somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারত ডায়েরী-৩ (শিমলা ও মানালীর পথে যাত্রা)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল ৭:০০টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই ছুটলাম ছবি তুলতে। অসাধারণ সব দৃশ্য। সূর্যের আলো আর মেঘের লুকোচুরি খেলা বলতে গেলে সারাক্ষণই ছিলো। আর পাহাড়গুলো মনে হলো সব কিছুকে আড়াল করে রেখেছে। একই সূর্যের আলোর যে এত রূপ থাকতে পারে তা এই প্রথম দেখলাম। সারাটা সকা্ল কাটালাম ছবি তুলে।








বাড়ীগুলো এত সুন্দর সাড়ীবদ্ধ ভাবে পাহাড়ের গায়ে বসে ছিল যেন মনে হয় পাহাড়ের সাথে যেন তাদের গভীর মিতালী। কত দিন ধরে তারা একসাথে রয়েছে।



আমরা ছবি তোলার ক্ষেত্রে কিছুটা ভাগ্যবান ছিলাম। কারন তখন মাত্র সূর্য মামা উঠি উঠি করছিল। আর আকাশেও যে সাদা মেঘ গুলো ছিল একবারে সূর্যের আলোর সাথে সমান্তরালে।



সারাটা সকাল কাটিয়ে এরপর শিমলা ঘুরতে বের হলাম। কাছেই ছিলো লোয়ার মার্কেট (Lower Market)। নামে Lower Market হলেও মার্কেটটা কিন্তু মোটেও মাটির নিচে নয়। উঠতে হবে বিশাল এক পাহাড়ের সিড়ি বেয়ে। মোটামুটি ভালোই উচুতে। এ জায়গাটি হলো ফুটপাতের উপর মার্কেট। সব ধরনের কাপড় চোপড় পাওয়া যায়। কেউ যদি শীতের পোষাক আনতে ভুলেও যান কোন সমস্যা নেই। এখানেই পাবেন সব কাপড়। দামটা মনে হলো একটু চড়া। তবে মুলোমুলি এ জায়গায়ও আছে।

শিমলা, পুরো শহরটা দাড়িয়ে আছে পাহাড়ের উপর; ভাবতেই অবাক লাগে। আর তাই প্রতিটি রাস্তাই খাড়া ভাবে উপরে উঠে যাচ্ছে। উপরে উঠতে আর নামতেই মোটামুটি ওজন অর্ধেক কমে যাবে। যাদের ওজনের সমস্যা আছে তারা যদি শিমলা এক মাস থাকেন তাহলেই হবে। একবারে স্লীম হয়ে চলে আসবেন। জিরো ফীগার তো কোনো ব্যপারই নাB-)B-)

শিমলার প্রতিটি রাস্তা অবশ্য পিচ ঢালা। তাই হাটতে অসুবিধা হয়না। কিন্তু কষ্ট হয়, পাহাড়ী রাস্তা তো তাই। তবে সাঙ্ঘাতিক বাঁক খাওয়ানো প্রতিটি রাস্তা। ড্রাইভারের একটু অসচেতনতাই একবারে আপনাকে সারা জীবনের জন্য ওপারে পাঠিয়ে দিবে। তবে ড্রাইভার গুলো অনেক অভিজ্ঞ আর প্রতিটি রাস্তাই তাদের মনে হলো মুখস্তের মতো।


এরপর বিকেল হতেই রওনা দিলাম মানালীর উদ্দেশ্যে। পথে এত সুন্দর দৃশ্য যে শুধু আফসোসই লাগল। প্রকৃতি এত সুন্দর কেন? মনে চাচ্ছিল এখানেই মিশে যাই, এই প্রকৃতির সাথে। একই সাথে হিংসাও হচ্ছিল এখানকার অধিবাসীদের কথা মনে করে।


এই দৃশ্যটি পেলাম মানালীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার সময়। আলো ছায়ার এই ব্যপার গুলো দেখে আরও খারাপ লাগছিলো ছেড়ে আসছি বলে।
পথে পড়ল এই ঝড়নাটি। এর পানি নাকি হিমালয় থেকে আসে। আর এই ঝর্ণা থেকেই কৃশ ছবিতে হৃতিক রোশান মাছ ধরেছিল।



আর এটাই সেই জায়গা যেখানে প্রিয়াংকা চোপড়া প্যারাস্যুট থেকে লাফ দিয়ে
যে গাছগুলোর উপর পড়েছিল।

ইহা কিন্তু রঙ্গীন পানি নয়, ইহা হলো ক্যামিক্যাল যুক্ত পানি। পার্শ্ববর্তী সিমেন্ট ফ্যাক্টরী থেকে আসা ময়লা পানি।
আসার পথে পড়ল কুল্লু। এ শহরটা সমতল কিন্তু চারপাশ পাহাড়ে ঘেরা। সন্ধ্যার দিকে বলে ভালো কোনো ছবি তুলতে পারি নাই। তবে আজ তাপমাত্রা -৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। প্রচন্ড কুয়াশা রাস্তায়। রাতে পাহাড়ের গায়ে দেখতে পেলাম এই সাঙ্ঘাতিক দৃশ্যটি।

পাহাড়ের গায়ে কিন্তু আগুন লাগে নি। এ হলো পাহাড়ের গায়ে বসবাসকারী মানুষের বাড়ীর আলো।

মানালী আসতে আসতে রাত ১০ টা প্রায়। আগে ঠিক করে রাখা হোটেলে উঠলাম। হোটেলের নাম ভুলে গেছি। লিখে রাখা উচিত ছিল ডায়েরীতে। আসলে এতই ঠান্ডায় এতই জমে ছিলাম যে সব কিছু ভুলে গিয়েছি। তাপমাত্রা মানালীতে -৮ ডিগ্রী ছিল এই দিন। রাতের খাবারটা খেয়েই দিলাম ঘুম। কারণ আগামীকাল মানালী ঘুরতে যেতে হবে। (চলবে)

আগের পর্বগুলোর লিঙ্ক

ভারত ডায়েরী

ভারত ডায়েরী-১ (কোলকাতা)

ভারত ডায়েরী-২ (ট্রেন জার্নি এবং শিমলা)
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×