একদা নরেশ কেমনে জানি মতিঝিলে আইয়া পরলো। উচা উচা কয়েকখানা অট্টালিকা দেখিয়া তো তাহার চক্ষু কপালে উঠিল।খায়েশ হইলো একটু গুনিয়া দেখে কয়তলা উঠিয়াছে। এক .. দুই ... তিন.. যাইয়া গ্রামে বলিতে পারিবে। গুনিতে গুনিতে শুইয়া পরিল।
যাই হোক, পয়ত্রিশ তলায় উঠিয়া যেন কাহার কন্ঠ শুনিতে পাইল "এই যে দাদা "
অবাক হইলো, অত উচা থেকে আওয়াজ করিলেও কত ক্লিয়ার শুনা যায়! উত্তর করিল- "জ্বী, বলেন!"
আবার আওয়াজ.. "কি, করা হচ্ছে কি শুনি?"
চমকিয়া পিছনে তাকাইয়া দেখিল, আওয়াজ উপর থেকে নয়..পেছন থেকে আসিতেছে। বলিল-"এই যে, গুনি, কয়তলা.."
"গোনেন মানে? কে কইছে গুনতে? কার কাছ থিকা পারমিশন লইছেন?"
"পারমিশন! নাতো দাদা, কাউরে জিগাই নাই.."
"ওই মিয়া, পারমিশন ছাড়াই আপনে বিল্ডিং গুনবার লইছেন.. পারমিশন লইয়া গুনলে টেক্স না লইয়া গুনলে ফাইন সহ টেক্স, জানেন?"
"কেমনে জানমুরে দাদা, এই প্রথম.. কত কইরা লয় দাদা?"
"তালা প্রতি পাচ, কত তালা গুনছেন?"
"ছয়তলা.. "
"ছয়তলা..! পাচ ছক তিরিশ, ফাইন তালা প্রতি পনের.. টোটাল ১২০ টাকা.."
"অ' দাদা কয় কি! এত টেকা পামু কই? আছে মোটে সত্তর.. যাইতে বাস ভাড়াই তো তিরিশ..!.."
"তা আমি কমু কেমনে.. ও ভাই ও ( হাত দিয়া কারে যেন ডাকলো)
"ও দাদা থামেন, ডাইকেন না.. গরিব মানুষ না জাইনা একটা ভুল কইরা ফালাইছি.. "
"হ, তোমরা ভুল করবাই বইল্যা তো গভমেন্ট আমগোরে এইখানে চাকরি দিছে.. ভগিচগি বাদ..টেহা দ্যাও নাই কোর্ট দেহায়া দিমুনে.."
"( কান্দ কান্দ হইয়া) ভাইরে, হাছা কইরে ভাই আমাত্তে এত টেহা নাই.. আমারে বাঁচান.."
"আমি ক্যামনে বাচাই কও দেহি.. ( নরম হইয়া) কত যেন আছে কৈলা?"
"সত্তর দাদা.."
"সত্তর.. হুম... এক কাম কর.. কয়তলা যেন গুণছ কৈলা?"
"ছয়, দাদা.."
"ছয়, হুম.. তুমি তাইলে টেক্স তিরিশ টেকাই দ্যাও.. ফাইন আমি সামাল দিয়া দিমুনে.. আর খবদ্দার, কাউরে কৈবানা কইলাম..."
টেকা টুকা দিয়া নরেশ এখন যাইতাছে আর ভাবতাছে.. "সালার বলদ কতকগুলা.. আমি গুনছি পয়ত্রিশ, কইলাম ছয়... বলদায় বিশ্বাস কইরা লিল.. একবারও বুঝতে পারে নাই.."
অঙ্কে সে বরাবরই ফেল মারে নাই। হিসাব কইষা দেখিল পুরা পাচশত আশি টাকা লাভ হইয়াছে ।
(প্রকাশ এখানেও)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



