somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিংগাপুর ভ্রমন ডায়েরি পর্ব-৩ (ইউনিভার্সাল স্টুডিওস)

০৯ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



২য় পর্ব

সিঙ্গাপুর ডায়েরি-৩

ঘুম থেকে উঠতে দেরিই হয়ে গেল। প্রায় সারে ৮ টা বাজে। সকাল সকাল বের হলে অনেক কিছু কাভার করতে পারবো, এই চিন্তাই করেছিলাম রাতে। কিন্তু হল আর কই। উঠে পড়লাম। পানির বোতলে পানি ভরে নিলাম। ৬৩ টাকা দিয়ে হাফ লিটার পানি কেনার কলিজা আমার নেই। সিঙ্গাপুরের হোটেলের ট্যাপের পানি সম্পূর্ন বিশুদ্ধ। তাই একটা বোতল নিয়ে পানি ভরে নিলেই খাওয়া যাবে।

ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিচে চলে গেলাম। রিসেপশ্নিস্ট মহিলা হাসি দিয়ে আমাকে ব্রেকফাস্ট কুপন দিয়ে দিল। এই কুপন নিয়ে পাশের হোটেলে গিয়ে নাস্তা করা যাবে। আমার রুমের সাথে কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট ছিল। এই হোটেলের সাথেই পাশে একটা ইন্ডিয়ান হোটেলে এরা ব্রেকফাস্টের ব্যাবস্থা করেছে। ব্রেকফাস্ট অর্ডার দিলাম ডিম পরটা। অর্ডার দেয়ার পর ভাবলাম ব্যাটা শুধু ডিম পরোটা নিয়ে আসবেনা তো? একটু পরে চা দিয়ে গেল এক মগ। এত চা তো আমি বাসাতেও খাইনা। যাহোক ব্রেকফাস্ট দেখে আমার আক্কেল গুরুম। এটা কোনো ব্রেকফাস্ট হল? একটা ডিম পরোটা, সাথে ১ টুকরো বেগুন এর ঝোল, আর সাথে শুটকি মাছের গন্ধ যুক্ত আচার /:) । মেজাজ তখন অন্তরিক্ষে X( । বাজেট হোটেলের বাজেট ব্রেকফাস্ট। কোনো রকম নিজেকে সামাল দিয়ে পেটে দিয়ে বের হয়ে গেলাম।




এই ছিল সেই ব্রেকফাস্ট।

আমি এখন যাব বিখ্যাত সেন্টোসা আইল্যান্ড এ। সেন্টোসা আইল্যান্ড সিঙ্গাপুরের ট্যুরিসমের প্রাণ বলা চলে। এখানে রয়েছে বিখ্যাত ইউনিভার্সাল স্টুডিওস, সি এক্যুরিয়াম, পালাওয়ান বিচ সহ আরো বহু কিছু। আমার গন্তব্য ইউনিভার্সাল স্টুডিওস এবং সি এক্যুরিয়াম। হাটা দিলাম ফেরার পার্ক মেট্রোস্টেশনের দিকে। আমার হোটেল থেকে হেটেই যাওয়া যায় এখানে। এই কারনেই এখানে হোটেল টা নেয়া। আমাকে যেতে হবে হারবারফ্রন্ট স্টেশনে। সেখান থেকে সেন্টোসাতে যাওয়ার ট্রেন আছে। ফেরার পার্ক থেকে হারবারফ্রন্ট সরাসরি ই যাওয়া যায়, কোনো চেঞ্জ করতে হয়না।





