জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মারামারি: একদিকে নিউইয়র্ক, অন্যদিকে নিউইয়র্কের ভেতর কেরানীগঞ্জ!
জাতিসংঘ সদর দপ্তর, নিউইয়র্ক।
যেখানে বিশ্বের বড় বড় নেতা শান্তির কথা বলেন, যুদ্ধবিরতির কথা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বলেন।
আর আমাদের প্রিয় রাজনৈতিক নেতারা?
তাঁরা সেখানে গিয়ে যুদ্ধই করেন — তবে জলবায়ু নয়, ক্লাইম্যাক্স তৈরি করতে!
ঘটনাটা ঘটেছে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে। প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে ভাষণ দিচ্ছেন—
শান্তি, সমতা, মানবাধিকার এসব জটিল জটিল শব্দে ভরা বক্তৃতা।
আর বাইরে?
বাংলাদেশ বনাম বাংলাদেশ, লাইভ কুস্তি প্রতিযোগিতা।
প্রথমে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি নেতা-কর্মীরা কিছুক্ষণ “তুই কেমন আছিস?” ধরণের সৌজন্য বিনিময় করলেন।
তারপর একসময় হঠাৎ মনে হলো, নিউইয়র্কের ব্যস্ত রাস্তা নাকি ঢাকার শাহবাগ মোড়।
চিৎকার, গালাগালি, ঠেলা-ধাক্কা—
সব শেষে নকআউট পাঞ্চ!
হৃদয় বনাম রিয়াজ
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের (হ্যাঁ, নামেই নিষিদ্ধ, কাজে একেবারেই এক্টিভ) একজন নেতা হৃদয় মিয়া বিক্ষোভ শেষে বাসায় ফেরার পথে ছিলেন।
হঠাৎ এক অচেনা যুবক এসে বললেন,
“আওয়ামী লীগ মানেই সর্বনাশ!”
হৃদয় শান্তভাবে উত্তর দিলেন,
“ভাই, আপনি আমাকে চেনেন না, জানেন না, গালি কেন দিচ্ছেন?”
যুবক মনে হলো খুব ব্যস্ত, তাই সংক্ষেপে জবাব দিল—
“চিনি না বলেই মারছি!”
তারপর বুম, বুম, বুম!
মাথা, ঘাড়, মুখ—সব জায়গায় ঘুষির বৃষ্টি।
হৃদয় মাটিতে পড়ে গেলেন।
ঠিক তখনই নিউইয়র্ক পুলিশ এসে হাজির।
একজন অফিসার রিয়াজকে ধরে ফেললেন।
অন্যজন হৃদয়কে দেখে বললেন,
“উনি তো নকআউট হয়ে গেছেন!”
তারপর পুলিশের ভ্যানে দু’জনের জন্য দুই ভিন্ন গন্তব্য—
হৃদয়ের হাসপাতাল, রিয়াজের জেলখানা।
রাউন্ড: দাঁতের গল্প
হৃদয়ের দুটি দাঁত ভেঙে গেছে।
গিয়াস আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, সাংবাদিকদের গর্বভরে জানালেন,
“দেখেন, দাঁত ভাঙা কোনো অন্যায় না।
হৃদয় এয়ারপোর্টে ফখরুল ভাইকে গালি দিয়েছে।
তাই রিয়াজও দাঁতের ন্যায়বিচার করেছে।”
অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন
নতুন স্লোগান: “এক গালি = দুই দাঁত!”
(বোনাস হিসেবে মাথায় কিছু ঘুষি ফ্রি।)
আদালত, মুক্তি আর গোপন জোট
রিয়াজকে জেল থেকে মুক্ত করতে বিএনপি শীর্ষ নেতারা থানায় গেলেন।
এমনকি গিয়াস ভাইও বললেন,
“রিয়াজ নির্দোষ। খুব শিগগির ছাড়া পাবে।
আমরা তো শুধু শান্তি চাই।”
(শান্তির সংজ্ঞা—প্রতিপক্ষকে মারতে পারা, কিন্তু নিজে না ধরা পড়া।)
দর্শকের মন্তব্য:
একজন নিউইয়র্কের পথচারী বিস্মিত হয়ে বললেন,
“এটা কি জাতিসংঘ সদর দপ্তর, না পুরান ঢাকার কোনো গলির শেষ প্রান্তের কুস্তির মাঠ?”
অন্য একজন ঠাণ্ডা মাথায় উত্তর দিলেন,
“ভাই, যেখানেই বাংলাদেশি রাজনীতি যাবে, সেখানেই শাহবাগ মোড় গড়ে উঠবে।”
শেষ কথা:
একদিকে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে ভাষণ দিচ্ছেন—
শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবতা…
অন্যদিকে তাঁর ভাষণের বাইরে দাঁত, ঘুষি আর লাথির ভাষণ চলতে থাকে।
দুনিয়ার চোখে এ যেন দুই ভিন্ন বাংলাদেশ—
একটি কাগজে লেখা, আরেকটি কপালে ফোলা।
একদিকে জাতিসংঘ সদর দপ্তর,
অন্যদিকে জাতিসংঘের দরজার সামনেই গড়ে ওঠা ‘জাতি-সংঘর্ষ সদর দপ্তর’।
নতুন প্রস্তাবিত স্লোগান:
“বাংলাদেশের রাজনীতি—ঘরে বসে দেখুন, বিদেশে বসেও মারামারি পান ফ্রি!”


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


