল প্রায় শুন্য ডলারে। বাংলাদেশ হয়তো শুন্য ডলারে তেল কিনতে পারেনি তবে বেশ কম দামেই কিনেছে তখন। কিন্তু সেই সময়ে তেলের দাম কমাতে বলা হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত বলেছিলেন; ‘থাকনা এই দামে। বিপিসি এখন কিছু লাভ করলে ভবিষ্যতে তেলের দাম বাড়লে এখান থেকে ভর্তুকি দেয়া যাবে’। লসের বিষয়টা ঘটা করে বললেও বিপিসি লাভের বিষয়টা একদম চেপে গিয়েছিল। তবে সুত্রমতে, বিপিসি সেবার নাকি ৬০ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছিল।

কিন্তু ক্যামনে কিভাবে প্রতিদিন শত কোটি টাকা করে আট হাজার কোটি টাকা লস করল বিপিসি? লাভের সেই ৬০ হাজার কোটি টাকা না হো্ক তবে ৪৮ হাজার(চ্যানেল ২৪) কিংবা ৪৩ (প্রথম আলো) হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল তা কি আমরা মানে ম্যাঙ্গো পিপল কোনদিন জানতে পারব?????????????

( আজাইর‍্যা তথ্য উপাত্তঃ ব্লুমবার্গ, ওয়ার্ল্ড ও মিটার,বিপিসি, প্রথম আলো, চ্যানেল ২৪ সহ বিভিন্ন ওয়েব সাইট থেকে নেয়া হয়েছে। এর থেকে বেশী জানাতে পারব না)
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যেসব ব্লগার মন্তব্যে তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছেন; আপডেটঃ ৮ আগষ্ট ১১ঃ০০

মন্তব্য ব্লগার @ জুলভার্ন এর-
~সরকার যদি সত্যি সত্যি বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকট দূর করতে চায়, তাহলে উচিত হবে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন, ২০২১’ নামে ‘দায়মুক্তি’ আইনটি বাতিল করা। এরপর এ খাতের সব অনিয়ম, দুর্নীতি এবং ভুল নীতি ও কৌশলের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। এটা খুবই স্বাভাবিক যে অপরাধ করেও যদি বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয় না থাকে, তাহলে একই ধরনের অপরাধ বারবার ঘটতে থাকবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, যার সঙ্গে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নটিও জড়িত, সেখানে এ রকম দায়মুক্তি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

ব্লগার জনাব @ সাড়ে চুয়াত্তুর-
~আপনি সম্ভবত প্ল্যান্ট মেশিনারির অবচয় (depreciation ) হিসাবে ধরেননি। এদের কয়েক হাজার কোটি টাকা মূল্যের প্ল্যান্ট মেশিনারি থাকার কথা। এগুলির অবচয় অনেক টাকা হওয়ার কথা।
আরেকটা হতে পারে যে এদের অনেক দেশী/ বিদেশী ঋণ থাকতে পারে। সেই ঋণের উপর সুদ কত কোটি টাকা আমরা জানি না।
এছাড়াও এদের প্ল্যান্ট এবং প্রশাসনিক অনেক ফিক্সড খরচ আছে। সেটাও কম হওয়ার কথা না।
ঋণ থাকলে এদেরকে অনেক বড় অংকের টাকা ঋণ শোধ করতে হতে পারে।

ব্লগার @তানভির জুমার-
~ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে ১৩ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি আমানত হিসেবে জমা রেখেছে বিপিসি। চলতি বছরের ১২ জুন তৈরি বিপিসির একটি প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে মোট ২৫ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা জমা ছিল। এর মধ্যে নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর ১৪ হাজার ১০৬ কোটি টাকা ছিল মেয়াদি আমানত হিসাবে। দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি এসব আমানত থেকে বড় অংকের সুদ আয়ও পায় বিপিসি।
এনবিআর বিপিসিকে চিঠি দেয় ট্যাক্সের টাকা দিতে, কিন্তু বিপিসি ট্যাক্সের টাকা দিতে পারে না কেন? কারণ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে বিপিসি সবচেয়ে বেশী টাকারেখে ছিল আর এই ব্যাংকগুলোই এখন সবচেয়ে বেশী ঋন খেলাপী। প্রশ্ন হল ব্যাংকের টাকা কোথায় গেছে? উত্তর: লোটপাট হয়েছে।

ব্লগার @ হাসান কালবৈশাখী বলেছেনঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম দুর্নিতির আখড়া পেট্রলিয়াম সেক্টর।
আমদানি ক্রয় থেকেই দুর্নিতি শুরু। কিনে ওজনে, টন হিসেবে, ডিলারদের কাছে বিক্রি করে লিটারে।
জাহাজ থেকে খালাশ, ডিপোতে ঢুকানো ট্যাঙ্ক লরিতে লোড, খালাস ... ... প্রতিটি পর্বে পর্বে বিশাল বিশাল দুর্নিতি।
সরকারি কর্তারা কোন ভাবেই এই লোভলীয় সেক্টর হাতছাড়া করতে চায় না।

অন্যান্ন দেশে সরকারি ডিপো হোক বেসরকারি ডিপো হোক যার যার তেল নিজেরাই ইমপোর্ট করে, আন্তর্জাতিক বাজারদর অনুযায়ী প্রতিযোগিতামুলক মুল্যে বিক্রি করে, প্রাইস ডেইলি আপডেট হয়।
বেসরকারিদের হাতে দিলে দুর্নিতির নামে সিষ্টেম লস থাকবে না, দামও রিজনেবল থাকবে, সরকারকেও বেতন দিয়ে এত বিশাল মাথাভারি আপদ পালতে হয় না।

ব্লগার @ এমজেডএফ দুটো সমস্যা তুলে ধরে তার সমাধান দিয়েছেন;
আমাদের দেশের জন্য এতে সমস্যা হচ্ছে দুটি:
তখন দেখা যাবে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে তেলের যেই দাম উন্নয়নশীল বাংলাদেশেও সেই দাম! এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অল্প আয়ের মানুষের সমস্যা হবে। দেশের শিল্পখাতে উৎপাদন মূল্য বৃদ্ধি পেলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রপ্তানী কমে যেতে পারে।
সমাধান: আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের দাম বেশি হলে সরকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাময়িকভাবে ভুর্তুকি দিতে পারে। যেমন উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে জ্বালানী তেল কেনার সময় ক্রেতাকে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। করোনাকালীন সময়ে যখন তেলের দাম খুব কম ছিল তখন অনেক দেশে এই শুল্কের হার বাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন আবার তেলের দাম যখন খুব বেশি তাই শুল্কের হার আবার কমিয়ে দিয়েছে।

~সবিশেষ ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা সব ব্লগারদের যারা তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন।

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:০৯
২৪টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×