আমি একটা জিনিস দেখে খুব অবাক হয়েছি। সিঙ্গাপুরে প্রায় ৬৫% জনগন চাইনিজ। এরা পথে ঘাটে, ট্রেনে যেখানেই আছে সবাই তাদের স্মার্টফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্য কোনো দিকে কি হচ্ছে, তাদের যেনো ভ্রুক্ষেপ ই নাই। সেই যে ট্রেনে উঠেছি, সবাই তাদের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে। ব্যাপারটা এমন যে সামনে কারোর সাথে ধাক্কা না লাগলে তার হুশ হবেনা যে সে রাস্তায় আছে। ২৫ মিনিট লাগলো হারবারফ্রন্ট আসতে। নেমে গেলাম। ঢুকে পড়লাম ভিভো সিটি শপিং মলে। হারবারফ্রন্ট স্টেশনটি ভিভো সিটি শপিং মলের সাথে সংযুক্ত। আমাকে যেতে হবে লেভেল-৩ সেন্টোসা এক্সপ্রেস এর স্টেশনে যেটা ভিভো সিটির উপরের ফ্লোরে। সেন্টোসাতে হেটেও যাওয়া যায় ব্রডওয়াক দিয়ে। অথবা বাসেও যাওয়া যায়। আমি হেটেই যেতে চেয়েছিলাম, তাতে অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখতে পেতাম। কিন্তু এই গরমে সেই চিন্তা বাদ করে দিলাম।





মলের সাইনবোর্ড গুলো ফলো করে পৌছে গেলাম সেন্টোসা এক্সপ্রেসের স্টেশনে। এখানে একটা বিশাল লাইন লেগে থাকে টিকেট এর জন্যে। তবে আমি অবশ্য ইজি লিঙ্ক কার্ড নিয়ে নিয়েছিলাম প্রথম দিনেই, এই ইজি লিঙ্ক কার্ড সেন্তোসা এক্সপ্রেসে কাজ করে। অন্য কার্ড কাজ নাও করতে পারে। চারিদিকে একটু ঘুড়েফিরে উঠে গেলাম সেন্টোসা এক্সপ্রেসে।





সেন্টোসা এক্সপ্রেস স্টেশন, ভিভো সিটি সেন্টোসা এক্সপ্রেস এর টিকেট মুল্য হল ৪ ডলার যা আপডাউন এবং সেন্টোসার ভেতরে যেকোনো যায়গায় গেলে ফ্রি। সেন্টোসা এক্সপ্রেস ৪ টি স্টেশনে থামে। যার প্রথমটি হল ওয়াটারফ্রন্ট স্টেশন। আমাকে এখানেই নামতে হবে কারন ইউনিভার্সাল স্টুডিওস এবং সি এক্যুরিয়াম এই স্টেশনেই।



ওয়াটারফ্রন্ট স্টেশনে নেমে গেলাম। কিছুদুর হেটেই পেয়ে গেলাম সেই বিখ্যাত ইউনিভার্সাল স্টুডিওস। ফকাফক কিছু ছবি তুলে নিলাম।







তবে প্রথমে ইউনিভার্সাল স্টুডিওস এ না ঢুকে সি এক্যুরিয়ামে ঢোকার সিদ্ধান্ত নিলাম। কারন ইউনিভার্সাল স্টুডিওস এ অনেক রাইড আছে, সেগুলোতে চড়তে হলে সময় লাগবে। তাই কম সময়ের কাজ আগে সেরে নেই। হাটা দিলাম সি এক্যুরিয়ামের দিকে। এটা ইউনিভার্সাল স্টুডিওস এর উলটা পাশেই।





টিকিট দেখিয়ে ঢুকে পড়লাম। নিচে নামতেই কি বিশাল বিশাল এক্যুরিয়াম দেখতে পেলাম। বিভিন্ন প্রজাতীর সামুদ্রিক মাছ, হাঙ্গর রয়েছে এর ভেতরে। এক্যুরিয়াম অবশ্য ১ টা নয়, ভেতরে অনেক গুলো রয়েছে। আলাদা আলাদা প্রজাতীর মাছের জন্য আলাদা এক্যুরিয়াম।



আমি খেয়াল করলাম, একজন ডুবুরি এক্যরিয়ামের মধ্যে রয়েছেন এর মেইন্টেন্যান্স এর জন্যে। ঠিক তার মাথার উপর দিয়েই হাঙ্গর চলে যাচ্ছে। ব্যাপার কি, হাঙ্গর কি পোষ মানে নাকি? হাটা দিলাম সামনের দিকে। সামনে গিয়ে আরো বড় বড় এক্যুরিয়াম দেখতে পেলাম। কি বিশাল। অনেকেই বসে আছে আর মাছ দেখছে। আমি কিছুক্ষন দেখতে লাগলাম তাদের সাথে।





