মানুষ কথা বলতে জানত না, কাপড় পরতে জানতো না, উত্তম খাবার খেতে জানতো না। যেখানে কথা বলতে জানত না সেখানে পড়তে কিংবা লিখতে জানার প্রশ্নই আসে না। বহুদিন পর মানুষ কথা বলতে শিখে বহু যুগ পর মানুষ লিখতে শিখে অতঃপর মানুষ পড়তে শিখে। সভ্যতা বলতে কিছুই ছিল না। অর্থাৎ মানুষ পশুর ন্যায় নির্বাক নিরাবরণ থাকতো।
এজাতীয় ধারণা বিবর্তনবাদ হতে উদ্ভূত; সেকুলার জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ফসল। এ জাতীয় জ্ঞানচর্চায় ফ্যাক্ট এর চেয়ে থিওরি বেশি প্রাধান্য পায়।
মানুষের প্রাথমিক যুগ সম্পর্কে এ জাতীয় ধারণার অন্যতম কারণ হলো সেকুলার বুদ্ধিজীবীরা বিশ্বাস করে ঈশ্বর বলতে কিছু নেই মানুষ প্রাকৃতিক বিবর্তনের ফলে জন্ম নিয়েছে। নিজে নিজে সব কিছু শিখেছে। খাওয়া, পরা, বলা, লিখা ইত্যাদি শিখতে অনেক সময় নিয়েছে।
এজাতীয় চিন্তাভাবনা মানবজাতি, প্রকৃতি, বিজ্ঞান, ধর্ম, এ সবকিছুর সাথেই সাংঘর্ষিক। এর অনুকূলে রয়েছে কেবল কিছু মানুষের ধারণাপ্রসূত কথাবার্তা।
পৃথিবীতে যত ধর্ম রয়েছে বা ধর্মের নামে যা আমরা জানতে পারি, সব উৎস থেকে জানা যায় মানুষ সৃষ্টিগতভাবে ঈশ্বরের আশীর্বাদে কথা বলতে পারা, পোশাক পরতে জানা, উত্তম খাবার গ্রহণ করতে জানা, পারস্পরিক উত্তম আচরণ করা, ইত্যাদি জ্ঞান আদিকাল থেকেই লাভ করেছে।
আগুন জ্বালানোর ব্যাপারে আমরা সেকুলার শিক্ষার কারণে ধারণা করে থাকি মানুষ আগে কাঁচা ফলমূল, কাঁচা মাংস খেত। একদিন ঘটনাক্রমে কেউ একজন পাথরের সাথে পাথর ঘর্ষণ করে আগুন জ্বালাতে শিখে তারপর মানুষ রান্না করে খেতে শিখে এসবই ক্ষুদ্র জ্ঞানের বুলি। প্রকৃতপক্ষে আদি মানব আগুন জ্বালাতে শিখেছেন তার প্রভুর আশীর্বাদে।
পৃথিবীতে বর্তমানে যেসব যৌক্তিক ধর্মবিশ্বাস চর্চা করা হয় মধ্যে একেশ্বরবাদী ধর্ম গুলো সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। একেশ্বরবাদী ধর্ম গুলোর মধ্যে ইসলাম ধর্মের চিন্তাভাবনাগুলো সর্বাধিক নিষ্কলুষ, ত্রুটিমুক্ত। তাই বর্তমানে সচেতন শিক্ষিত লোকেরা হয় নাস্তিক হয় না হয় মুসলিম হয় অন্যান্য ধর্মে তারা ঈপ্সিত বিষয় খুঁজে পায় না।
মানুষ সম্পর্কে প্রথমোক্ত ধারণা গুলো সকল ধর্মের প্রদত্ত ধারণার সাথে সাংঘর্ষিক। একেশ্বরবাদী ধর্ম যেমন ইসলাম, খ্রিস্টীয় ও ইহুদি ধর্ম সমূহের দৃষ্টিতে মানুষ আদি মানব আদম আলাইহিস সালাম স্বর্গ হতেই ঈশ্বরের নিকট হতে যাবতীয় জ্ঞান অর্জন করে এসেছেন তিনি কথা বলতে জানতেন, স্বর্গে তিনি উত্তম পোশাক ও উত্তম আহার গ্রহণ করেছেন। তিনি জানতেন ভুল করলে ক্ষমা চাইতে হয় প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়। অর্থাৎ মানব-সভ্যতা শুরু হয়েছিল সৃষ্টির সূচনা হতেই। মানব জাতি কখনো অসভ্য বা পশুর ন্যায় জীবনযাপন করত না।
ইসলামের অনুসারীদের জন্য ধর্মহীন জ্ঞানী-বিজ্ঞানীদের ন্যায় নির্বাক, নিরক্ষর, নিরাবরণ ও পাশবিক জীবনযাপনকারী আদিমানবে বিশ্বাস করা এবং একই সাথে মহাগ্রন্থ কুরআনকে সত্য ও সঠিক বলে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়। কোরআন এর ভাষ্যমতে আদম আলাইহিস সালাম হতে শুরু করে যুগে আল্লাহ মানব দূত প্রেরণ এর মাধ্যমে মানুষকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন। আদম আলাইহিস সালামকে চাকা বানাতে শিখিয়েছেন, নূহ আলাইহিস সালামকে নৌকা বানাতে শিখিয়েছেন, ইদ্রিস আলাইহিস সালামকে কলম দিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন তিনি যিনি সবকিছুর একমাত্র স্বত্বাধিকারী।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১০