somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুকের ভেতর মৃত নদী (শেষ পর্ব )

২৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আগের পর্ব



তেইশ
ইংরেজিতে একটা কথা আছে- এভরিবডিজ বিজনেস ইজ নো বডিজ বিজনেস।শ্রাবণীর ক্ষেত্রে পদে পদে এই কথাটি সত্য।বাবা না থাকার কষ্ট বা অভাব তেমন ভাবে তাকে বুঝতে হয়নি, মা ই সব করেছে।একমাত্র বিয়ের ক্ষেত্রেই সেই অভাবটা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।এক এক আত্মীয়,সকলেই অবিভাবকের পদে।সবাই মিলে মত দিতে গিয়ে আসলে কারো মতই কাজ করেনা।এক এক জন দায়িত্ব নিতে গিয়ে কারোই দায়িত্ব নেয়া হয় না ঠিক ভাবে।

তুষারদের বাসায় যাওয়ার ব্যাপারটা পেছাতে পেছাতে কয়মাস পিছিয়ে গেল।এরমধ্যে একবার তার চাচা যাবে বলে ঠিক করেও জ্বরের অযুহাতে শেষ পর্যন্ত গেলনা।তুষারের বাসায় এ উপলক্ষে বেশ আয়োজন করে রেখেছিল।তারা মনক্ষুন্ন হলেন।লজ্জায় শ্রাবণীর মাথা কাটা গেল।এরপরে একদিন শ্রাবণীকে না জানিয়েই তারা গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে আসলো।তখন তুষারদের কেউ বাসায় ছিলনা।কি খবর নিলেন সেটা তারাই জানেন।তবে খোঁজ নিয়ে তারা সন্তষ্ট হতে পারলেন না।শ্রাবণীকে খুলে তেমন কিছুই বলা হলোনা শুধু বলা হলো এই ছেলে তোমার যোগ্য না।আমরা তোমার জন্য ভালো ছেলে দেখব।

শ্রাবণীর ইচ্ছা করলো বিষয়টিতে বাঁধা দিতে কিন্ত সে বাঁধা দিবে কি?পাত্রটি যে আবার ডুব দিয়েছে।একা একা বিয়ের জন্য জোর করা যায় না।তুষার আবার তার খামখেয়ালি মেজাজে ডুবে গেছে।শ্রাবনী ভেবেছিল দ্রুত বিয়েটা হয়ে গেলে সামনের বিসিএস একসাথে পড়ালেখা করে দেয়া যাবে।সে সম্ভাবনা নেই দেখে সে চুপ হয়ে গেল।চেষ্টা করতে লাগল আগের রুটিনে ফিরে যাওয়ার।তাছাড়া এসব তার গা সওয়া হয়ে গেছে।

জীবনের শুরুর দিকে সবার অনেক আদর পেয়েছে তাই সে কখনো ভাবেনি তার জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সে কারো সাহায্য পাবে না।আশা সে তার প্রেমিকটির উপর করেছিল,আশা তার নিজের পরিবারের উপরেও ছিল।অথচ কেউ-ই তাকে সাহায্য করেনি।এতকাল তার বিয়ের জন্য তার মা ছাড়া অন্য কেউ তেমন এগিয়ে আসেনি।চাচা-ফুফুদের কথা নাহয় বাদ কিন্ত সেই মামা খালারা কোথায় ছিল এতদিন?একা একা শ্রাবণী এতটাদিন নরক যন্ত্রণা ভোগ করেছে তার দিকে কোনো খেয়াল কেন ছিলনা কারো?একটা মেয়েকে একা রেখে কিভাবে রাতে ঘুমাতেন তারা? তারা তুষারের কথা জেনেও আগে কেন খোঁজ নেয়নি?যদি খোঁজ টা আগে নেয়া হতো তবে তার হাতে জীবন গুছিয়ে নেয়ার অনেক সময় থাকত। শ্রাবণীর ব্রেকাপ হওয়ার পরে সে ঘোষণা করেছিলো বাসার পছন্দে বিয়ে করবে।তখনও তারা উদ্যোগ নেননি।তারা উদ্যোগ নিচ্ছেন এখন যখন শ্রাবণীর বয়স ত্রিশ পেড়িয়ে আরো এক বছর।এদেশে ত্রিশোর্ধ নারীর ভাল বিয়ে হওয়া বেশ কষ্ট সাধ্য।তার উপর শ্রাবণীর একাধিক সমস্যা তো রয়েছেই।একের পর এক নতুন পাত্র এনে,আর ভয়ভীতি ব্ল্যাকমেইল করে তারা শ্রাবণীর জীবন নরক বানিয়ে ফেলতে লাগলেন।কাওকে রিজেক্ট করতে যেমন খারাপ লাগে তেমনি রিজেক্ট হতেও খারাপ লাগে।আরো দু তিন বছর আগে শ্রাবণী যেসব পাত্রের কাছে হতে পারতো পরম আরাধ্য এখন সেখানে হয়ে পরেছে অবাঞ্চিত।শ্রাবনীর পরিবার তা বুঝতে চায় না।তার প্রতি দয়া করে না।নানা কিসিমের পাত্র আনতে থাকে।শ্রাবনীর মাও এক্ষেত্রে অবুঝ।তিনি যেকোনো পাত্রের সাথে দিলেই তুষারের কাছে তাকে দিতে নারাজ।