এতো প্রজাতীর মাছ আমি কখনোই দেখিনি। তাই খালি দেখছিলাম। হাটতে হাটতে সামনে এগোতেই একজন পথ আটকালো। কি ব্যাপার? তারা ছবি তুলবে আমার। আচ্ছা, আমিও সেইরকম ভাব নিয়ে ছবি তুল্লাম, তখনও জানিনা এই ছবি আমার জন্য কত বড় বাশ নিয়ে অপেক্ষা করছে। তার কথায় পরে আসছি





যত ভেতরে যাচ্ছি ততই বিস্মিত হচ্ছি। কি বানিয়েছে এরা ! হাটতে হাটতে সুভ্যেনির শপ পেলাম। কিন্তু দাম দেখে পূর্ব দিকে হাটা ধরলাম :D






ফাইন্ডিং ডরির সেই ডরি :)

প্রায় ১ ঘন্টা হয়ে গেছে আমি ঢুকেছি। ঘড়িতে প্রায় সারে ১১ টা বাজে। নাহ আর না, আর দেরি করলে ইউনিভার্সাল স্টুডিওস দেখা হবেনা। তাই হাটা দিলাম। বের হওয়ার সময় সেই ছবি প্রিন্ট আউট তুলতে গিয়ে আমার হার্ট এটাকের মত অবস্থা। আমি ভেবেছিলাম এটা ফ্রি,। অমা, একজন মিস্টিভাষি নারী মিস্টি গলায় বলল স্যার ফ্রেমসহ ৫৫ ডলার, ফ্রেম ছাড়া ২০ ডলার ! B:-) আমি কিছুক্ষন চুপ করে থাকলাম। কারন হৃদপিন্ড প্রায় থেমে যাচ্ছিল। ব্যাটারা কি জানে ওদের ১ ডলার সমান আমাদের ৬৩ টাকা X(( । এখন ছবি প্রিন্ট হয়ে গেছে, তাই আর না করতে পারিনি। ২০ ডলার দিয়ে একটা প্রিন্ট করা ছবি নিয়ে এলাম। অবশ্য এর চেয়ে বর ধরা আমি মেরিনা বে স্যান্ডস এ খেয়েছিলাম। সে পরের পর্বে জানাবো।

বের হয়ে এলাম সি এক্যুরিয়াম থেকে। সামনে একটু হেটেই ঢুকে পড়লাম ইউনিভার্সাল স্টুডিওস এ। এখানে একটা জিনিস খেয়াল করলাম তা হল, প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে ভারতীয় তামিলরা সংখ্যাগড়িষ্ঠ। যেখানেই গেছি, সব যায়গায় ভারতীয় তামিলরা। আমাকে চেকও করলো একজন তামিল। ভেতরে ঢুকে এক সুন্দরি জানতে চাইল আমি প্রথম এসেছি কিনা এখানে আর কিভাবে এসেছি। বললাম। সে আমাকে হাসি দিয়ে ইউনিভার্সাল স্টুডিওস এর একটা ম্যাপ ধরিয়ে দিল














মেরিলিন মনরো সেজেছে একজন

ম্যাপ পেয়ে ভালই হল। কোথায় যাব তা আগে থেকে ঠিক করতে পারবো। হাটতে হাটতে প্রথমেই পেলাম মাদাগাস্কার রাইড। ঢুকে পড়লাম। কিন্তু ঢুকে বিশাল এক লাইনে পড়ে গেলাম। সিঙ্গাপুরে এই একটা জিনিস আমাকে খুব বিরক্ত করেছে। যেখানেই গেছি, বিশাল লম্বা লাইনে পড়তে হয়েছে। এমনকি লিফট এ উঠতেও লাইন। তবে বিকল্প ব্যাবস্থাও আছে। টাকা দিয়ে একপ্রেস টিকেট কেটে নিলে, লাইনে দাড়াতে হবেনা। আপনাকে আগে নিয়ে গিয়ে উঠিয়ে দেবে। টাকা দিলে সব আছে :#



