somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শের শায়রী
অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

বিশ্ব ইজতেমা ও তার ইতিহাস এবং প্রেক্ষাপট

১০ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



খুব বাজে একটা স্বভাব আছে আমার। কোন কিছু শুনলেই দেখলেই তার ইতিহাস বা কেন? কোথায়? কিভাবে? বর্তমান অবস্থা এই সব জানতে ইচ্ছে করে। প্রতি বছর আমাদের দেশে বিশ্ব ইজতেমা নামে একটা মুসুল্লী জমায়েত হয়, অন্ধের মত সবাই তাতে সোয়াব কামানোর জন্য যায় কিন্তু কয়জন জানে এর ইতিহাস? এর উৎপত্তির কারন? সবার আগে স্বীকার করে নেই আমার এই পোষ্ট অন্তর্জালে প্রাপ্ত বিভিন্ন লেখা থেকে সংগৃহীত।

কিভাবে এই এজতেমার শুরু?


মাওলানা ইলিয়াস (রহঃ)

বাংলাপিডিয়ায় দেয়া তথ্য বলছে, "১৯২৬ সালে হযরত মাওলানা ইলিয়াস (রহঃ) ভারতের উত্তর প্রদেশের মেওয়াত এলাকায় তাবলীগী আন্দোলনের গোড়াপত্তন করেন এবং একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সম্মিলন বা ইজতেমার আয়োজন করেন। কালক্রমে তাবলীগ সমগ্র উপমহাদেশে বিস্তার লাভ করে এবং উপমহাদেশের বাইরেও এর প্রভাব পড়ে। "১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সূত্র ধরে উপমহাদেশের ভারত, পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান - এ তিনটি অঞ্চলে মুসলমানদের অবস্থান সাপেক্ষে তাবলীগের তিনটি কেন্দ্র স্থাপিত হয়"।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক এবং লেখক এ কে এম খাদেমুল হক বিবিসি বাংলাকে বলেন, "১৯২০ সালের দিকে যখন এটি শুরু হয়েছিল তখন এটা একটা আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়েছিল ভারতে।" তিনি বলেন, "একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে এটা শুরু হয়েছিল। তখন হিন্দুদের মধ্যে একটা সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। হিন্দু ধর্ম থেকে যারা অন্য ধর্মে চলে যাচ্ছিল তাদেরকে আবারো হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে নেয়ার একটা চেষ্টা ভারতবর্ষে বিভিন্ন প্রদেশে শুরু হয়।



"এটা একটা প্রক্রিয়া যেটাকে আন্দোলন বলা যায়। তখন মুসলমানদের সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তখন দেওবন্দ কেন্দ্রীক মুসলমানেরা চিন্তা করলেন মুসলমানদের ইসলাম সম্পর্কে আরো সচেতন করে তুলতে হবে। এটাকে আন্দোলন বলা হয় এই অর্থে যখন একটা গোষ্ঠী অনেক লোক নিয়ে একটা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে সংগঠিত করে তখন সেটা আন্দোলনের রূপ নেয়"। খাদেমুল হক বলেন, যখন এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল তখন ব্রিটিশরা ভারতবর্ষ শাসন করছে। তাবলীগ জামাত কখনোই নিজেদেরকে ব্রিটিশ বিরোধী হিসেবে প্রচার করতে চায়নি।

কিভাবে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা আসে?



বাংলাদেশে এর সূত্রপাত হয় চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে ১৯৪০-এর দশকের শেষের দিকে। চট্টগ্রামের সমুদ্রবন্দর দিয়ে হজে যাওয়ার জন্য মানুষ সেখানকার হজ ক্যাম্পে জড়ো হতেন, আর সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল আঞ্চলিক ইজতেমার প্রক্রিয়াটা। বাংলাদেশে প্রথম তাবলীগের জামাত নিয়ে আসেন তাবলীগ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে মোহাম্মদ ইউসুফ। ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে ইসলাম প্রচারের কাজ করছিলেন মোহাম্মদ ইউসুফ। ভারত এবং পাকিস্তান দুটি আলাদা দেশ হওয়ার পর মোহাম্মদ ইউসুফ দুই দেশেই জামাত পাঠানো শুরু করলেন ইজতেমা আয়োজনের জন্য। তবে তখন ছোট আকারে ইজতেমা হত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষক এবং গবেষক ড. আব্দুর রশিদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, "১৯৪৬ সালে বাংলাদেশে ঢাকার রমনা পার্কের কাছে কাকরাইল মসজিদ - যেটা সে সময় মালওয়ালি মসজিদ নামে পরিচিত ছিল - সেখানে এই সম্মেলনটা হয়। এরপরে হয়েছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে"। বাংলাদেশ যখন পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে পরিচিত ছিল, তখন ১৯৬৫ সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে একটি জামাত আসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মো. খান শাহাবুদ্দিন নাফিস। তখনকার সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খান শাহাবুদ্দিন নাফিস বর্তমানে তাবলীগ জামাতের শুরা কমিটির একজন উপদেষ্টা।



