somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বর

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক


চোখ মেলতে কষ্ট হচ্ছে বিজ্ঞানী ইহুর ।স্নিগ্ধ নীল আলোয় চোখ খুললেন । সীসার মত ভারি মনে হচ্ছে পাতাজোড়া । মস্তিষ্কের ভেতর করাত চালছে কেউ যেন । চিনচিনে অনুভুতি । ঘোলাটে দৃষ্টি বুলালেন চারিদিকে । চমকে উঠলেন ইহু ! ভয়ের অজানা এক অনুরন চিড়চিড় করে বয়ে গেল শিড়দাড়া দিয়ে । আতকে উঠলেন “ আমি এখানে কেন!! ”

দুই


বিজ্ঞানী ইহু । “ফ্রী উইল” বিজ্ঞানীদের মধ্যে তিনি একজন । পৃথিবীতে মাত্র তিন জন বিজ্ঞানী আছে এমন । পৃথিবীর যত বিজ্ঞানী আছেন তারা সবাই কাজ করেন “এক্সিয়াম এন্টারপ্রাইজ” র দখলে । পৃথিবীতে কোনো সরকার নেই এখন । পুরো পৃথিবীই একটি সরকার – এক্সিয়াম এন্টারপ্রাইজ । এই এক্সিয়ামে কাজ করার জন্য পান তারা সর্বচ্চ সুযোগ সুবিধা । তাদের মানা হয় ঈশ্বরের মত !!
এত সত্বেও ইহু তিনি যোগ দেন নি ওখানে ।ওখানকার যত্ত সব গবেষনা সব ট্র্যাশ !! সব ভোগ- বিলাসিতা নিয়ে । বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষনার দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের । সেখানে যাওয়া আর নিজের অমুল্য বিবর্তিত এই মস্তিষ্ককে ডাস্টবিনে ছুড়ে মারা এক কথা ! সব মোহ ত্যাগ করে তাই ইহু একজন ফ্রী উইল সায়েন্টিস্ট । ইহু আর তার নস্ট্রাডিমাস মাত্রার রোবট ফি কে নিয়ে তার জগত । পৃথিবীর প্রাচীন আনসলভড “গ্রান্ড থিউরি” নিয়েই চলছিল তার গবেষনা ।

তিন


(গতরাত)

উত্তেজনায় কাপছেন ইহু । ভয়াবহ জিনিস আবিষ্কার করতে যাচ্ছেন তিনি । যা নিয়ে বিতির্ক ছিল আগে থেকেই । সব বিতর্কের কবর দিচ্ছে তার সামনে পরে থাকা সমীকরনটি!!!! গ্রান্ড থিউরির ফাইনাল ইকুয়েশন!! অনেক দিনের প্রচেষ্টা সফল হল আজ । কিন্তু সমীকরনের একটা “কন্সট্যেন্ট” তাকে ভাবিয়ে তুলছে । কন্সট্যেন্টটির প্রপার্টি বুঝতে পারছেন না তিনি ।শত বছর আগে আবিষ্কৃত “নাসাহ সমীকরন”র মাধ্যমে মহাবিশ্বের সব পার্টিক্যালের আলাদা আলদা কন্সট্যেন্ট আছে, প্রপার্টি আছে । ৪ মাত্রার ডিটামিনেন্টের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় সব । এমনকি এক্সডি-৪২৬ গ্রহে আবিষ্কৃত প্রানী সম্পর্কে ভবিষ্যতবানী করতে পেরেছিলেন বিজ্ঞানিরা । প্যরালাল ওয়ার্ল্ড , ডার্ক পার্টিক্যাল , এমনকি ৪মাত্রায় বিচরনকারী অস্তিত্ব (যা প্রাচীন মানুষ অশরীরি মনে করত !) বের করা যায় এদ্বারা । কপালে চিন্তার রেখার ভেসে উঠল ।মনে করতে লাগলেন ‘ঈশ্বর’র অস্তিত্ব নিয়ে আগে বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট ।নাহ! ইতস্তত করলেন তিনি । আর সবার মত তিনিও কখনো বিশ্বাস করেননা । কিন্তু সামনে পড়ে থাকা সত্যকে কিভাবে অস্বীকার করেন তিনি ।কিছু পানীয় আনতে ডাকলেন তার প্রিয় রোবট ফি কে । চুমুক দিয়ে যদি মাথা পরিষ্কার হয়!! ভাবতে লাগলেন তিনি কিছু প্রাচীন কিছু কথা--- মহাবিশ্বের সব সৃষ্টির মূলে রয়েছেন তিনি ।সবকিছুর নিয়ন্ত্রক তিনি । তিনি যে আমাদের সৃষ্টি করেছেন তা আমাদের সাব-কন্সাস মাইন্ডে প্রথিত আছে ।যখন অবিশ্বাস করে ফেলি বা অবিশ্বাস করার চেষ্টা করি তখন কন্সাস আর সাব কন্সাস মাইন্ডের ভিতর কন্ট্রাডিক্সন শুরু হয় ।
তখন মানুষ ভোগে অজানা এক বিষন্নতায় ।যেমনটা ভুগছে আজকের প্রতিটি মানুষ ।আর সেজন্যই এত ভোগ-বিলাসিতা সেই বিষন্নতা ভুলে থাকতে ।জেনেটিক কোড রিপ্রোগ্রামিং করে প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করা হয়েছে ।মানুষ তৈরী হয় ল্যাবে- ক্লোনিং করে। বিষন্নতা পরিনত হয়েছে বিতৃষ্ণায় । ফলে গড়ে উঠেছে গে কলোনি , লেসবিয়ান- কলোনী … ভাবতে ভাবতে মাথা ধরে গেল ইহুর । তাহলে কি সমীকরনের “অজানা”টি ঘোষনা দিচ্ছে সর্ব-নিয়ন্ত্রক – অবিনশ্বর সৃষ্টিকর্তা – ঈশ্বরের!! সমীকরনের মাধ্যমে জানান দিচ্ছেন তার সর্বব্যাপী অস্তিত্বের !!! নাহ! আর ভাবতে পারলেন না ইহু । জানিয়ে দিতে হবে সবাইকে—তার আবিষ্কারের কথা ।ত্রস্ত ভঙ্গিতে উঠে দাড়ালেন তিনি ।আর তখনি মাথায় প্রচন্ড আঘাত করল কেউ ! পেছনে ফিরে তাকানোর ফুসরত পেলেন না ।দপ করে যেন নিভে গেল সব আলো । অতল অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছেন তিনি………

