somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প!

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খুব সকালে উঠে ব্রাশ হাতে বের হয় দীপা। আমগাছের নীচে, পুকুর পাড়ে বসে থাকে কিছুক্ষণ। মনটা বেশ ফুরফুরে! সকালে উঠতে পারলে বেশ ভালো একটা ইমেজ শরীরে বয়ে যায়। দূর থেকে মক্তবের ছেলে মেয়েদের যাওয়া দেখা যায়। কিছুদিন আগে দীপাও নাকমুখ বেধে ওড়না দিয়ে এভাবেই মক্তবে যেত। এখন সে একটু বড় হয়ে গেছে। তার বয়েসী আরিফা এখনও মক্তবে যায়, কিন্তু দীপা এতো লম্বা হয়ে গেছে যে তাকে আর মসজিদে যাওয়া মানায় না। তাই বন্ধ হয়েগেছে আরবি পড়া। এভাবে হয়থ একদিন তার বাংলা পড়াও বন্ধ হবে। মা বলবে মেয়ে বড় হয়েগেছে ওকে আর বাইরে যেতে দেওয়া উচিৎ হবে না। বাবা বলবে ছেলেও দেখতে হবে! সঙ্গে দীর্ঘশ্বাস।

এরকম দৃশ্য দীপা দেখেছে তার মামাতবোন মারুফার ক্ষেত্রে। মা'রুফা তার ২ বছরের বড় অথচ তার একটা মেয়েও আছে তিন বছরের। মারুফার সংসার জীবন নিয়ে কেমন একটা ভীতি আছে দীপার। মারুফার স্বামী লোকটা খুব ভালো ছিল। যৌতুক নেয়নি একেবারেই। যাও কিছু দিয়েছিল তার জন্য তার সেকি আফসোস আর লজ্জাবোধ! বরং মারুফা ভাইদের সঙ্গে হিংসা করে তার যেহেতু প্রাপ্য আছে পিতার সম্পদে তাই যা যা লাগে তার প্রায় সবই আদায় করেছে। ভাইরা এতে অখুশি। মারুফা কিছু চাইলেই তার ভাইরা বলতো তোর স্বামী যৌতুক চায়? অরে পুলিশে দিমু। আর মারুফা বলতো যৌতুক হেয় চাইবো ক্যান? আমার অধিকার নাই? তোমরা একাই সব ভোগ করবা?
বিয়ে হয়ে গেলে মেয়েদের আর অধিকার থাকে না-জাতীয় অনেক তর্ক বিতর্ক হতো।কিন্তু স্বামী বেচারা যখন আসতো তখন মারুফা একদম ভদ্র। মা যদি এটা সেটা টুপলিটাপলিও দিতো তাতেও বাধা দিত, বলত- তোমার জামাই রাগ করবে, দিওনাতো!...
হঠাৎই এই ভালো মানুষটার এমন পরিবর্তন ঘটল কেন কে জানে! বিশেষকরে চাকরিটা হারাবার পর তার বোধয় আর মাথা ঠিক ছিল না। শ্বশুরবাড়ি এলে আর যাওয়ার নাম করে না। গিয়ে থাকবে কোথায়? খাবে কি? বাপের সংসারেও পিরে যেতে পারছে না লজ্জায়। ঘুষের দায়ে ধৃত হয়ে চাকরিতো গেছেই, জমানো টাকা দিয়ে শেষে জামিনটা পেয়েছে। তার বাবাও ছিলেন দারোগা। সে ছিল খুব সৎ। তাই সংসারে অবাবও ছিল। তার সততার পুরষ্কার হিসেবে মাত্র ৫লাখ টাকার বিনিময়ে ছেলের চাকরি হয় এস.আই হিসেবে। এমন সোনার চাকরি পেয়ে তিন-চার বছরের মধ্যেই সোনায় সোনায় ভরে উঠেছিল তাদের সংসার। বাবা অনেক নিষেধ করেছে কে শোনে কার কথা।
ইদানীং লোকটা মারুফার গায়েও হাত তোলে। মারুফা বাড়ি এলেই ওর গায়ে নানান রকম দাগ দেখতে পাই। জিজ্ঞেস করলে বলতে চায় না। এখন অবশ্য সবই বলে।....
দীপা ভাবে ওরও একদিন বিয়ে হবে, সবাই ভালো ছেলে দেখেই বিয়ে দেবে, কিন্তু সেই ছেলেটাই একদিন খারাপ হয়ে ওর উপর অত্যাচার শুরু করবে। তার চে মক্তবের হুজুরটা যদি ওকে পছন্দ করতো! হুজুরকে ও কতো বেড়ে ভাত খাইয়েছে! হুজুরের খাবারের ব্যবস্হাটা ছিল এমন। একমাস একমাস করে প্রত্যেকের বাড়িতে খাওয়াবে। যারা মোটামুটি সচ্ছল, তারাই এ দায়িত্ব নেবে। তখন দীপা আরেকটু ছোট ছিল। হুজুরকে পাখা দিয়ে বাতাস করতো হুজুর ভীষণ লাজুক ছিলেন, সঙ্কোচ করতেন, বলতেন তুমি বসো, বাতাস করতে হবে না। কিন্তু মায়ের নির্দেশ ছিল হুজুরের যত্নে যেন ত্রুটি না হয়। যেন সবার বাড়িতে খাওয়ার পরও এ বাড়ির কথা হুজুরের মনে থাকে।
আর কিছুদিনের মধ্যেই হুজুর এই মসজিদ এবং মক্তব ছেড়ে চলে যাবে। তার নাকি কোন মাদ্রাসায় ভালো একটা চাকরি হয়েছে। শোনার পর থেকেই দীপার মা হুজুরর কথা বিশেষভাবে ভাবা শুরু করেছে। এখন সে প্রায়ই হুজুরের কথা কানে তোলে। বলে কবে হঠাৎ চলে যাবে একদিন দাওয়াত করে খাওয়ানো দরকার। কিন্তু সেই সুযোগই পাওয়া যাচ্ছে না। সবার বাড়িতেই ডাক পড়েছে বিদায়ী আপ্যায়নের ডাক।

দীপা নিজের ভাবনা নিয়ে নিজেই লজ্জা পায়। উঠতে যাবে এমন সময় দেখে হুজুর যাচ্ছে ওদের বাড়ির দিকে, ও উঠে দাঁড়ায় আর ঠিক সেসময় ওর চোখে পড়ে ওর পায়ের নীচে একটা সাপ! সাপটা খুব একটা বড় না হলেও সাপতো! এক চিৎকারে দীপা জ্ঞান হারায়।....

সেই থেকে জ্বরে পরে দীপা। আরিফারা দেখতে আসে। হুজুর আসে ফুঁক দিতে। হুজুরের ফুঁক দেয়াটা অনেক রোমাঞ্চকর দীপার কাছে। তার একান্তই বিশ্বাস এই ফুঁতেই সে ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু তিনদিনে জ্বর একটুও না কমায়
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫২
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষ থেকে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৬


আমি যখন কানাডায় বসে পাশ্চাত্যের সংবাদগুলো দেখি, আর তার পরপরই বাংলাদেশের খবর পড়ি, তখন মনে হয় - পশ্চিমা রাজনীতির চলমান দৃশ্যগুলো বহু পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে আলো-ছায়ায় প্রতীয়মান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×