এখন যেভাবে বিদেশ থেকে প্রচুর মুসলমান ইজতেমায় অংশ নেন, সেই সময়ে অবশ্য অন্যান্য দেশ থেকে লোকজন আসেনি বলে জানান খান শাহাবুদ্দিন নাফিস। "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ছিল, আর ছিল গ্রামের মানুষ"। ঢাকার পর মোহাম্মদ ইউসুফ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করেন। খান শাহাবুদ্দিন নাফিস বলেন, তাবলীগের জমায়েতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকার কারণে এর পরের বছর অর্থাৎ ১৯৬৬ সালে ইজতেমা হয় টঙ্গীর মনসুর জুট মিলের কাছে। এর পরের বছর ঠিক করা হয় ইজতেমা হবে টঙ্গীর তুরাগ নদের কাছে।

আরো পরে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান টঙ্গীতেই ১৬০ একর জমি নির্ধারণ করে দেন ইজতেমার জন্য, জানাচ্ছিলেন খান শাহাবুদ্দিন নাফিস।

কিভাবে বিশ্ব ইজতেমা নাম করন হয়?



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষক এবং গবেষক ড. আব্দুর রশিদ বলছিলেন, 'বিশ্ব ইজতেমা' তাবলীগের দেয়া নাম নয়, বরং তাবলীগের লোকজন এটাকে বার্ষিক সম্মেলন বলতেন। খান শাহাবুদ্দিন নাফিস জানান, তাবলীগ জামাতের পক্ষ থেকে বিদেশীদের পাঠানো শুরু হয় এক সময়। "যখন বিদেশ থেকে লোক আসা শুরু করলো, তখন গ্রামের লোক এটাকে বিশ্ব ইজতেমা বলা শুরু করলো। শুরার একজন প্রবীণ ব্যক্তি বললেন জনগণের চাহিদার উপর আল্লাহতায়ালা বিশ্ব ইজতেমা করে দিয়েন"।

'বিশ্ব ইজতেমা' নাম নিয়ে তাবলীগ জামাতের মধ্যেই শুরুতে বিতর্ক ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে বিশ্ব ইজতেমা নামটি প্রচলিত হয়ে যায়।

কেন বাংলাদেশ বিশ্ব ইজতেমার স্থান হিসেবে নির্ধারিত হল?



ইজতেমার ধারণা শুরু হয়েছিল ভারতে। ভারত ভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে ইজতেমা হতো। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটি ভারত, পাকিস্তান বা অন্য কোন দেশে না হয়ে বাংলাদেশেই স্থায়ী হয়েছে। খান শাহাবুদ্দিন নাফিস বলছিলেন, "এর একটা কারণ ছিল সে সময়ে বাংলাদেশের ভিসা পাওয়া সহজ ছিল। ইজতেমার নামে কেউ ভিসা আবেদন করলে কেউ ফেরত যেত না। এটা সরকারের একটা ভালো পলিসি ছিল"।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি সরকার এই ইজতেমাকে সমর্থন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির শিক্ষক এবং লেখক একেএম খাদেমুল হক বলেন যে দুটো কারণে বিশ্ব ইজতেমার স্থায়ী ঠিকানা বাংলাদেশে হয়েছে। "একটি বিশ্ব রাজনীতির মেরুকরণ। আরেকটি তাবলীগ জামাতের যে আন্দোলন সেটা পুরো দক্ষিণ এশিয়া-কেন্দ্রীক। যদিও ভারতে এর শুরু কিন্তু ভারতে মুসলিম-প্রধান দেশ না হওয়ার কারণে অনেক দেশের মুসলিমরা সেদেশে যেতে কমফোর্ট ফিল করেননি। আবার পাকিস্তানকে নিয়ে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আছে।"

মি. হক আরও বলেন, তাবলীগের জমায়েত বাংলাদেশে শুরু থেকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা যতটা পেয়েছে ততটা ভারত বা অন্য কোথাও পায়নি। এছাড়া সবচেয়ে কম খরচে মানুষ বাংলাদেশে আসতে পারতো। গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা হওয়ার পিছনে কিছু রাজনৈতিক কারণও ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আব্দুর রশিদ বলেন, ভারতের কিছু স্থানে তখনো মুসলমানদের মধ্যে শিয়া-সুন্নি মতবিরোধ ছিল। সে তুলনায় বাংলাদেশে মুসলমানদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ছিল, যাকে একটা নিরাপদ পরিবেশ বলে মনে করেছিলেন তারা।



