আমি ঘুরতে যতটা পছন্দ করি বোধ হয় ঠিক ততটাই অপছন্দ করি লিখতে| লিখতে যে ইচ্ছা করে না তা না কিন্তু আলসেমি তারপর কি লিখব সেটা নিয়েই সময় কেটে যায়| যাই হোক এবার ঠিক করলাম ভ্রমন বিষয়ক একটা লিখা পোস্ট করি| আজকেই ঘুরে আসলাম
Anglesey
হচ্ছে নর্থ ওয়েলস এর সবচেয়ে বড় দ্বীপ, পুরো ব্রিটেনে ষষ্ঠ| এর পাশে হচ্ছে আইরিশ সাগর, ওপারে আয়ারল্যান্ড| এর একটি ওয়েলস নাম ও আছে যা আমি উচ্চারণ করতে পারি না YnysYnysYynysYnYnys Mon, (দেখেন তো আপনারা পারেন কিনা) সম্পূর্ণ নতুন একটা ভাষা যদিও ইংরেজি বর্ণমালা ব্যবহার করে| অর্ধেকের ও বেশি ওয়েলস বাসী ইংরেজি এবং ওয়েলস দুটো ভাষায় লিখতে, বলতে এবং পড়তে পারে যা একটা ইংরেজি ভাষী দেশে একটু অবিশ্বাস্য| Anglesey কে বলা হয় ওয়েলস এর জননী| ১২০০ শতাব্দিতে এক ভ্রমনকারী Geraldus Cambrensis ওয়েলস এর চারিদিকে তার বিখ্যাত ভ্রমনকালে বলেছিলেন, Anglesey পুরো ওয়েলসকে ভুট্টা সরবরাহ করতে পারবে|
যায় হোক আমরা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটির মাধ্যমে গিয়েছিলাম| দুটো কোচ (ওরা লোকাল গুলোকে বাস বলে আর দুই শহরে হলে কোচ বলে) জুড়ে প্রায় একশত জন এর মত ছিল| স্বভাবতই বেশির ভাগ চাইনিজ| যাই হোক যাত্রা পথে গাইড এসে যোগ দেয়|
দ্বীপটিকে দুটো ব্রিজের মাধ্যমে মূল ভুখন্ডের সাথে যুক্ত করা হয়েছে| আমরা প্রথমে সেই ব্রিজের কাছের শহরে যেয়ে নামি| শহরটার নাম তা হচ্ছে....দেখেন তো পড়তে পারেন কিনা?
আমার তো মনে হয় দুনিয়ার সবচেয়ে বড় শব্দ!!!
যাত্রাপথে গাইড বক বক করেই যাচ্ছে| তার বেশির ভাগ ইতিহাস অথবা রাজা রাজড়াদের গল্প| তার সাথে মজার অনেক তথ্য|
এইখানে নাকি প্রিন্স উইলিয়ামস RAF (Royal Air Force) এ Search and Rescue Force এ ট্রেনিং করতো
চলার পথে সমুদ্র| এইখানের পাথুরে coast এর আঘাতে নাকি প্রায় ৬০ টির মত জাহাজ ডুবেছে তার মধ্যে বেশির ভাগ এ তোলা যায় নি
আহা পানি কি নীল|সমুদ্রে জলকেলি!
চলার পথে একটা ছোট্ট ওয়েলস গ্রাম চোখে পড়ল....
South Stack
এরপরেই আমাদের গন্তব্য এই বিখ্যাত লাইট হাউস| ১৮ শতকে নাকি এখানে লোক থাকত কোনো ইলেকট্রিসিটি ছিল না কিন্তু ঠিকই এখানে লোক বসবাস করতো|
সাবধান| খুব খাড়া! পড়ে গেলে আল্লাহ ভরসা!!
লাইট হাউসে যেতে হলে ৪২০ টা সিঁড়ি ভাঙ্গতে হয়| তেমন বাপার না!! বাপের বেটা সাদ্দাম হোসাইন???
দেখেন তো কেমন লাগে...খুব বাতাস কিন্তু!
মজাটা টের পেলাম উঠতে যেয়ে! এখন আর কোনো বাপের বেটা নাই! গাইড বেটা আগেই সাবধান করে ছিল , তবে আমরা মাত্র তিনজন নেমেছিলাম|
এর পড়ে একটা মজার একটা তথ্য জানলাম গাইড এর কাছ থেকে| পুরো ইংল্যান্ড এ ট্রেন ইলেকট্রিসিটিতে চলে কিন্তু ওয়েলস নাকি এখনো চালু হয় নাই| ফলে প্রথমে ডিজেল ইঞ্জিন টেনে নিয়ে যায় পরে ইংল্যান্ড এ গিয়ে ইলেকট্রিসিটিতে চলে|
দেখুন ভার্জিন ট্রেন ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে......।
এবার দেখুন নিচের ছবি.....
পুরো নর্থ ওয়েলস এ লোক সংখ্যা প্রায় তিন মিলিয়ন আর ভেড়ার সংখ্যা ১২ মিলিয়ন.....হায়রে কপাল! ১:৪
তাইলে পুরো গবাদিপশুর অনুপাত কি হবে???
উইন্ডমিল (বাস এর ভিতর থেকে তোলা) এছাড়াও আছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট|
Parys Mountain (কপার মাইন)এরপরের গন্তব্য! ১৮ শতকে কপার তোলা হতো| প্রায় ৪০,০০০ টন প্রতি বছর| ত়া দিয়েই অনেকের এবং শহরের ভাগ্য ফিরে|
মজার বাপার হচ্ছে ৩৫০০ বছর আগেও এখানে লোক আসার প্রমান পাওয়া গেছে| কিন্তু তারা মাত্র ৩০ ফুট গভীরেই কাজ করেছিল| খনির জন্য না| কপার পাওয়া গেছে প্রায় ৩০০ ফুট গভীরে|
আমাদের গাইড লিটমাস হাতে| পানির pH নাকি ১.৮~২| খুবই বিষাক্ত!
আমাদের দলবল
এই সেই কপার মাইন
Beaumaris আমাদের শেষ গন্তব্য
খুবই সুন্দর একটা শহর, আইরিশ সাগরের উপকূল বরাবর|
ওই যে দূরে দেখা যায় বিখ্যাত snowdonia পর্বতমালা|
Beaumaris castle
শেষ হয়েও হইলো না শেষ
ফেরার পথে এক জায়গায় ৫ মিনিটের জন্য থেমেছিলাম
এবং
দেখুন তো কেমন লাগে ?
কয়েকটি ওয়েলস শব্দ জেনে নিন
croeso - স্বাগতম
traeth -সৈকত
diolch -ধন্যবাদ
mÔr -সমুদ্র
dŵr -পানি
tŷ -ঘর
craig -পাথর
bwyd -খাবার
haul - সূর্য
glaw -বৃষ্টি
tywydd -আবহাওয়া
pysgodyn - মাছ
ভালো থাকুন|
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:৩০