ঘটনাটি আমার ছোট বেলার। আমি কিছুটা বোকাই ছিলাম! কি জানি হয়ত এখনও বোকা রয়েই গেছি! মূল ঘটনায় আসি, তখন থাকতাম ময়মনসিংহে। পড়তাম ২য় বা ৩য় শ্রেণীতে। বিকাল বেলা খেলছিলাম বাড়ীর সামনের মাঠে বন্ধু বাবু, নাজির, রাব্বি, মুন্নি, ন্যান্সি আরও আনেকের সাথে। হঠাৎ বাবু বলল, “দেখ দেখ একটা পুলিশ আসতেছে”। ব্যাস এটা শোনার সাথে সাথে সবাই জোরে জোরে ‘ঠোলা ঠোলা’ বলে চিৎকার করে জুড়ে দিল। ‘ঠোলা’ বলে যে পুলিশদের ক্ষ্যাপানো হয় আমি তা আসলে ঠিকমত জানতামও না। যেহেতু ‘সবাই’ চিৎকার করছে তাই আমিও ওদের সাথে গলা মেলালাম প্রানপনে। পুলিশ বাবাজী ঠিকই শুনলেন আমাদের চেঁচামেচি এবং আমদের দিকেই এগিয়ে এলেন, আর ধরবি ধর আমাকেই এসে ধরে বসল, একদম আমার হাত। একেই হয়ত বলে ‘বজ্র আঁটুনি ফোস্কা গেড়ো’। আমিতো হতভম্ব, এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখলাম ‘বন্ধু’রা সব ভোজবাজির মত হাওয়া। আমার অবস্থা বুঝতেই পারছেন। তো পুলিশের ‘ইন্টারোগেশন’ শুরু হল, “নাম কি, কোন ক্লাশে পড়, বাসা কোথায়, এরকম বেয়াদবি কতদিন ধরে কর...? ইত্যাদি ইত্যাদি... উনি যে ক্ষেপেছেন তা বলাই বাহুল্য। প্রথম ৩টি প্রশ্নের উত্তর ঝটপট দিতে পারলেও শেষ প্রশ্নের উত্তর আমার জানা ছিলনা। আমতা আমতা করে কি জানি বললাম। এইসময় দেখলাম আমার চেয়ে ৩ বছরের বড় ফাহমিদা আপু আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। উনি নিশ্চয় ঘটনা দেখে থাকবেন কি হয়েছিল। আপু এসে পুলিশকে বলল, “আংকেল, ও ছোট মানুষ বুঝতে পারেনি। আপনি রাগ করবেন না। আমি ওর আম্মুকে বলে ওকে আচ্ছা বকা খাওয়াব”। দেখলাম আপুর কথায় কাজ হল, হাতের আঁটুনি শিথিল হল। পুলিশ আমাকে একগাদা উপদেশ দিলেন এবং ভবিষ্যতে যেন এরকম কিছু না করি তার ওয়াদা নিয়ে চলে গেলেন।
এবার ফাহমিদা আপুর ‘কটাক্ষ’ বানে জর্জরিত হলাম। ওই শাষন তেমন গায়েই মাখলাম না। করণ ততদিনে এটুকু বুঝতাম যে বড়রা সু্যোগ পেলেই ছোটদের শাসন করে, উপদেশ দেয়। তবে এতকাল পরেও আপুর ‘ওই বয়সে’ পুলিশের হাত থেকে আমাকে বাঁচানোর বিষয়টি অনেক ‘স্মার্ট’ মনে হয়। তার স্মার্টনেস আমাকে মুগ্ধ করে এখনও। বন্ধুদের সাথে ২-৩দিন কথা বলিনি রাগে একথা কি জানান উচিৎ হবে আর?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