তবে তিনি এও বলেন যে তাবলীগের এক সম্মেলনে ইজতেমার স্থান হিসেবে লটারির মাধ্যমে বাংলাদেশের উঠে আসে বলে অনেকে উল্লেখ করেন। অবশ্য এই তথ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান। ভারত এবং পাকিস্তান - এই দুটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তুলনামূলক নিরপেক্ষ একটা স্থান ছিল। কারণ হিসেবে বলা হয়, রাজনৈতিক কারণে তখন ভারতের নাগরিকরা যেমন সহজে পাকিস্তানে যেতে পারতেন না, তেমনি পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ভারতে পাওয়া ছিল কঠিন একটি বিষয়। ফলে বাংলাদেশই ছিল ওই দেশ যেখানে সহজে সবাই আসা-যাওয়া করতে পারতেন বলে গবেষকরা মনে করেন।

তবে তাবলীগের ইজতেমা যে বিশ্বের অন্য কোথাও হচ্ছে না তা নয়। পাকিস্তানের রাইবেন্ড এবং ভারতের ভোপালে বড় আকারে ইজতেমা হয় বাংলাদেশের বিশ্ব ইজতেমার ঠিক আগে ও পরে। তবে যে সংখ্যায় বিদেশীরা বাংলাদেশের ইজতেমায় আসেন, তাতে করে তুরাগ তীরের ইজতেমাই 'বিশ্ব ইজতেমা' হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছে।

ইজতেমাতে আসলে কী হয়? কী শিখানো হয়? ইজতেমার দ্বারা সাধারণ মানুষের উপকারই বা কতটুকু হচ্ছে?



এসব প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, ইজতেমার মূল আমল হলো- বয়ান। প্রতিদিন ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর লম্বা সময় নিয়ে বয়ান করা হয়। জোহর এবং আসরের পরেও ছোট্ট পরিসরে বয়ান হয়। সকাল সাড়ে দশটার দিকে বিশেষ শ্রেণী বা পেশার মানুষ যেমন ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবি, সাংবাদিক ও আলেমদের নিয়ে আলাদা আলাদা বয়ান হয়। এ সময় মাঠে থাকা অন্যরা তালিমের কাজে ব্যস্ত থাকেন। বয়ান সাধারণত ভারত-পাকিস্তানের বিজ্ঞ আলেম ও মুরুব্বিরা করে থাকেন। বয়ান উর্দুতেই বেশি হয়। পরে এটা সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বাংলায় অনুবাদ হয়। তবে বাংলাদেশের কেউ বয়ান করলে সরাসরি বাংলাতেই করেন। বিদেশি মেহমানদের জন্য এসব বয়ান তাদের নিজ নিজ ভাষায় অনুবাদ করে শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়, এমনকি শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য বয়ানের মর্মার্থ বুঝানোর ব্যবস্থা রয়েছে।


এ সব বয়ানের মূল উদ্দেশ্য থাকে, মানুষের মধ্যে ঈমানি চেতনা বৃদ্ধি এবং দ্বীনের প্রচার-প্রসারের ভাবনা তৈরি করে তাদেরকে জামাতে বের হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা। এক্ষেত্রে শুধু বয়ানের দ্বারা সবাই তৈরি হয়ে যায় না। বরং পুরো ইজতেমার সময় জামাতে লোকজনকে বের করার জন্য আলাদাভাবে তাশকিল করা হয়। বস্তুত উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে প্রদেয় বয়ান ইজতেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর ইজতেমার মুনাজাত হলো, দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে রওয়ানাকারী জামাতের সদস্যদের জন্য। আসলে ইজতেমার আখেরি মুনাজাত ইজতেমা শেষ- এ জন্য করা হয় না। বরং ইজতেমা থেকে অনেক জামাত দেশের বিভিন্ন এলাকায় দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে বের হয়। এসব জামাত রওয়ানা হওয়ার সময় তাদের উদ্দেশ্য নির্দেশনামূলক একটি বয়ান হয়। যাকে হেদায়েতি বয়ান বলা হয়। বয়ান শেষে দ্বীনের রাস্তায় বের হওয়া সব জামাতের জন্য, সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য- বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আর এই মুনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমা শেষ হয়। দোয়ার পর জামাতগুলো তাদের গন্তব্য জেনে সে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। হজরত নবী করিম (সা.) কোথাও কোনো জামাত পাঠালে এভাবে তাদেরকে হেদায়েত, নির্দেশনা ও তাদের জন্য আন্তরিক দোয়া দিয়ে বিদায় দিতেন। এ ধারা পরম্পরায় ইজতেমার মাঠে এই বিশেষ দোয়া করা হয়।

