somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উম্মাদের চিঠি-০২

০৮ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার প্রতি তাদের যে সকল অভিযোগ ছিল তার একটা তালিকা প্রণয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি নিরন্তর, আমাকে দিয়ে তারা যে সকল কথা বলিয়েছিল মাঝে মাঝে আমি তাতে আপত্তি জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম যে ভেঙ্গে যাওয়া হাড়ি পাতিল গুলো কুমোরদের একমাত্র দুঃখ নয়। যেহেতু আমরা বড্ড বেশি নিজেদের কথা বলি। ঈশ্বরের বিশ্বাস যদি আমার একান্ত নাই থাকে, তবে কুসংস্কার আমাকে নতুন জন্ম দিবে।

আমার দেহ থেকে এই মুহূর্তে যে দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে গেল তারও একটি পাশবিক যন্ত্রণা আছে। আমি বিশ্বাস করি যে গুছিয়ে স্বপ্ন দেখা আর গুটিয়ে আসা জীবন পরম্পরা। আমাদের মহান স্বপ্ন ও কল্পনাগুলোর মাঝখানে সাদাটে বলিরেখা দেখতে পাই। তাদেরকে বলেছিলাম "পৃথিবীর গন্ধ ও স্বাদ আমি বুঝি আমার যাপিত জীবন বলে হুকুম করাই বেচে থাকা"।

আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীদের মত আমারও বিশ্বাস মানবতা বোধ জন্ম নেয় বাঁশের কাণ্ড থেকে। তাই প্রতিনিয়ত আমার বিচারের ভার নিয়ে নিচ্ছে যে কেউ। সুযোগ বুঝে লেং মারছে গলির একপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। অবশেষে আমি আত্ম বিক্রয়পত্র লিখে দিলাম। মিসর, মেসোপটেমিয়া, ভারত ও চীনে নির্মাণ, কৃষিকর্ম ও গৃহ সেবায় আমাকে ব্যবহার করা হল। আমি সাক্ষ্য দিতে শুরু করলাম দাস প্রথা অতি উত্তম ব্যবস্থা। পাক-কলম্বিয়া, আমেরিকা, আজটেক, ইনকা ও মায়াদের দাস হিসেবে যুদ্ধ ক্ষেত্র ও কৃষিকাজে ব্যবহার করা হল আমাকে। জীবনকে আমি বড় বেশি ভালবাসতাম এটাই ছিল আমার চরম স্বার্থপরতা। আমাদের পূর্ব দিককার পাহাড়গুলো, আহা! কি তার উচ্চতা! সত্যি বলছি যেতে পারিনি। জীবনকে ভালবাসার মত অতি দুর্বলতা আমাকে ধারণ করে রাখে।

আমার দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পর্ক নেই এমন সব বিষয়ে কখনও কখনও উত্তেজিত হওয়ার ভান করতাম। কিন্তু আদৌ সে সবে বিচলিত বোধ করতাম না। নানান অস্থিরতায় অনেক রকম ভণ্ডামি করতাম। যার জন্য আমার মধ্যে কোন প্রকার অনুশোচনা ছিল না। আমার যে বন্ধুটি মারা গেল আমি তার জন্য কাঁদি। আমাকে বুঝতে দেই না শোকে কাঁদছি না সুখে। কেননা আমি যে বেচে আছি সে আত্ম গরিমা তখনও আমার ভেতর কাজ করে।

সর্বস্তরে নিজেকে বিকিয়ে দেওয়ার মতো পাগলামি আমার মধ্যে কখনোই ছিল না। তাই আত্মীয়দের কাছে পীড়াদায়ক ব্যক্তিত্ব নিয়েও পরম আনন্দে বেঁচে থাকতাম। পূর্ণিমার চাঁদের দিকে তাকিয়ে কখনোই মনে হয়নি মহা কাব্যিক অন্ধকার আমার প্রতিপক্ষ ছিল। যেহেতু প্রতিটি রাস্তার মোড় সাজানো হবে বিলবোর্ডে, মোরগের আত্ম চিৎকারে জন্ম নিবে এক একটি সকাল, তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ত্রাণ তহবিলে দান করে সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়ে যাব। নায়ক বণে যাওয়াটা আমার জন্য খুব একটা কঠিন ছিল না, কেননা ইসরাফিল শিঙ্গায় ফু দেওয়ার রিহার্সাল করতে গিয়ে প্রায়ই সিডর কিংবা সুনামির জন্ম দিত।

ক্রমশ আমার বন্ধুদের সাথে একটা দন্ধাত্বক সম্পর্ক গড়ে তুলছিলাম, কেননা স্বপ্নে আমার সবচেয়ে প্রিয় জামাটি খোঁচা লেগে ছিঁড়ে যাওয়া দেখতাম। বলতে গেলে এটাই ছিল আমার উল্লেখযোগ্য দুঃস্বপ্ন। তাদের চিন্তা জগতে প্লেগের মত কোন ছোঁয়াচে বিষয় ছিলনা। তবুও তাদের চিন্তা সীমার বাইরে বসবাসের চেষ্টা করতাম। কেউ কেউ আমাকে তাদের নিজেদের মতো করে ব্যবহারের চেষ্টা করত।.........শ্লেটকালো আকাশ; খলিফার কাছ থেকে বানিয়ে নেয়া প্রিয় জামা; আমার প্রতিবেশী ; ঘোড়ার মুতের মত চায়ের ঘ্রাণ; স্বপ্ন সঙ্গীতের মতো আওয়াজ করতে থাকা বালকের পকেটে মারবেল; তুলির আঁচড় ; ক্রমশ হালকার উপর ঘন পোজ।...স্লেট কালো আকাশ; আমার প্রিয় জামা......। আকাশ......কালো......আকাশ.........।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫১
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×