বাড়ীগুলো এত সুন্দর সাড়ীবদ্ধ ভাবে পাহাড়ের গায়ে বসে ছিল যেন মনে হয় পাহাড়ের সাথে যেন তাদের গভীর মিতালী। কত দিন ধরে তারা একসাথে রয়েছে।
আমরা ছবি তোলার ক্ষেত্রে কিছুটা ভাগ্যবান ছিলাম। কারন তখন মাত্র সূর্য মামা উঠি উঠি করছিল। আর আকাশেও যে সাদা মেঘ গুলো ছিল একবারে সূর্যের আলোর সাথে সমান্তরালে।
সারাটা সকাল কাটিয়ে এরপর শিমলা ঘুরতে বের হলাম। কাছেই ছিলো লোয়ার মার্কেট (Lower Market)। নামে Lower Market হলেও মার্কেটটা কিন্তু মোটেও মাটির নিচে নয়। উঠতে হবে বিশাল এক পাহাড়ের সিড়ি বেয়ে। মোটামুটি ভালোই উচুতে। এ জায়গাটি হলো ফুটপাতের উপর মার্কেট। সব ধরনের কাপড় চোপড় পাওয়া যায়। কেউ যদি শীতের পোষাক আনতে ভুলেও যান কোন সমস্যা নেই। এখানেই পাবেন সব কাপড়। দামটা মনে হলো একটু চড়া। তবে মুলোমুলি এ জায়গায়ও আছে।
শিমলা, পুরো শহরটা দাড়িয়ে আছে পাহাড়ের উপর; ভাবতেই অবাক লাগে। আর তাই প্রতিটি রাস্তাই খাড়া ভাবে উপরে উঠে যাচ্ছে। উপরে উঠতে আর নামতেই মোটামুটি ওজন অর্ধেক কমে যাবে। যাদের ওজনের সমস্যা আছে তারা যদি শিমলা এক মাস থাকেন তাহলেই হবে। একবারে স্লীম হয়ে চলে আসবেন। জিরো ফীগার তো কোনো ব্যপারই না
শিমলার প্রতিটি রাস্তা অবশ্য পিচ ঢালা। তাই হাটতে অসুবিধা হয়না। কিন্তু কষ্ট হয়, পাহাড়ী রাস্তা তো তাই। তবে সাঙ্ঘাতিক বাঁক খাওয়ানো প্রতিটি রাস্তা। ড্রাইভারের একটু অসচেতনতাই একবারে আপনাকে সারা জীবনের জন্য ওপারে পাঠিয়ে দিবে। তবে ড্রাইভার গুলো অনেক অভিজ্ঞ আর প্রতিটি রাস্তাই তাদের মনে হলো মুখস্তের মতো।
এরপর বিকেল হতেই রওনা দিলাম মানালীর উদ্দেশ্যে। পথে এত সুন্দর দৃশ্য যে শুধু আফসোসই লাগল। প্রকৃতি এত সুন্দর কেন? মনে চাচ্ছিল এখানেই মিশে যাই, এই প্রকৃতির সাথে। একই সাথে হিংসাও হচ্ছিল এখানকার অধিবাসীদের কথা মনে করে।
এই দৃশ্যটি পেলাম মানালীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার সময়। আলো ছায়ার এই ব্যপার গুলো দেখে আরও খারাপ লাগছিলো ছেড়ে আসছি বলে।
পথে পড়ল এই ঝড়নাটি। এর পানি নাকি হিমালয় থেকে আসে। আর এই ঝর্ণা থেকেই কৃশ ছবিতে হৃতিক রোশান মাছ ধরেছিল।
আর এটাই সেই জায়গা যেখানে প্রিয়াংকা চোপড়া প্যারাস্যুট থেকে লাফ দিয়ে
যে গাছগুলোর উপর পড়েছিল।
ইহা কিন্তু রঙ্গীন পানি নয়, ইহা হলো ক্যামিক্যাল যুক্ত পানি। পার্শ্ববর্তী সিমেন্ট ফ্যাক্টরী থেকে আসা ময়লা পানি।
আসার পথে পড়ল কুল্লু। এ শহরটা সমতল কিন্তু চারপাশ পাহাড়ে ঘেরা। সন্ধ্যার দিকে বলে ভালো কোনো ছবি তুলতে পারি নাই। তবে আজ তাপমাত্রা -৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। প্রচন্ড কুয়াশা রাস্তায়। রাতে পাহাড়ের গায়ে দেখতে পেলাম এই সাঙ্ঘাতিক দৃশ্যটি।
পাহাড়ের গায়ে কিন্তু আগুন লাগে নি। এ হলো পাহাড়ের গায়ে বসবাসকারী মানুষের বাড়ীর আলো।
মানালী আসতে আসতে রাত ১০ টা প্রায়। আগে ঠিক করে রাখা হোটেলে উঠলাম। হোটেলের নাম ভুলে গেছি। লিখে রাখা উচিত ছিল ডায়েরীতে। আসলে এতই ঠান্ডায় এতই জমে ছিলাম যে সব কিছু ভুলে গিয়েছি। তাপমাত্রা মানালীতে -৮ ডিগ্রী ছিল এই দিন। রাতের খাবারটা খেয়েই দিলাম ঘুম। কারণ আগামীকাল মানালী ঘুরতে যেতে হবে। (চলবে)
আগের পর্বগুলোর লিঙ্ক
ভারত ডায়েরী
ভারত ডায়েরী-১ (কোলকাতা)
ভারত ডায়েরী-২ (ট্রেন জার্নি এবং শিমলা)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



