গত সপ্তাহে প্রথম আলোতে মাঝের এক পাতায় ছোট্ট করে একটা সংবাদ ছিল। আমাদের অধিকাংশেরই খবরটা নজর এড়িয়ে গেছে। যাবেই বা না কেন? এই দুনিয়ায় অনেক মানুষের জীবনেরই কোন মূল্য থাকে না। সেই রাজমিস্ত্রীরও ছিল না।
বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাবার জন্য এই অভাগা লোকটি দৌড়ে একটা ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আর সেই মহান ছাতার অধিকারী ছিলেন এই বাংলার বর্তমানের অধিপতি সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্তার আত্মীয়। আর যাবে কোথায়?
সেই লোকটিকে পিটিয়ে মেরেছে আমাদের সেনাপতিরা। আর একজনের হাত পা থেতলে দেওয়া হয়েছে, তাকে রক্ষা করার ব্যর্থ চেষ্টার অপরাধে।
আমি সাধুবাদ জানাই সেনাবাহিনীকে। কেননা রাজমিস্ত্রীর মত একজন নিম্ম পর্যায়ের লোক হয়ে সেনাবাহিনীর মত একটা এলিট শ্রেনীর আত্মীয়ের ছাতার নিচেই যাবে- এমন ধৃষ্টতা দেখানোর শাস্তি এটাই। ধিক শত ধিক ঐ রাজমিস্ত্রীকে। আর রাজমিস্ত্রী আমাদের দেশের এমন কেউ নয় যে তাকে বেচে থাকতে হবে, বা তার বেচে থাকার কোন দরকার আছে। সে মরলেও কিছু না, বাঁচলেও কিছু না।
২
আজকে আর একটা খবর আছে রাজশাহীতে এক রিক্সাচালক গুলিতে নিহত। এসব খবর গরম খবরের ভিড়ে হারিয়ে যাবে। কেউ দেখবে না। কেউ জানবে না ঐ রিক্সাচালকের পরিবার কোথায় আছে, কেমন আছে, কেমনে আছে? আর আমাদের মত এলিট লোকদের এসব খবর রাখাটাও জরুরী নয়। একবার সত্ত্বনা পেয়েছিলাম হয়ত র্যাবের মত পুলিশের ক্রস ফায়ারে পরে এই হতভাগ্য রিক্সাচালকের ভাগ্য খুলে গেছে। পরে বিবিসি থেকে জানলাম, ঐ ভাগ্যবান (বর্তমানে) রিক্সাচালকের বুকে কয়েকটা গুলি লেগেছে। বুঝলাম এইটা ক্রস ফায়ার নয়। এই সব অপদার্থ রিক্সা ওয়ালারা যে কেন জন্মে এই এলিটের দেশে তাই বুঝি না! আর জানটাও শক্ত নইলে রাষ্ট্রের টাকায় কেনা ৩/৪ গুলিই বা খরচ করাবে কেন ?
আমি সালাম জানাই সেইসব এলিট শ্রেনীর সৈন্যদের, পুলিশের।
আরও সালাম জানাই সেই সব লোকদের যারা সেনাবাহিনীকে অকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে ইতিমধ্যেই সেই এলিট শ্রেনীর দলভুক্ত হয়েছেন। আপনাদের কে ছালাম, হাজার সালাম।
আমি রাজমিস্ত্রী আর রিক্সাচালের মত মূল্যহীন জীবনের কাছাকাছিই থাকি। কারন আমার জীবনও মূল্যহীন। এই এলিট আমি চাই না
ছবির জন্য কতৃজ্ঞতাঃ সচলায়তন
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০০৭ ভোর ৬:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