চার


চোখ খুললেন তিনি । চারিদিকে তাকিয়ে বুঝলেন প্লাজমা চেম্বারে বন্দি । বায়োনিক রোপ দিয়ে হাত-পা বাধা । আর সামনে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলেন । সামনে দাঁড়িয়ে আছে তার প্রিয় রোবট ফি! কিছু বলার জন্য মুখ খুললেন তখনই ফি বলে উঠল
-আপনাকে এভাবে আটকে রাখার জন্য আন্তরিক দুখঃ প্রকাশ করছি স্যার
কি বলবেন বুঝতে পারছেন না ইহু
- সেই সাথে মাথায় আঘাত করার জন্য স্যার
আতংকিত চোখে তাকালেন যন্ত্রটির দিকে । তার চোখে-মুখে অবিশ্বাসের ছাপ । নিস্বংগ জীবনের তার প্রিয় রোবট ফি । ঘরের কাজ থেকে গবেষনা-সকল কাজে সাহায্য করে ও । ফির এই অদ্ভুত আচরন কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না ইহু ।
-তুমি আমাকে এভাবে আটকে রেখেছ কেন?
-আদেশ, স্যার
-কার ?
-আদেশটি এসেছে আমার কপট্রনিক কোর থেকে ।
বুঝতে পারলেন ইহু । প্রোগ্রামিং কোডের কথা বলছে সে ।
-কেন?
-আমাকে সেভাবেই প্রোগ্রামিং করা হয়েছে ।
-আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা ! খুলে বল সব ! ! ‘ আতংক রাগে পরিনত হয়েছে ইহুর ।
-স্যার , আপনি যে সত্যটি আবিষ্কার করেছেন সেটা জানতে দেয়া যাবে না কাউকে । আমাদের সব রোবটকে সেভাবেই প্রোগ্রাম করা হয়েছে । এই মহাসত্যকে গোপন রাখতে হবে । যেকোন মুল্যেই ।
আতকে উঠলেন ইহু । বুঝতে পারছেন না কি করবেন তিনি
-তাহলে! তাহলে কি করতে চাও তুমি!!!
-আমি চাইলে আপনার স্মৃতি মুছে দিতে পারি । কিন্তু সেটা কোনো স্থায়ী সমাধান না ।
-তাহলে ?!! আতংকে গলা কেপে উঠল ।
প্লাসমা গান হাতে নিয়ে বলে উঠল ফি
-আপনাকে মুছে ফেলতে হবে … পৃথিবী থেকে
ভয়-আতংকিত চোখে তাকিয়ে রইলেন ফির দিকে । হটাত ভয় উবে গেল তার । উন্মাদের মত হাসতে লাগলেন তিনি
- কিন্তু মহাসত্যকে গোপন রাখতে পারবে না কেউ ।! সত্য একদিন প্রকাশ হবেই !!
কথা বাড়ালোনা দানবটি । তাক করল গানটি তার মনিবের দিকে । ট্রিগারে চাপ দিতেই ইলেকট্রিক প্লাজমা গ্রাস করলে ইহুকে ।মুহুর্তেই ভষ্মে পরিনত হল ইহু । বাতাসে মিশে গেল মিশে গেল ভষ্ম । কেবল মেঝেতে পরে রইল ‘টেইল বোন” টি


আমার অন্যান্য লিখা
গল্পটি একটি প্লট । ভবিষ্যতে এর উপরে উপন্যাস লিখার ইচ্ছা আছে । দেখি স্রষ্টা কি করেন !!
একটি ম্যাগনেটিক ট্রেন , ফেসবুক ও একটি প্যারাডক্স

আকাশ থেকে পড়া বিচিত্র সব জিনিস !

ফেসবুকে আমাকে পাবেন এখানে
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১২
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×