“শোনেন, আমার কথা কেউ বিশ্বাস করবেন না, কঠিন কঠিন সব মিথ্যা বলতে আমি অভ্যস্ত ”।
অবশেষে সবার কাছে বিরক্তিকর চরিত্র নিয়ে দাড়িয়ে পরলাম। যেহেতু সংঘাত অনিবার্য, তাই আমাকে উম্মাদ ভেবে অনেকে সড়ে পড়ছিল। মৃতদের বলছি তোমাদের পথ শয়তানের নাকি ঈশ্বরের দিকে? তোমরা মধ্যবিত্ত নাকি নিম্ন মধ্যবিত্ত? তোমরা কি কখনো প্রতারণার সকল কলাকৌশল আয়ত্ব করেছিলে? নিজেকে কি ভাব? তোমাদের মৃত্যুতে কি সবুজ কালো হবে? রক্ত কি নীল?
আমি জীবিতদের মধ্যে মনোনীত মৃত তোমরা বরং আমার মৃত চোখের দিকে তাকিয়ে বল। আত্মপ্রতারিত এবং মৃত আমার চেয়ে বিশ্বস্ত প্রতারক, সাক্ষ্য দিচ্ছি--আর একটিও পাবেনা। প্রতিটি স্বত্বা আমার বিশ্বাসঘাতকতা করতো। যাকে তোমরা বাকযন্ত্র বল, সে কন্ঠনালির
নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছিলাম।
বিষয়ভিত্তিক বেয়াদব হিসেবেও আমাদের এলাকায় সুখ্যাতি অর্জন করতে লাগলাম। অনেকেই আমার বিরোধিতা করলো, মৃতদের মধ্যে কেউ কেউ চুপচাপ থাকলেও বেশির ভাগই অকল্যাণের পক্ষে মত দিল। একজনের ক্ষতি না করে যেহেতু অন্যের কল্যাণ সম্ভব নয়, তাই মৃত্যু সম্পর্কে স্পর্শকাতর হয়ে যোগ বিয়োগের মাঝামাঝিতে দাঁড়িয়ে আছি। আমি ঠিক গতকালের কথাই বলছি হ্যাঁ, গতকালই আমার পা দুটো বাড়িয়ে দিয়েছি শয়তানের দিকে। কিছুদিন আগেও যা পাপ পূণ্যের মাঝামাঝিতে দাঁড়িয়েছিল। হাত দুটো এক পরিচিত কসাইয়ের কাছে কাটিয়ে নিয়েছি, যা গতকালের আগেও অন্ধকে রাস্তা পারাপারে সাহায্য করত। চোখ দুটো এক দর্জির ধারালো কাচি দিয়ে বের করে এনেছি। যা কিছুদিন আগেও ভারসাম্য-ময় দৃষ্টি ভঙ্গিতে পৃথিবীর সৌন্দর্য হরণ করতো।
নিজের কাছে প্রতারিত হওয়ার দামে আজ আমি চিন্তা প্রতিবন্ধী। আমাকে জলের দামে বিক্রি করে সময়কে কলা দেখিয়ে চলে যাওয়া পিতাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তাঁর পথ মৃত্যু না প্রাণের দিকে? পিতা বলেছিলেন “সব জীবন্ত কল্পনা। নিজের প্রতি অবিচার করার মত ভণ্ডামি”। তোমার ভেতর যে পৃথিবী আছে, তুমি তার একমাত্র যোগ্য নাগরিক। তোমার ভেতর জন্ম নেবে মাতাল ঢেউ সম সংশয়। মননের রুদ্ধ পর্বতের গুহায় বিবেকের জাল ছুড়ে দাও উঠে আসবে এক চমৎকার ভণ্ড। ভণ্ড চেনার সহজ উপায়,-“কারো প্রতি আমার কোন ব্যক্তিগত আক্রোশ নেই”।
যেহেতু ক্লান্তির ভাষা আমি সবুজের কাছেই শিখেছি, তাই সবুজের কাছে প্রশ্ন করেছিলাম, জীবনের মূল্য কতটুকু। বলেছিল- “নিজেকে হত্যা করার সমপরিমাণ”। দাস ব্যবসায়ীদের খোঁজে এদিক ওদিক অনেক ঘুরাঘুরি করেছিলাম। একজন তন্মিষ্ঠ দাস হিসেবে এর চেয়ে ভাল জায়গায় বিক্রি হওয়ার সুযোগ ছিল না।
গলাবাজিতে সবার আগে নিজেকে এগিয়ে রাখতাম। কেননা নিজের বিজ্ঞাপন নিজেকে করার মত দায়িত্বই আমাকে দেয়া হয়েছিল। চাপা শিল্পে আমার অদক্ষতা সত্ত্বেও হেন ব্যক্তি নেই যার সাথে হাসিমুখে কথা বলতাম না। পরবর্তীতে তাদের সর্বান্তকরণে ক্ষতি করতাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



