এখনো রাত নামে
এখনো আমার বুকের ভিতরে নক্ষত্রেরা লুকোচুরি খেলে, রাত নামলেই!
এখনো মাঝরাতে ধোঁয়ার দল কুন্ডুলিবেধে ঝড় তুলে আমায় ঘিরে, রাত নামলেই!
এখনো গভীর রাতে আমি হেটে বেড়াই প্রিয়তমার দুঃখকোঠর, এখনো রাত নামে!
এখনো রাতের গায়ে শূন্যতার বাশি বাজে, আমি শুনতে পাই সে সুর, অদ্ভূত মায়াবী বিষাদ বাজে সে সুরে, ক্লান্ত আকাশ থমকে থাকে অন্ধকারে আধঝুলা হয়ে, এখনো রাত নামে ...
এখনো রাতের গায়ে মাতাল ঝড় উঠে, সবুজেরা আতঙ্কিত হয়ে রাতের কাছে নত হয়ে থাকে, এখনো রাত চোখে ভোর করে নগরীর সব চোখে ... এখনো রাতে চোখ ভিজে, এখনো রাতে হাসিমুখে ঝংকার উঠে, এখনো রাতে গানে গানে মেতে উঠা হয়, এখনো রাতে অভিলাষী স্বপ্ন দেখা হয়!
এখন রাত তাই,
আমি এখনো বেচেঁ আছি!
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
বৃষ্টির শব্দে যে ছন্দ থাকে, ওটার গোড়াপত্তন হয় অন্য কোন গ্রহের গভীর অরণ্যে ... পতিত হবার বেলায় মোড়ে মোড়ে নান্দনিক সব সুরের মুর্ছনা গায়ে মেখে নেয়, আমাদের পৃথিবীতে যখন এসে পৌঁছে তখন পৃথিবীর বুকে তৃষ্ণা জাগে, ক্লান্ত পৃথিবী তৃষ্ণা মেটাতে গিয়ে বেমালুম ভুলে যায় বৃষ্টিপাতের আদি রহস্য! বেমালুম ভুলে যায় এ জলে কান্না মেশানো থাকে, গলার গোড়ালী অব্দি ভিজিয়ে সুখের টানেল খুজেঁ পাওয়া যায়!
পৃথিবীর বুকে বিচরণ করা, রহস্য পাগল মানুষ সব জানেইনা এ ছন্দের নেশাতেও রহস্যের গন্ধ মাখা আছে, কখনো বুঝতে চায়নি স্বয়ং আফ্রোদিতিকে মুগ্ধ করে পৃথিবীর লাইসেন্স পাওয়া অমোঘ এই বৃষ্টিধারা কাদের জন্য পতিত হয়!
এ পতন থমকে থাকেনা, দ্বিধাগ্রস্থ থাকেনা, শ্রান্ত হয়ে পড়েনা, ওরা মাতাল!
আধাঁর বেধ করে, বিষাক্ত সব দুঃখ ছুঁয়ে দিয়ে বৃষ্টিরা যখন আসে ,
তখন আমি ঝুল বারান্দায় পা ঝুলিয়ে হাত বাড়িয়ে দেই, পৃথিবীর ইতিহাসের সমস্ত দুঃখ আমি ধারণ্ করতে চাই, আমি চাই আধাঁর হয়ে যেতে ... আদতে আমি চাই বৃষ্টি হতে!
আমি বৃষ্টি হতে চাই কারণ তোমার বাড়ির সামনে যে শিমুলগাছ আছে, ওটাকে শুদ্ধস্নান করাতে ... শুদ্ধস্বরের গান শুনিয়ে দিয়ে আসতে, ঐ গাছেই নাকি তোমার সব দুঃখ রাখা? ঐ গাছই নাকি তোমার সব কষ্টের নীরব শ্রোতা? আমি সব ধুয়ে দিতে চাই বলেই, আমি বৃষ্টি হতে চাই!
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
এই বিষাক্ত নগরীর রাজপথ গুলো আজকাল কুঁকড়ে থাকে, আমি হাঁটি ... মাঝে মাঝে হাটতে হাটতে হঠাৎ করেই থমকে গিয়ে হেসে ফেলি .. ভাবি এই তো তুমি!
রাজপথের বুকের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া পাখিসব আমার হাসি দেখে ডানা ঝাপটায়, ষষ্ট ইন্দ্রিয় প্রখরতম বলেই কিনা পাখিরা নাকি বুঝতে পারে এই হাসিতে বিষাদের জলচাপ আঁকা আছে!
তারপর আবার যখন পথচলা শুরু করি, একঝাক শব্দ আমার গলায় এসে আটকে থাকে, মদ খেয়ে বমি করে দিতে ইচ্ছে করে, কথাগুলো সব নীল হয়ে উড়ে যায়না কেন? পাখিদের ডানা ঝাপটানো দেখে আমার মায়া হয়, আমি গিলে ফেলি কথাসব! কথাগুলো আমার থাকুক, আকাশের না হোক ...
কি অদ্ভুত বোকা আমি, ভেবেছিলাম এইতো তুমি ... হাসতে হাসতে গড়াগড়ি দেয়া ঐ রুদ্দুর মেয়েটাই বুঝি তুমি, এমন ঝলমলে প্রাণ তো তোমার একান্ত অধিকার! বোকা আমি আরেকবার হেসে ফেলি, ও তুমি নও, ও তুমি হতেই পারোনা! তুমি তো আমার নাকের ডগায় হাসো, দূরের তুমি মৃত তুমি ... তোমাকে লাশ ভেবে আমি আরেকবার দাড়িয়ে যাই মেঘের মধ্যখানে!
তারপর ও স্বার্থপর আমি পথচলাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিনা, অথচ শ্রাবণের বিকেলে কথা ছিলো আমি ঠিক নির্বাসনে যাবো, এ রাজপথের ছায়া মাড়াবোনা! আমি পারিনা, কথা রাখতে ... আমি স্বার্থপর! আমি রাজপথে ভ্রান্তি ছড়াই, আমি স্বার্থপর!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:৫৬