লাইন প্রায় ১ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর আমার পালা আসলো। উঠে পড়লাম। এগুলা আসলে সবই কৃত্তিম ভাবে বানানো রাইড। মুভির ক্যারেক্টার এর প্রোটোটাইপ বানিয়ে বিশাল দুর্গের মত বানিয়ে রাইড বানিয়েছে। এর ভেতরে দিয়ে যেতে যেতে তাদের কৃত্তিম নারাচারা আর ভয়েস শোনা আর কিছু না। রাইড শেষে বের হয়ে এলাম। ভাবলাম, এইসব ছাইপাস দেখে সময় নষ্ট করবো না। কিছু মজার রাইড চরবো। চলে গেলাম জুরাসিক পার্কের রাইডে।



মূলত জুরাসিক পার্কের গেটের আদলে একটা গেট বানিয়েছে। আর রাইড বলতে পানির ভেতরে একটা বোটে ভ্রমন করা আর পাশের রাবারের তৈরি কৃত্তিম ডাইনোসরের হালুম হালুম শোনা। এই রাইডেও প্রায় ১ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হল। রাইডে শেষের দিকে এসে পুরোপুরি ভিজে গেলাম। যদি রেইনকোট কিনে নিতাম লাইন থেকে তাহলে ভিজতাম না। খালি খালি এইটুকুর জন্য ৪ ডলার খরচ করতে ইচ্ছে করল না। যে গরম, এমনিতেই শুকিয়ে যাব।





বের হয়ে এলাম জুরাসিক পার্ক থেকে। এদিকে ৩ টা বেজে গেছে। সারাদিনে মাত্র ২ টা রাইডে উঠতে পেরেছি শুধুমাত্র ঐ বিরক্তিকর লাইনের কারনে। রবিবারে আসলে নাকি এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়। আমিও জেনে এসেছিলাম যে ছুটির দিনে যাওয়া যাবেনা। তবে রোলার কোস্টারে উঠতেই হবে। যদিও এই রোলার কোস্টারটা বেশ ভয়ানক। হাটতে হাটতে চোখে পড়ল দি মামি মুভির রাইড। তবে ওই লাইনের ভয়ে আর ঢুকলাম না। চলে গেলাম রোলার কোস্টারের কাছে।



রোলার কোস্টারে উঠতে হলে সাথে কিছুই নেয়া যাবেনা। মানিব্যাগ ও না। কি করি? সিকিউরিটি তামিল মহিলা আমাকে লকার দেখিয়ে দিল, লকারে রেখে আসতে হবে। ভাবলাম লকার ভারা না জানি কত হয়। গিয়ে দেখলাম প্রথম ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট ফ্রি। বাহ কি দারুন। কিন্তু ১ ঘন্টা ফ্রি এর কারন বুঝলাম না। যাই হোক, লকার রেজিস্টার করলাম ফিংগারপ্রিন্ট দিয়ে। মানে আমার ফিংগারপ্রিন্ট ছাড়া কেউ লকার খুলতে পারবে না। দারুন। সিংগাপুর আসলেই আধুনিক দেশ। লকারে মোবাইল, ক্যামেরা, মানিব্যাগ রেখে ভেতরে ঢুকলাম। ভেতরে ঢুকে বুঝলাম ১ ঘন্টা লকার ফ্রি এর রহস্য। মানে এখানেও ১ ঘন্টা লাইনে দাড়াতে হবে X((

১ ঘন্টা পর, রোলার কস্টারে উঠতে পেরেছিলাম। ৩ রাইডে ওঠার জন্য ৩ ঘন্টাই আমাকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। যার ফলে আমার পায়ের অবস্থা চরম বেগতিক হয়ে গেল। রোলার কোস্টার টা আসলেই ভয়ানক। কলিজা মুখের কাছে চলে আসছিল প্রায় :|







রোলার কোস্টার থেকে বের হতে হতে বিকেল সারে ৪ টা বেজে গেল। ভাবলাম ইউনিভার্সাল স্টুডিও তো দেখা হল। সেন্টোসার বাকি যায়গা গুলো একটু ঘুরে আসি। যেহেতু সময় কম আমার। বের হয়ে এলাম ইউনিভার্সাল স্টুডিও থেকে। চলে গেলাম সেন্টোসা এক্সপ্রেস এর স্টেশনে। এখানেও সেই লাইন :(( । যাহোক, আমি সেন্টোসার সর্বশেষ স্টেশন বিচ স্টেশনে নামলাম। এখানে নাকি একটা বিচ আছে সুন্দর। যাই দেখে আসি। স্টেশন থেকে নেমে হাটা দিলাম। পেয়েও গেলাম বিচ টা। খুবই ছোট একটা বিচ কিন্তু সুন্দর।






