somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রক্ত পরীক্ষা... B:-) B:-) B:-)

০৩ রা আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোন একটা লেখাতে এর মধ্যেই লিখেছি যে মানুষ হিসেবে খুব বেশি সাহসি আমি না। তার কিছু ঘটনা বলি।

ক্লাস সিক্স এর ঘটনা... তখন খুলনায় থাকতাম। বাবা হঠাৎ করেই আমার ‘গলা’ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তার কেন জানি ধারনা তৈরি হয়েছিল আমার ‘গলগন্ড’বা ঘ্যাগের সমস্য রয়েছে (রোগটার নামটাও কুৎসিত, আর দেখতেও ঠিক তেমনি)। তো বাবা আমাকে নিয়ে আসলেন ঢাকা’র বারডেম হসপিটালে। আমার বড় মামী কাজ করেন ওখানে। ডাক্তার সাহেব বেশ যত্ন করেই আমায় দেখলেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমার বাড়ী রংপুর কিনা? আমি তো অবাক ব্যাপার কি ঠিক বুঝতে পারলাম না। পরে জেনেছিলাম বাংলাদেশের ঐ অংশের লোকদের মধ্যে আয়োডিনের অভাব নাকি বেশ ছিল এক সময় এজন্য গলগন্ড রোগও দেখা যেত সেখানে (আমি কাউকে হেয় করার জন্য এটি লিখছি না)। আমাকে বেশ কয়েকটা ডাক্তারি পরীক্ষা দেয়া হল। এর মধ্য একটা ছিল রক্ত পরীক্ষা... শুনেই আমার ‘আঁত্মারাম খাঁচাছাড়া’, B:-) কারণ এর আগে আমার শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হয়নি। যাই হোক আমি যে রকম ভয় পেয়েছিলাম রক্ত পরীক্ষা’র কথা শুনে বাবাও সম্ভবত একই রকম ভয় পেয়েছিলেন। কারণ তাকেও আমার মত ‘চিমসে’ মারা মনে হয়েছিল তখন আমার। যাই হোক বাপ বেটা দুজনে মিলে গেলাম পিজি হাসপাতালে (বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ) রক্ত পরীক্ষা করার জন্য। অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, রক্ত নেবার। ঐ সময় আমার চেহারাটা কেমন হয়েছিল কে জানে? তবে পড়া না পারলে স্কুলের শিক্ষকদের বেতের দিকে যেভাবে তাকিয়ে থাকতাম তারচেয়েও এ ভয় বেশি ছিল তা আমি হলফ করে বলতে পারি! যিনি রক্ত নেবেন তিনি অভয় দিলেন, বললেন পিপড়া কামড়ালে যেমন ব্যথা লাগে তেমন পরিমান ব্যথা নাকি আমার লাগতে পারে আর যদি ভয় লাগে তাহলে যেন অন্য দিকে তাকিয়ে থাকি। আমিও তার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করলাম, রক্ত নেবার সময় অন্য দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কিছুক্ষণ পর শুনলাম কাজ নাকি শেষ। যাক বাচা গেল এওক্ষন পরে। আমি উঠে দাঁড়িয়ে বাবার কাছে গেলাম। তখনই দেখলাম ঐখানে আরেকজনের রক্ত নেওয়া হচ্ছে। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে সেটা দেখতে থাকলাম। এবং যখনই দেখলাম সিরিঞ্জের ভিতর রক্ত যাচ্ছে আমি আর নিজের মধ্য থাকতে পারলাম না। সারা পৃথিবী হঠাৎ করে বন বন ঘুরতে শুরু করল আমার সামনে। জ্ঞান ফেরার পরে ল্যাব সহকারীর কাছ থেকে শুনেছিলাম উনি নাকি আমাকে ধরে ফেলেছিলেন আমি পড়ে যাবার আগেই। তো এই ঘটনার পর থেকেই রক্ত দেওয়ার ব্যাপারে আমার প্রচন্ড ভিতী কাজ করা শুরু করে। বেচারা বাবাও অনেক ভয় পেয়েছিলেন আমার এই কান্ডে।

এরপরের ঘটনা অনেক পরের ২০০৪ সালের। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে আমার বেশ বড় একটা বন্ধু মহল আছে। আড্ডা দিতে গেছি একদিন। তো ডাক্তারদের যে স্বভাব, আমার রক্তের গ্রুপ কি তা একজন জানতে চাইল। আমি বললাম আমি জানিনা। এ কথা বলার পরে আর যাই কোথায়? কয়েকজন মিলে আমাকে চ্যাংদোলা করে ‘সন্ধানী’র দিকে নিয়ে যাতে লাগল। আমি প্রানপন ওদের বুঝানোর চেষ্টা করতে লাগলাম যে রক্তের গ্রুপ না জেনেও আমি বেশ আছি এবং বহাল তবিয়তে বেচেও আছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা ওরা জোড় করেই ধরে নিয়ে গেল সন্ধানীতে। কিন্তু কথায় বলে না ‘মানীর মান আল্লাহ রাখে’ ঐসময় সন্ধানী খোলা না থাকায় কার সাধ্য আমার গ্রুপিং করায়। মূলত ছোট বেলার ভয়টা আমার তখনও কাজ করছিল।

যাই হোক এল ২০০৭, ভোটার আইডি কার্ডে দেখলাম রক্তের গ্রুপ জানতে চেয়েছে। এবার কি করি? ভাবলাম আন্দাজে একটা লিখে দিই। পরে আবার ভাবি, কি জানি পরে যদি আবার নির্বাচন কমিশন ভুল তথ্য দেবার দায়ে ভোট দিতে না দেয়? বা ভোট বাতিল করে দেয় এই চিন্তা করে দুরু দুরু বুকে গেলাম ডাক্তার বন্ধু তানিয়া’র কাছে। সে তো আবাক, আরে সৌরভ করাবে রক্তের গ্রুপিং ঐতিহাসিক ব্যপার। যাই হোক সেই সন্ধানীতেই আমার রক্তের গ্রুপিং করি। আমার এ+। B-) এটা নাকি খুবই কমন। এক বন্ধু দুষ্টামি করে বলেছিল, “ভাবছিলাম তোর রক্ত মনে হয় HIV+ তাই গ্রুপিং করাস না”। আমিতো শুনে আক্কেল গুড়ুম, ছি ছি!! কি বলে এইগুলা? X((

ও একটা কথা না বললেই নয় আমার যখন গ্রুপিং এর জন্য রক্ত নিল তারপরেও কিন্তু মাথা ঘুরছিল... সাথে একজন মেয়ে বন্ধু থাকায় লজ্জায় পড়ে যাব একথা চিন্তা করেই সম্ভবত অজ্ঞান হইনি সে যাত্রায়... :D
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৭:০৪
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×