somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোটাং পাস

০৩ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রোটাং পাস
হিমকন্যা হিমাচল। সব অর্থেই সে অনন্যা। আছে বরফের সীমাহীন সমারোহ। পাহাড়ের আন্তরিক উপস্থিতি। সঙ্গে ফুলে ফুলে রঙিন রূপকথা। আছে পাইনের হাতছানি। আছে শিশুর ঠোঁটে স্বর্গীয় হাসি। হিমাচলের জনপ্রিয় হিলস্টেশন মানালি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে রোটাংপাস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ৪১২০ মিটার। রোটাংপাসের যাওয়ার পথটি সুন্দর। নদীর সঙ্গে আছে নিবিড় সখ্যতা। আর মনে আছে বরফ ছোঁয়ার আনন্দ। চনমনে ঠান্ডা। এ পথ চলাতেই আনন্দ। আকাশমুখী রাস্তার ধারে ধারে ছোট্ট ছোট্ট বাড়ি। আর নিচে বয়ে চলেছে বিপাসা নদী। গাছপালা ক্রমশঃ কমতে থাকে। রাস্তায় সদ্য গলে যাওয়া বরফের চিহ্ন। চারপাশে ঝঁুকে পড়া তুষারচূড়ার মাঝে মনছোঁয়া নিসর্গের নেশায় বুঁদ হয়ে এগিয়ে চলা। দূরে তাকালে মনে হয় সারিবদ্ধ পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে মেঘেরা হামাগুড়ি দিচ্ছে। তবে মাঝে মাঝে অতিরিক্ত তুষারপাত এবং ঝোড়ো আবহাওয়ায় পথ দুর্গম হয়ে যায়।
চলতে চলতেই সামনে রাহালা জলপ্রপাত। পাহাড়ের গা বেয়ে প্রবলবেগে নেমে আসছে জলধারা। রাহালা ছাড়িয়ে মারহি পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া কিন্তু একদম বদলে যায়। এখান থেকে রোটাং মাত্র ১৬ কিলোমিটার। মে মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বেশ জমজমাট। তবে বিকেলের পর এখানে লোক আর পাওয়া যায় না। তখন গোটা মারহিতে রাজ করে মেঘ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে হ্যাং গ্লাইডিং।
৮ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়ে বাঁক নিতে হবে। আর খানিকটা এগোলেই সবুজ স্বর্গ। সোলাং ভ্যালি। রোটাং-এর রাস্তার প্রতিটি বাঁক-ই অনুভূতির ছোঁয়ায় নতুন। ক্রমশঃ বেরিয়ে আসে তুষারচূড়া। চারদিকে অপরূপ বৈচিত্র্যের সমাহার। খানিকটা দূরে, যেখানে পাহাড়ের ঢালে পুরু বরফের আস্তরন, সেখানে গাড়িতে পৌঁছনো যাবেনা। যেতে হবে ঘোড়ায়। পৌঁছনো গেল একেবারে তুষারক্ষেত্রে। সেখানে বরফ খেলার আয়োজন। স্নো স্কুটারও চলছে তীর বেগে। আছে স্লেজ গাড়ি। ইয়াকের পিঠে চড়ে ছোটরা মজা পায়।
গরমের ছুটিতে উপভোগ করার অনন্য স্থান রোটাংপাস। রোটাঙের আবেশভরা হিমেল ছোঁয়া অনেক বড় পাওনা। বিকেলের কনে দেখা আলোয় মানালি ফিরে আসতে আসতে মনে হবে যেন স্বপ্নের ঘোরে কোথা থেকে একটা দিন পার হয়ে গেল।
রোটাং পাস থেকে দেখে নেওয়া যায় লাহুল -স্পিতির। কাছাকাছি আছে গ্রামফু। দেখে নেওয়া যায় তান্ডি, কেলং ছঁুয়ে লাদাখের লে। এছাড়াও মানালিতে দেখার জায়গা অনেক।
কলকাতা থেকে চন্ডীগড় হয়ে মানালি। হাওড়া স্টেশন থেকেও কালকা মেলে চন্ডীগড়। সেখান থেকে সড়ক পথে মানালি ৩১০ কিমি। হিমাচল প্রদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট এবং ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের লাক্সারি বাস যায়। সুমো বা কোয়ালিসও আছে। দিল্লি থেকেও বাসে সরাসরি মানালি যাওয়া যায়। বিমানে চন্ডীগড় ও দিল্লি থেকেও কুলু পর্যন্ত। সেখান থেকে বাসে ৩৮ কিলোমিটার।
রোটাংপাসে থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। মানালিতেই আছে অনেক হোটেল, রিসর্ট। এছাড়া পাশের অ্যালিওতে আছে সুন্দর থাকার ব্যবস্থা। কলকাতা থেকেও বুক করা যায়। মানালি ভ্রমণের সঙ্গে সঙ্গে রোটাংপাসের যাওয়া সেরে ফেলতে হয়। সকালে বেরিয়ে বিকেলেই ফেরা।
উপযুক্ত সময় এপ্রিল থেকে জুূন এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর।
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×