“কারাগারের মৃত্যুর পিছনে খোঁজ চাই —সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতানূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন মৃত্যু: অবহেলা না কোনো ষড়যন্ত্র?”
একটি তীব্র প্রতিবাদমূলক ব্লগ/ তদন্ত-আহবান
একজন মানুষ — রাজনীতিবিদ বা নাগরিক যিনি আরেকদিন ছিল সংসদরুমের মুকুটধারী বহুমুখী ব্যক্তি — সকালে আর নেই। কথা খাটো করব না: নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন — সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য — জেলের হেফাজতে অসুস্থ হন, পরে হাসপাতালে নেয়া হয় এবং আজ ভোরে তিনি মারা যান। হাসপাতালের সূত্র ও কারাগারের বিবৃতি অনুযায়ী তিনি ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ছিলেন; একই সময়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে: একজন অসুস্থ বন্দী কি আদৌ পেয়েছিল পর্যাপ্ত ও সম্মানজনক চিকিৎসা? কি কারণে তিনি কারাগারে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল — রুগী অবস্থাতেই — এবং শেষপর্যন্ত তার মৃত্যু কীভাবে ঘটল, তা কার জবাবদিহিতায় আসবে?
আমরা রাগ বুঝতে পারি। রাগ কমে না, বাড়ে — যখন বাস্তবতা বলে, একটি জীবন বাঁচাতে সহজ ব্যবস্থা করা যেত কিন্তু হয়নি। চিকিৎসা ও কারাগারের দায়িত্ব এক গভীর নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব। যে রাষ্ট্র বন্দীকে আটক রাখে, সেই রাষ্ট্রের একটি মৌলিক কর্তব্য আছে — বন্দীর জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিবেচনায়ও এটা অমোঘ। তাই আজ আমরা চিৎকার করে বলি: অবিলম্বে একটি স্বাধীন, স্বচ্ছ এবং সরকারি-বাহিত তদন্ত হোক।
সংক্ষিপ্ত সময়রেখা (সংবাদি প্রতিবেদন থেকে সংগৃহীত)
**. শুক্রবার/শনিবার: জেল থেকে তাকে রিপোর্টেডভাবে অসুস্থ দেখা যায়; স্থানীয় বন্দী বা সহকারীরা জানিয়েছেন সমস্যা দেখা দেয়।
** দ্রুততার সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়; প্রথমে অভিযোজিত ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়, পরে অবস্থা খারাপ হলে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
**. সোমবার ভোরে হাসপাতাল সূত্রে তিনি মৃত ঘোষণা হন। সংবাদসংস্থাগুলো এই সারি রিপোর্ট করেছে।
এই টাইমলাইনই আমাদের প্রশ্ন ধরিয়ে দেয়: কোন পর্যায়ে কারা রোগীর চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? কার নির্দেশে তাকে জোরপূর্বক ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে (যদি তা হয়ে থাকে)? পরিবার ও আইনজীবীদের আবেদন ছিল কি? এ ধরনের মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর না থাকলে এই মৃত্যু শুধু একজন ব্যক্তির হার নয় — তা হচ্ছে সিস্টেমের ব্যর্থতার এক নজির, আর আমরা তা স্বীকার করতে বাধ্য।
আমরা কী দাবি করছি (স্পষ্ট ও অপরিবর্তনীয়)
১। স্বতন্ত্র ও স্বাধীন তদন্ত: নিহতের ঘটনায় অবিলম্বে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক — আইনজ্ঞ, চিকিৎসক, মানবাধিকার সংগঠন ও পরিবারের প্রতিনিধিকে নিয়ে। তদন্তের ফল জনগণের কাছে প্রকাশ করা হোক।
২। অটপসি ও মেডিক্যাল রিপোর্ট প্রকাশ: হাসপাতালের মেডিক্যাল রিপোর্ট, অটপসি রিপোর্ট, হাসপাতাল-কারাগার যোগাযোগের রেকর্ড, এবং জেল কর্তৃপক্ষের নোট/ঘোষণা—এসব ব্যবস্থা করে উপাত্ত জনগণের কাছে সাশ্রয়ীভাবে প্রকাশ করা হোক।
৩। জেলার স্বাস্থ্যসেবা অবস্থা মূল্যায়ন: কারা-স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতি ও বন্দীদের চিকিৎসা প্রটোকল পর্যালোচনা করে ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে তা মেরামত করা হোক।
৪। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা: যদি পাওয়া যায় যে অবহেলা, অনুপযুক্ত চিকিৎসা নীতি অথবা জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দায়িত্বশীলদের অর্পিত কর্তব্য লঙ্ঘন করেছে — সেই দায়িত্বশীলরা আইনি পথে জবাবদিহি করবে।
নিন্দা এবং আহ্বান
আমরা নিন্দা জানাই যে, একটি জীবন এত দ্রুত শেষ হয়েছে — এবং আমরা জোর দিয়ে বলছি: এটা শুধুই একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, এটি আমাদের সামাজিক-আইনি নির্দেশিকার উপর প্রশ্ন তুলে দেয়। রাষ্ট্র যদি কোনো শহরের কিংবা গ্রাম-কসবার মানুষের উপর অহংকার করে থাকে যে তারা “নিরাপদ” — তাহলে এমন সময়ই আমাদের বলা উচিত, ‘নিরাপদ কোথায়?’ একজন বন্দীর মৃত্যু ক্রিআকৃত না হয়, অবহেলা অথবা সিস্টেমিক ব্যর্থতার কারণ হলে তার সঙ্গে সবাই জড়িত হবে।
আমরা আহ্বান জানাই সাংবাদিকদের, মানবাধিকার সংগঠনগুলিকে, আইনি কাঠামোকে এবং সর্বোপরি জনগণকে — এই কাহিনীটিকে চেপে রাখবেন না। প্রশ্ন করুন, জিগ্যেসা করুন, অনুরোধ জানান — এবং যদি প্রয়োজন পড়ে, আদালতে মামলার দাবি করুন। জীবনের মর্যাদা আর কোনো রাজনীতির পেঁচায় লুণ্ঠিত হতে রাজি নয় এই দেশের মানুষ।


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


