শত বছরের পুরনো বহুতল ভবনটি যখন ভেঙ্গে পরছিল তখন রাত প্রায় .দুইটা বাজে ।পুরো এলাকাই যেন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ।. মাঝে মাঝে
কুকুরের দুই একটা আর্তনাদ ছাড়া আর কোন শব্দ শোনা যাচ্ছিলনা ।হটাৎ বিকট শব্দে জেগে উঠল পুরো এলাকাবাসি ।নিরুপায় দৃষ্টিতে সবাই তাকিয়ে দেখল অসহায় লোকের করুন আর্তনাদ ।চোখের সামনে হারিয়ে
গেল প্রায় একশটি প্রান ।কিন্তু একশ বছরের পুরোনো এই ভবনে মানুষ বাস করছিল কেন?উত্তর একটাই ভবনটির বয়স একশ বছর নয় ,মাত্র দশ বছর ।সাধারনত যখন কোন বহুতল ভবন নির্মান করা হয় তখন তার আয়ুষ্কাল একশ বছর ধরেই ডিজাইন করা হয় ।তাই একশ বছরের আগে কোন ভবন ভেঙ্গে পড়ার কথা নয় ।শুধু নির্দিষ্ট সময় পর পর কিছু মেইন্টেন্যান্সের প্রয়োজন হয় ।তাহলে প্রশ্ন হল বিল্ডিং ভেঙ্গে
পরবে কেন?কারন অনেক-যেমনঃ১)সুনির্দিষ্ট নকশা ছাড়া বিল্ডিং নির্মান
২)নকশা অনুসরন না করা ৩)নিম্ন মানের নির্মান সামগ্রি ব্যাবহার করা ৪)মাটি
তদন্ত না করা ৫)ভূ-কম্পন ইত্যাদি।সাধারন ভাবেই একটি বহুতল ভবন নির্মান করা খুব ব্যায় সাপেক্ষ।তাই আমাদের দেশের খুব কম লোকের
পক্ষেই বহুতল ভবন নির্মান করা সম্ভব।আর যারা নির্মান করেন তাদের বেশির ভাগকেই একটি ভবনের পেছনেই তার জিবনের সমস্ত আয় বিনিয়োগ করতে হয়।তাই সাধারন ভাবেই সবাই অর্থ বাচানোর চেষ্টায়
লিপ্ত থাকে।আর সমস্যার শুরু এখানেই ।ফলে অনেকে প্রকৌশলির সরনাপন্ন না হয়ে মিস্ত্রর সরনাপন্ন হন।আবার যারা প্রকৌশলির পরামর্শ গ্রহন করেন তাদের অনেকেই নকশা অনুসরন করেননা।আর এই অর্থ
বাচানোর চেষ্টাই মূলত সব সমস্যার মূল।কিন্তু একটু ভেবে দেখুন-আপনার মিতব্যায়িতার এই চেষ্টা কি মিতব্যায়িতা,নাকি অর্থ অপচয়ের চেষ্টা?আপনি
আপনার সারা জীবনের আয়ের একটা বড় অংশ আপনার দালানের পেছনে
খরচ করছেন অথচ আপনার সামান্য একটু ভূল ধংস করে দিতে পারে
আপনার সব পরিকল্পনা।আর আমাদের দেশ ভূ-কম্পন প্রবনঅঞ্চলে অবস্থিত
হয়ায় এই ঝুকি আরও অনেক বেশি।তাহলে এই ঝুকি কেন নিবেন?
তাই বহুতল ভবন নির্মানে নিচের বিষয় গুলোর প্রতি লক্ষ রাখুনঃ
১)যাচাই করে নিন আপনার জমিটি নিষ্কন্টক কিনা?
২)ইমারতনির্মানের পূর্বে প্রকৌশলী বা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ গ্রহন করুন।
৩)"ইমারত নির্মান বিধিমালা "অনুসরনে আপনার প্রকৌশলীকে সহযোগিতা
করুন।
৪)নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহন করুন।
৫)সয়েল টেষ্ট গ্রহন করুন।
৬)সম্পূর্ন রূপে নকশা অনুসরন করুন।
৭)নকশা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে আপনার প্রকৌশলীর পরামর্শ গ্রহন করুন।
৮)নিশ্চিত করুন আপনার ভবনটি ন্যূনতম ৭.৫ মাত্রার ভূ-কম্পন প্রতিরোধে সক্ষম।
৯)দক্ষ মিস্ত্রির দ্বারা নির্মান কাজ পরিচালনা করুন।
১০)উত্তম গুনাগুন সম্পন্ন নির্মান সামগ্রি ব্যাবহার করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