দাঁড়িয়ে আমি

বেশ কিছুক্ষন বসে থাকলাম সমুদ্রে ধারে। ভালই লাগছে। বসে থেকে দেখছি ব্যাস্ত সিঙ্গাপুর বন্দর। মালাক্কা প্রনালীর মুখেই সিঙ্গাপুর বন্দর। মালাক্কা প্রনালী পৃথিবির সবচেয়ে ব্যাস্ততম প্রনালী কারন এই প্রনালী দিয়েই পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি বানিজ্য হয়ে থাকে। আর এর জন্যেই সিঙ্গাপুর বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম।

সন্ধ্যা হয়ে এলো প্রায়। সামান্য খিদেও লেগেছে। বিচের ওপর প্রান্তেই দেখলাম ম্যাকডোনাল্ড। সেখান থেকে একটা বার্গার খেয়ে নিলাম। ভালই, খারাপ না। কিছুক্ষন এদিক ঘোরাঘুরি করলাম। এখন তো ফিরতে হবে। চলে গেলাম সেন্টোসা এক্সপ্রেস এর স্টেশনে। আবার সেই লাইন :(( :(( । এই লাইনের কারনেই আর কোনোদিন সিঙ্গাপুর আসবোনা বলে সিদ্ধান্তে উপনিত হলাম। X(


লাইন

এখানেও ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে ট্রেনে উঠলাম। পায়ের অবস্থা রিতিমত ভয়াবহ। বসতে না পারলে নির্ঘাত পড়ে যাব। সেন্টোসা এক্সপ্রেস এ চলে এলাম ভিভো সিটি। বেশি সময় লাগেনা। ভিভো সিটিতে এসে এক যায়গায় বসলাম কিছুক্ষন। ভাবলাম এসেছি ই যখন, একটু ঘুরে যাই ভিভো সিটি। অনেক এক্সপেন্সিভ শপিং মল ভিভো সিটি। সিঙ্গাপুরের প্রায় সব শপিং মল ই এক্সপেন্সিভ। টুকটাক কিছু জিনিস পছন্দ হল, কিনলাম। ১ ঘন্টা মত ঘুরে নিচে নেমে এলাম হারবারফ্রন্ট স্টেশনে।







ট্রেনে বসে চিন্তা করছি রাতে একটু বিরিয়ানি হলে কেমন হয়? খিদাও তো লেগেছে। লিটল ইন্ডিয়ার হকার সেন্টারে আলাউদ্দিনের বিরানির নাম শুনেছি। আর কিসের চিন্তা, নেমে গেলাম লিটল ইন্ডিয়া :) । নেমেই পাশেই পেলাম টেক্কা সেন্টার। এখানেই হকার সেন্টার। হকার সেন্টার হল আমাদের দেশের বসুন্ধরা সিটিতে যেরকম ফুডকোর্ট, সেরকম। খাবারও সস্তা কিন্তু ভাল।



কিন্তু ভাগ্য সহায় হল না। রাত প্রায় সারে ৯ টা বেজে যাওয়ায় আলাউদ্দিনের বিরিয়ানি বন্ধ হয়ে গেছে :( । কি আর করা, পাশের এক পাকিস্তানি দোকান থেকে দাম বিরিয়ানি খেলাম। দারুন ছিল বিরিয়ানি টা। পরিমানে দিয়েছে ২ জনের।



পেটপুরে খেয়ে নিলাম। বিল আসলো 5.5 ডলার। খেয়ে দেয়ে চলে এলাম আমার গন্তব্য ফেরার পার্ক। লিটল ইন্ডিয়ার পরের স্টেশন ই এটা। হোটেলে ফেরার আগে মুস্তফা সেন্টার থেকে কিছু শপিং করে নিলাম। হোটেলে ফিরে শরীর আর চলল না। পায়ের অবস্থা মারাত্বক রকম খারাপ। টিভি ছাড়লাম, পরে মনে হল ১৩ টা চ্যানেলে কি দেখবো, ঘুমিয়ে পড়লাম।

চলবে.....
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৩৯
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×