somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবারো মদন কাহিনী

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মদন এখন বাসে।

সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় যাবে। ওখানে ভাই আছে, আছে ছোট কাকা। নিজের আত্মীয় বলতে এরাই। মেজাজটা খিছড়ে গেছে সকালেই। গ্রামের বেশকিছু লোক তাদের আত্মীয়দের জন্য এটা সেটা পাঠিয়েছে। নিজের আত্মীয় তো আছে দুর সম্পর্কের আত্মীয়ও যোগ হয় কেউ ঢাকায় যাচ্ছে শুনলে। প্রায় মন খানেক হবে সব মিলিয়ে ওজন। এগুলো গোছাতে গোছাতে বাসের সময় হয়ে এলো। তাড়াহুড়া করে উঠেছে শেষে। তলপেটের ছোট্ট চাপের কথা খেয়াল ছিলো না। এখন বুঝছে পেশাবটা না করে কত ভুলই না করেছে। খুব যন্ত্রণা হচ্ছে এখন।

মাঝে নাভারন থেকে মোটামুটি সুন্দরী এক তন্বী উঠেছে তার পাশের সিটে। সাতক্ষীরা থেকে এ পর্যন্ত জানালার পাশেই বসেছিলো। এখন বাসের সুপারভাইজর বলছে এই সিট নাকি ওই মেয়ের আগে থেকে বুক করা। কি আর করবে? ছেড়ে দিয়ে সরে এলো। সুন্দরী বলে কথা। কথা জমানোর চেষ্টা করেছিলো প্রথম প্রথম। আড়চোখে তাকিয়েছেও বেশ কয়েকবার। কিন্তু প্রতিবার মেজাজটাকে বিগড়ে দিয়েছে হতচ্ছাড়া তলপেট। এখন গ্যাঁট হয়ে বসে শধু আড়মোড়া মারছে। মেয়েটা জানি সন্দেহ ভরা চোখ নিয়ে ওর দিকে তাকালো। কি জানি কি ভাবছে আবার। পাগল- টাগল না ভাবলেই হয়। চাপটা ক্রমে ক্রমে বাড়ছে তো বাড়ছেই। মনে মনে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছে। ও আল্লাহ, এই যাত্রায় রেহাই দাওগো। আর তো পারি না। ব্লাডার তো মনে হয় ফেটে যাবে। উহ্ যন্ত্রনা! আল্লাগো! মাঝে মনে হয়েছিলো, সুপারভাইজররে বলে কোথাও নেমে কাজটা সেরে আসে। কিন্তু পাশে সুন্দরী। তার সামনে থেকে যেয়ে মুতে আসার মতো অভদ্র পবলিক মদন নয়। অগত্যা আর কি করা। বসে আছে।

বাতাসে মেয়েটার চুল উড়ছে। উড়ন্ত ওড়নার মৃদু আঘাত লাগছে মদনের হাতে। পোলো ব্রান্ডের ঘটিহাতা টি-শার্টের উপর দিয়ে স্পষ্ট অনুভব করতে পারছে সে আঘাতের মাধুর্য। কৈশর-যৌবনের সন্ধিক্ষনে মদনের একবার প্রেম হয়েছিলো। গোল-গাল কচি কলাপাতার বর্ণময়ী এক কিশোরীর সাথে। তার চুল বলে আর ওড়না বলে, কোনোটাই মদনের ছুয়ে দেখার সাহস হয়নি। আজ আবার তার কথা- উফ্, তলপেটে।

পাহাড় থেকে জলের ঢল নামছে মনে হয়। পানির গভীরতা বাড়ছে নদী-খালের। আর অল্প বাড়লে বুঝি বাঁধ ছাপিয়ে যাবে। বন্যা হবে নাকি? অবশ্য তাদের ওখানে বন্যা হয় না। যা হয় তা জলোচ্ছাস। বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে চলে আসে। গ্রামের পর গ্রাম সে ভেসে যেতে দেখেছে। কতো লোক ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে যায়। পানি নেমে যায় কয়েকদিন পর। কিন্তু তার পদচিহ্ন মানুষ ঘাড়ে করে বয়ে নিয়ে চলে বহু দিন। জীবন আর বাস্তবতা। নদীমাতৃক মানে নদী মাতা। হাসি আসে মদনের। হয়তো ছিলো কোনো এক সময়।

আর সহ্য করার মতো নেই। বাসের ঝাঁকুনিও অসহ্য লাগছে। অন্যবার এরকম ঝাঁকুনিতে ভালো ঘুম হতো। দুই পা'কে প্রানপণে একটা লেভেলে ধরে রেখেছে। না যায় সরানো না যায় নাড়ানো। চেয়ারটাকে খাঁড়া করে নিয়েছে অনেক আগেই। এখন চেয়ারে পিঠ ঠেঁকিয়ে অনেক কস্ঠ করে বসে আছে। সামনে দৌলতদিয়া। ফেরীতে উঠার জন্য যানবাহনের সারিবদ্ধ লম্বা মিছিল। কচ্ছপ গতি। নিচে নেমে এলো। কোথাও নির্জন জায়গা পাচ্ছে না। পথের দুধারে অজস্র ভাতের হোটেল, চায়ের স্টল। সবখানে ব্যস্ততা। তারচেয়েও ব্যস্ততা মদনের। নির্জন জায়গা যে তাকে পেতেই হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। অবশেষে খুঁজে পেলো। একটা কলাগাছের ঝোপ। টয়লেটে ঢোকার দোয়া পড়ে ভিতরে ঢুকে গেলো। নজরটা পিছনে। কেউ দেখছেনা তো আবার। একটু এগিয়ে যেতেই দেখা গেলো পিছনটা ক্লিয়ার। তার মানে কেউ দেখছেনা এখন শুধু কলাগাছ ছাড়া। এ সময়টাতে যেন আরও অসহ্য। জিপারটা খুলবে সে দেরীও যেন কতকাল। জিপার খোলা শেষ, ক্যামেরা রেডী, অ্যাকশন।

কাট্! কাট্!! ও কি সামনে! যেখানে দাড়ানো, কয়েক হাত দুরে যেয়ে রাস্তার মাটি খাঁড়া নেমে গেছে নিচে। বর্ষার পদ্মা জেলে পাড়ার ভিতরেও। ছোট্ট দ্বীপ। দু'টি বাড়ি। একজন রমনী। খোলা গায়ে ভেজা শাড়ী। এই ভর দুপুরে সাবান নেড়ে চেড়ে গোসলে মত্ত। মাথা তুললেই সামনে মদন। কামেরা, অ্যাকশন সব ক্যানসেল। এখন খুব সাবধানে ঐ রমনীর দিকে চোখ রেখে, কলাগাছের গোড়া থেকে আন্দাজ একহাত পরিমান উপর দিয়ে আস্তে আস্তে ছেড়ে দিলো। আহ!!!! শান্তি!

পায়ের উরুতে উষ্ণ জলের মৃদু ছোয়া। অজান্তেই হাত চলে গেলো। ধড়মড় করে উঠে পড়ল বিছানায়। এ কি! ছি! ছি! ছি! এই বয়সেও বিছানায় প্রশ্রাব। মুখ দেখাবে কেমনে

নাগু ও আমু আর ফেসবুকেও আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:১১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×