
চেয়ে চেয়ে অসহায় চোখে তাকিয়ে দেখলাম । বুয়েটে-ও আবার শিবির!! চশমা চোখে বাচ্চা বাচ্চা চেহারার কয়েকটা ছেলে । চরম নিরীহ । এমনকি বুয়েটে তাবলীগকে যতটা পাত্তা দেয়া হয়, এদেরকে তাও না । এদের সাথে কি এমন শত্রুতা থাকতে পারে ! টিউশানি করে নিজের পয়সায় এই কম্পিউটারগুলো কেনা বেশিরভাগের । চলতি টার্মের ক্লাশ শেষ । পরীক্ষার অপেক্ষা । কম্পিউটারে চোথাপত্রের সফ্টকপি । লকারে আর টেবিলে পরীক্ষা প্রস্তুতির খাতা-বই । সম্পূর্ন বিনা কারনে ছাত্রলীগ মিছিল নিয়ে এসে ধ্বংস করে দিলো সব ।

বুয়েটের মত প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ এতটা উগ্র আর নির্মম তান্ডব চালাবে , আমরা ভাবিনাই । মেধাবীদের প্রতিষ্ঠান, পড়ুয়াদের প্রতিষ্ঠান, সেরা ছাত্রদের প্রতিষ্ঠান, রাজনীতির ধার না ধারা ছাত্রদের প্রতিষ্ঠান... এই আমাদের বুয়েটে ছাত্রলীগ এ কী কলংক লাগালো !! দাউদাউ করে জ্বলছে বই, চোথা, জামাকাপড়, টেবিল, তোশক...

ওরা মিছিল শুরুই করেছে হাতে পেট্রোলের টিন নিয়ে । শামীম , মিকি , হারুন জিমি , কল্যান, ইফতি, রেজা, রানা, তন্ময় , অন্তু, দেবাশীষ, বাপ্পী, সোলায়মান শোয়েব, মিশু, নিশু, রওনক... তোমরা যখন ক্লাশমেটদেরকে কেবল শিবির হিসেবে দেখে এত প্রিয় কম্পিউটারগুলো জ্বালিয়েছো পেট্রোলে নির্মমভাবে, আমরা অল্প কয়েকজন তখন ওদেরকে কেবল ক্লাশমেট আর বন্ধু হিসেবেই দেখেছি । বলেছি, দোস্ত, সরে যা.. আমাদের রুমে চলে আয় .....ওরা কোনদিন আমাদের বা তোমাদের সাথে "শিবিরিয়" আচরন করে নাই । একসাথে ক্লাশ করা বা প্রক্সি দেয়া, এসাইনমেন্ট কপি করা, সেশনাল রিপোর্ট নিয়ে টেনশন করা.. কোনকিছুতেই তো ওরা আমাদের থেকে ভিন্ন ছিলো না । বুয়েটের একজন ছাত্রের প্রথম ও প্রধান পরিচয় বুয়েটিয়ান হিসেবে । কিভাবে তোমরা পুরোপুরি ভুলে গেলে ?

বুয়েটের ছাত্রত্ব শেষ করে যখন কর্মজীবনে যাবে, মনে রাখো, আজ যে অন্যায় তান্ডব তোমরা বন্ধুদের সাথে চালিয়েছো, তোমাদের বিবেক কোনদিন তোমাদেরকে ক্ষমা করবে না.. এখন হয়তো বিবেক নামের স্বত্তাটাকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছো বা খুন করে ফেলেছো, কর্মজীবনের কঠিন বাস্তবতায় তোমার এই মৃত বিবেক নিশ্চিত জেগে উঠবে ।


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