বিশ্ব ইজতেমার তারিখ এবং কি কারনে এর দুই ভাগে সময় নির্ধারিত হল




পুরো সমাবেশস্থলটি একটি উন্মুক্ত মাঠ, যা বাঁশের খুঁটির উপর চট লাগিয়ে ছাউনি দিয়ে সমাবেশের জন্য প্রস্তুত করা হয়। শুধুমাত্র বিদেশী মেহমানদের জন্য টিনের ছাউনি ও টিনের বেড়ার ব্যবস্থা করা হয়। সমাবেশস্থলটি প্রথমে খিত্তা ও পরে খুঁটি নম্বর দিয়ে ভাগ করা হয়। অংশগ্রহণকারীগণ খিত্তা নম্বর ও খুঁটি নম্বর দিয়ে নিজেদের অবস্থান শনাক্ত করেন। তাছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলাওয়ারি মাঠের বিভিন্ন অংশ ভাগ করা থাকে। বিদেশি মেহমানদের জন্য আলাদা নিরাপত্তাবেষ্টনীসমৃদ্ধ এলাকা থাকে, সেখানে স্বেচ্ছাসেবকরাই কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন, কোনো সশস্ত্র বাহিনীর অনুপ্রবেশের অধিকার দেয়া হয় না।



সাধারণত তাবলিগ জামাতের অংশগ্রহণকারীরা সর্বনিম্ন তিন দিন আল্লাহর পথে কাটানোর নিয়ত বা মনোবাঞ্ছা পোষণ করেন। সে হিসাবেই প্রতিবছরই বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় তিনদিন জুড়ে। সাধারণত প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের শুক্রবার আমবয়ান ও বাদ জুমা থেকে বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতি বছরই এই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিশ্ব ইজতেমা প্রতিবছর দুইবারে করার সিদ্ধান্ত নেয় কাকরাইল মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় এবং তিনদিন করে আলাদা সময়ে মোট ছয়দিন এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।কিন্তু এতে করেও ব্যাপক মুসল্লিদের ঢল থাকায় ২০১৬ থেকে ৩২ টি জেলা নির্বাচন করে ইজতেমার কার্যক্রম অবিরত রাখা হয় । বাকি ৩২ জেলাদের ইজতেমা পরবর্তী বছর ধার্য করা হয় । সমাবেশ আ'ম বয়ান বা উন্মুক্ত বক্তৃতার মাধ্যমে শুরু হয় এবং আখেরি মোনাজাত বা সমাপণী প্রার্থণার মাধ্যমে শেষ হয়। অনেক সাধারণ মুসলমান তিনদিন ইজতেমায় ব্যয় করেন না, বরং শুধু জুমা'র নামাজে অংশগ্রহণ করেন কিংবা আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন; তবে সবচেয়ে বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেন আখেরি মোনাজাতে। বাংলাদেশ সরকারের সরকার প্রধান (প্রধানমন্ত্রী), রাষ্ট্রপ্রধান (রাষ্ট্রপতি), বিরোধী দলীয় নেতাসহ অন্যান্য নেতা-নেত্রীরা আখেরি মোনাজাতে আলাদা-আলাদাভাবে অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্ব ইজতেমার শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আখেরি মোনাজাত। প্রবল ধর্মচেতনায়র উদ্দীপনা নিয়ে মুসল্লিগণ আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন আর আমিন আমিন বলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আখেরি মোজাতের সময় টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীর যেন পরিণত হয় মুসল্লিদের জোয়ারে। আর আখেরি মোনাজাতের মধ্য বিশ্ব ইজতেমার মূল কার্যক্রম শেষ হয়। বলা হয়ে থাকে মক্কা মদিনায় হজ্বের পরই এটাই মুসলিম উম্মাহর সব থেকে বড় জমায়েত।

আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে দ্বীন এবং ইসলাম কে সঠিক ভাবে উপলদ্ধি করিয়ে এর আমল করার তৌফিক দেন।

সূত্রঃ বিশ্ব ইজতেমা উইকিপিডিয়া

বিশ্ব ইজতেমা কি ও কেন?

তাবলীগের বিশ্ব ইজতেমা
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:১৫
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×