somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে চাইতাম

১৪ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা যখন খেলেছি তখন বাংলাদেশের ফুটবলের মান আরো ভালো ছিল। চীন, ইরান, সৌদি আরবের মতো দলগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সামর্থ্য ছিল আমাদের জাতীয় দলের। এশিয়ার সেরা দশটি দলের মধ্যে থাকার লক্ষ্য নিয়েই খেলেছি সব সময়। আর স্বপ্ন! স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ খেলার। বাছাই পর্বে গ্রুপের শেষ ম্যাচে কোরিয়াকে হারিয়ে আমরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। সুবাদে আমাদের হাতে বিশ্বকাপের টিকিট। খেলোয়াড়ি জীবনে এমন একটা স্বপ্ন সব সময় তাড়িয়ে বেরিয়েছে আমাকে। স্বপ্নটা পূরণ হয়নি বলেই হয়তো ঘুমের ঘোরে এখনো তা মাঝে মাঝে হানা দেয়।
শৈশবে আমার কাছে ফুটবল ছিল স্বপ্নের খেলা। মাঠে বল নিয়ে ছুটতে পারার মতো আনন্দ আর কিছুতেই পেতাম না। সারা বিকেল মাঠ দাপিয়ে বাসায় ফিরতাম। রাতে ঘুম আসত না, কাল ওদের হারাতেই হবে, এভাবে আমি একটা গোল করবই, ইস! আজকে ওই সুযোগটা কিভাবে নষ্ট করলাম_এমন হাজারো কল্পনা ভিড় করত মনে। সকালে স্কুলে গিয়েও একই ছটফটানি, কখন বাসায় ফিরব, বই-খাতা রেখে কখন মাঠে যাব। সেই মাঠেই জীবনের বড় একটা সময় পার করে এসেছি। ক্যারিয়ারে প্রতিটি ম্যাচই আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রতিটি ম্যাচেই ভালো খেলার তাগিদ নিয়ে খেলতে নেমেছি। সে সময়ে আমাদের জাতীয় দলটাও বেশ শক্তিশালী ছিল। আমি, মুন্না, কায়সার, খুরশিদ বাবুল, ওয়াসিম ভাই আমরা যারা একসঙ্গে খেলেছি তাদের সবার মধ্যেই দারুণ একটা স্পিরিট কাজ করত। সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে দারুণ সমঝোতা ছিল। তার চেয়েও বড় কথা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম খেলার যে ধারাবাহিকতা, সেটা আমরা ধরে রাখতে পেরেছিলাম। এশিয়ার বড় দলগুলোর সঙ্গেও লড়াই করার মানসিকতা ছিল। তাই বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নটা কখনোই অলীক বলে মনে হয়নি। এখনকার ফুটবলাররা যে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নও দেখতে পারবে না, এমন কথা বলছি না। কিন্তু তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। পার্থক্য হলো, আমাদের সময়ে ভিত্তিটা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে পরিচর্যার অভাবে এখন সেটা ভেঙে পড়েছে।
তাই একসময় আমরা যে স্বপ্ন দেখেছি, এখনকার তরুণরা তার থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। স্বপ্ন আর বাস্তবতার ব্যবধান ঘোচার বদলে কেবল বেড়েছেই। কোরিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের স্বপ্ন দেখেছি। সেই স্বপ্নে নিজে হয়তো গোল পাইনি। কিন্তু তাতে কী! প্লেমেকার হিসেবে আসল কাজটা অর্থাৎ গোলটা তো বানিয়ে দিয়েছি। বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়াই আসল কথা। নিজের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব সেখানে গৌণ। এমন স্বপ্নই দেখতাম একসময়। কিন্তু এমন মধুর স্বপ্ন এখন আর মধুর বলে মনে হয় না, শুধু জ্বালাই বাড়ায়।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×