
“.. দীর্ঘ প্রতিহিংসার বিষ মনের মধ্যে পুষে রেখেছিলেন। এটি যেন তার প্রতিক্রিয়া।”
আমরা অনেক কাল আগেই নিউটন থেকে জেনে ফেলেছি, সকল ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। তবে এই প্রতিক্রিয়াটির পেছনের কর্মটি অর্থাৎ হিংসাগুলা তারা কেন ঘটাইয়াছিলেন? উহারা হিংসার আশ্রয় না নিলে প্রতিহিংসার কথা আসে কীভাবে? বেগম জিয়ার মনে এতই হিংসার ভাগারে ভর্তি যে, তিন তিনটি জন্মদিন থাকার সৌভাগ্য(?) হলেও বেছে বেছে পনেরই অগাস্ট তারিখে কেক কাটতে হয়! বিয়েবাড়ির পাশে প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে বিয়ের উৎসবে কাটছাট করতে দেখি আমরা—আর বেগম জিয়ার মনে এতই বিষ যে, কেক তাকে কাটতেই হবে! এই হিংসার প্রকাশের কি খুব প্রয়োজন ছিল?
বিএনপি যখন ভুয়া তথ্য উগরিয়ে জন সাধারণকে এই বলে ধোঁকা দেয়—শেখ হাসিনা বিজয়ী হলে মসজিদে উলু ধনি হবে, বিসমিল্লাহ খেয়ে ফেলবে, ফেনি পর্যন্ত ভারতের পতাকা উড়বে। অসচেতন জনগণ আবার তা বিশ্বাসও করে ফেলে। বেগম জিয়া যদি ভুয়া অভিযোগ এনে হাসিনাকে পিছিয়ে দিতে সদা তৎপর হয়, সেক্ষেত্রে হাসিনা কেন একই কাজ করতে পারবে না—কিন্তু শেখ হাসিনা সেপথে না গিয়ে সম্পূর্ণ আইনগতভাবে তার প্রতিপক্ষকে প্রতিশোধ নিতে কেন কার্পণ্য করবে?
বেগম মোহতারেমা তখন ক্ষমতায়, হাওয়া ভবনের দোর্দণ্ড প্রতাপ—শেখ হাসিনা উত্তরবঙ্গ সফরে। বগুড়ায় অবস্থানকালে রেস্ট হাউসে উঠতে চাইলেন। কিন্তু ভাইয়ার নির্দেশে তাঁকে বরাদ্দ দেয়া হল না। তার ইউনিয়ন নেতারা থাকবেন, সেখানে হাসিনাটা আবার কে? শেষটায় পর্যটন মোটেলে তাঁকে থাকতে হয়। পাবনায় একে খন্দকারকে একইভাবে সেখানে রেস্ট-হাউস ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি। জনাব রিজভী আপনারা কি সেদিন এসব নোংরামির প্রতিবাদ করেছিলেন? কেন সেদিন হিংসার ঝাল ঝেড়েছিলেন? এখন কান্না আসে? এখন কোন মুখে ভেউ ভেউ করে কাঁদেন? নির্লজ্জ কোথাকার!!!!!
দুর্বৃত্ত কর্তৃক ড.হুমায়ুন আজাদ আক্রান্ত হলে তাঁকে ঢাকার সিএমএইচ-এ ভর্তি করা হয়। বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা দেখতে গেলেন। কিন্তু তাঁকে জাহাঙ্গীর গেইটে আটকে দেয়ে হল—ক্যান্টনমেন্টের জন্য তিনি নিরাপদ নন! যিনি সাবেক প্রধান মন্ত্রী, তিনি কিনা সেনানিবাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ! তিনি সেনাদের বললেন গাড়ি রেখে যেতে পারবেন কি না—তারা সম্মতি দিলে শেখ হাসিনা পায়ে হেঁটে সিএমএইচ-এ ড.আজাদকে দেখেতে যান। জাহাঙ্গীর গেইট থেকে সিএমএইচ কম করে হলেও পাঁচ/ছয় কিলোমিটার হবে। কী আশ্চর্য! আর বেগম জিয়া সরকারে থাকুক বা বিরোধীদলে থাকুক তিনি মইনুল রোডের বাড়িতে বসে রাজনীতি করে চলেছেন! তার জন্য ভিন্ন আইন! বিএনপির সমর্থকেরাও মনে করত তাদের নেত্রী একটু স্পেশাল। আওয়ামীলীগ সরকার কাজের কাজ একটি করেছে বেগম জিয়াকে সেনানিবাস থেকে বিতাড়িত করেছে, তার দখল থেকে বাড়িটি উদ্ধার করেছে। মইন উদ্দীন-ফখরুদ্দীন সরকারের যত সমালোচনাই থাকুক, তারা একটি ভাল কাজ করেছে, সেটি হল বিএনপিকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সেবা করে কোনও দলের নয়।
জেনারেল জিয়া আওয়ামীলীগ নেতাদের ওপর স্টিম-রোলার চালিয়েও ক্ষান্ত দেয়নি—বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য বলে জয়কে স্কুলে পড়া অবস্থায় শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আচ্ছা মত পিটুনি দিতে, যাতে করে তাকে বাংলাদেশ থেকে বাইরে চলে যেতে হয়। দেশের সঙ্গে যেন সম্পর্ক শিথিল হয়ে যায় এবং বঙ্গবন্ধুর রক্ত বহনকারীদের প্রতি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি কমে যেতে থাকে। এত কিছু করেও বঙ্গবন্ধুর নামটি মানুষের মন থেকে মুছে দেয়া সম্ভব হয়নি।
ওপরে জিয়া পরিবারদের হিংসার কিছু নমুনা তুলে ধরলাম মাত্র। কথা হল এই সব হিংসার প্রতিহিংসা কি সত্যই ঘটেছে? কিছুই নয়। বেগম জিয়াকে আইনিভাবে তার পাপের শাস্তি দেয়া হয়েছে, ব্যাস এটুকুই! চুরির বিচার হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



