somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোহিঙ্গা আর মানবতা

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের ক্রোধের শিকার হয়ে
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসল প্রানের ভয়ে,
নির্মমতার শিকার তারা মানবতা কাঁদে,
পড়ল ধরা মানুষগুলো নৃশংসতার ফাঁদে।
নিজ ভূমে পরবাসী ছিল তারা হায়
তাদের আবাস সবাই মিলে কেড়ে নিতে চায়।
যুগে যুগে ছিল তারা আরাকানের কোলে
জনম জনম পার করেছে ঘামে কাঁদা জলে।
বহু বছর ছিল তারা মিলেমিশে সবে,
হঠাৎ করে রব উঠল দেশ ছাড়তে হবে।
সাগর পাড়ি দিল কিছু আশ্রয়ের খোঁজে
প্রান হারিয়ে সাগর বুকেই চক্ষু দুটো বোজে।
মেরে কেটে তাড়া ও এদের,যুদ্ধ দেহী সাজ
গ্রাম জ্বালিয়ে, হত্যা করে শুরু কর কাজ।



ধর্ষণ আর হত্যা করে জ্বালিয়ে দাও সব,
প্রানের ভয়ে যেন পালায় থামাও তাদের রব।
বাংলাদেশের শিবির গুলোয় একটি বছর ধরে
রোহিঙ্গারা দেশ হারিয়ে বসবাস করে।
খাপ খাইয়ে নিচ্ছে তারা ভুলছে ক্রোধ আর ভয়
নিজের দেশে ফিরবে কবে ভয়কে করে জয়?
আজকে কোথায় মানবতা সভ্যতার আলো,
রোহিঙ্গাদের জীবন যাপন কবে হবে ভাল।
আশার আলো দেখবে কবে দিগন্ত কি দূরে
স্বপ্ন গুলো তাদের মনে এলোমেলো ঘুরে।



রোহিঙ্গা এবং মিয়ানমার নিয়ে লিখার একটা পরিকল্পনা আছে আমার। যে নৃশংস ঘটনার মধ্যে দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের মাতৃভূমি থেকে জীবন বাজী রেখে প্রানভয়ে পালিয়ে আসতে হয়েছে তা লোমহর্ষক, বেদনাদায়ক এবং মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে অনভিপ্রেত। আজ এই রোহিঙ্গারা দেশছাড়া, তারা আশ্রয় পেয়েছে বাংলাদেশের আশ্রয় শিবির গুলোতে। বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ এবং মানবিক সাহায্য সংস্থা গুলো যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জীবনকে সহজ করতে। এটা একটা দুঃসহ কাজ এবং এতে অর্থনৈতিক সংশ্লেষ আছে। একটা দেশ কিংবা সংস্থার জন্য এই চাপ একা বহন করা অসম্ভব।


কক্সবাজার জেলার টেকনাফের যে এলাকায় তারা বর্তমানে অবস্থান করছে সেখানকার জনগোষ্ঠীর উপর ও তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে চাপ ফেলছে। এর প্রভাবে এলাকার মানুষের সামাজিক অবস্থা ও অর্থনৈতিক জীবনধারায় ইতিবাচক এবং নেতিবাচক এই দুই ধরনেরই পরিবর্তন এসেছে এবং এর জন্য এলাকাবাসীর কোন পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। এলাকার চাষযোগ্য ভুমি,বনায়ন এবং পরিবেশের উপর ও বিরূপ প্রভাব পড়েছে এর ফলশ্রুতিতে।
হত্যা , ধর্ষণ আর অত্যাচারের মুখে আজ রোহিঙ্গারা ঘরছাড়া। বহু বছর ধরে মিয়ানমার প্রশাসন এবং সরকার পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে প্রান্তিক জন গুষ্টিতে পরিণত করার কাজ করে আসছিল। তাদেরকে ধীরে ধীরে ভোটাধিকার, নাগরিকত্ব এবং অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে এমন এক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল যাতে তাদের মানবিকতার মৃত্যু হয় এবং তারা নিজেদেরকে অনাহুত হিসেবে মেনে নেয়। এর পাশাপাশি আরাকানের বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী রাখাইন সম্প্রদায়ের জনগণকে ও তাদের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলে সামরিক জান্তা এবং একটা উগ্রবাদী বৌদ্ধ সম্প্রদায়


তাদের বিরুদ্ধে সাধারন জনগণকে অপপ্রচারের মাধ্যমে এই বলে খেপিয়ে যাচ্ছিল যে, এই রোহিঙ্গারা তাদের বৌদ্ধ ধর্মকে গ্রাস করবে, আরাকানে রাখাইনরা সংখ্যা লঘুতে পরিণত হবে এবং রোহিঙ্গারা তাদের এলাকা দখল করে নিবে। এসবই ছিল অপপ্রচার এবং পরিকল্পিত আর এর শিকার এই নিরিহ জনগোষ্ঠী যারা ক্রমাগত শোষণের ফলে মানবিক বিপর্যয় ঠেকিয়ে কোনমতে জীবন ধারন করছিল।
মিয়ানমারের সরকারী বাহিনী এবং আরাকানের স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদেরকে গ্রামছাড়া করার পর তাদের ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দিয়েছিল। বার্মার রাষ্ট্রীয় আইনে জ্বলে যাওয়া বাড়িঘর সহায় সম্পদ সরকারের দখলে চলে যায়। এই বিবেচনায় রোহিঙ্গারা এখন ভূমিহীন আর ভিটেমাটিহীন। তারা ছিল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, চিকিৎসা তাদের জন্য ছিল সোনার হরিন, ধুঁকে ধুঁকে চলছিল তাদের জীবন। কয়েক বছর আগে নিরাপত্তার নামে বেশ কিছু রোহিঙ্গা পরিবারকে সরকারী ক্যাম্পের ভেতরে প্রায় বন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছিল, তাদের চলাচলের উপর নানা ভাবে নিয়ন্ত্রন চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত তাদেরকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এত কিছুর পর ও তারা তাদের জন্মভুমিতে ছিল কিন্তু আজ তারা পরবাসে, স্বেচ্ছায় নয় নির্মমতার শিকার হয়ে।
(ছবি নেট থেকে)







সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×