এদিকে নতুন করে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে তুষারও একই আচরণ করে।সে শ্রাবণীকে ছাড়তে চায়না,আবার গ্রহণ করতে হলে যা লাগবে তা করতে চায়না।এতটা কাল কেটে গেলেও সে না করছে চাকরি না করে অন্য কোনো কাজ।দুদিকের চাপে পড়ে জীবনের যেটুকু আশা ছিল সেটুকুও যেন নিভে যেতে লাগলো শ্রাবণীর।নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার যে প্রক্রিয়া সে শুরু করেছিল তা শেষ করার আগেই সবকিছু আরো বেশি এলোমেলো হয়ে গেল তার।

তবে এবার শ্রাবণী আর আগের মত ভেঙে পড়লো না।ভেবে দেখলো মানানসই কিছু একটা হলেই হয়।তুষার হলেও চলে, অন্য কেউ হলেও চলে।এবিষয়ে তার আশা, স্বপ্ন আর অনুভূতিগুলো কেমন যেন ভোঁতা হয়ে গেছে।তবুও তার একটা সংসার হবে না এই বিষয়টা সে মেনে নিতে পারেনা এখনো।ফেসবুকে বন্ধু বান্ধবদের সব হাস্যউজ্জ্বল ছবি দেখে দেখে সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।তুষারকে আনফ্রেন্ড করে রেখেছে ব্রেকাপের পর থেকেই।ব্লকও করে রেখেছে অনেকগুলো জায়গায়।তুষার অন্য নাম্বার থেকে ফোন মাঝেমাঝেই ঝগড়া করে তার সাথে এসব নিয়ে।শ্রাবণীর খুব বিরক্ত লাগে আজকাল।অফিসের নির্দেশে ভাইবার আর হোয়াটসঅ্যাপ খুলতে হলো।সেটা জেনে তুষার একদিন বেশকিছু কুৎসিত কথা বললো।

বললো শ্রাবণীর নাকি স্বভাব ভালো না।সে অন্যদের সাথে কথা বলার জন্য নতুন নতুন জিনিস ব্যবহার করছে।আর সেটা যাতে টের না পায় এজন্য তুষারকে ব্লক করে রেখেছে।সে যখন এইসব বলে তখন শ্রাবণী অবাক হয়ে ভাবতে থাকে এই যে এতদিনের ব্রেকাপ,এটার কি কোনো মূল্য নেই।তুষার এমন ভাব করছে যেন তার সাথে সম্পর্কটা চলমান আছে।চলমান হতে পারতো যদি বিয়েটা হতো।সে তো তার দিক থেকে চেষ্টা করেছিল কিন্ত তুষার আবার পিছিয়ে গেল।সে কিছু একটা ব্যবস্থা করলে বা খুব আগ্রহ দেখালে বাড়ির লোক রাজি হয়ে যেত।শ্রাবণীও জোর করতে পারত তখন।কিন্ত হঠাৎ করেই যেন তুষারের আগ্রহ ফুরিয়ে গেল।বিয়ে যদি নাই হয় তবে কেন সে একজনের সাথে যোগাযোগ রাখবে?

এমনি চলছিল।এর মধ্যে একটা ঘটনা প্রমান করে দিল তুষারের কোনোই পরিবর্তন হয়নি।আসলে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কয়েক মাস ধরে কেউ একজন নানা সময়ে তাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করে আসছে।লোকটি যা বলেছে তা হলো সে কোথাও একটা শিক্ষকতা করে।তাকে দেখে নাকি তার পছন্দ হয়েছে তাই লোকটি তার সাথে ভাব কর‍তে চায়।লোকটির বয়স বিয়াল্লিশ, কথায় তার রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক টান।শ্রাবণী ভাল মতো বুঝিয়ে তাকে মানা করেছে।তবুও লোকটি তাকে ফোন দেয়।সে এটুকু বলেছে অফিস থেকে নাম্বারটা পেয়েছে তবে এটা বলেনি যে সেটা কে দিয়েছে।প্রাথমিক তথ্য পাওয়ার পর সে লোকদিকে ফোনে ব্লক করে রেখেছে।লোকটি অন্য একটি নাম্বার থেকে ফোন দিলে সেটিকেও ব্লক করেছে।তবে লোকটি তাকে প্রতিদিন দুই তিনটি করে মেসেজ পাঠায়।ফোন এড়ানো গেলেও মেসেজটা তো চোখে পড়ে।সস্তা ধরনের মেসেজ,কিছু কিছু মোটিভেশনাল কপি পেস্ট।অবাক করা বিষয় কখনো কখনো তার শাড়ির রঙ বা অফিসিয়াল ছোটখাটো ঘটনা লেখা থাকে।শ্রাবনী বুঝতে পারে ভেতর থেকে কেউ ইনফরমেশন দেয়।তবে অফিসের পিওন দারোয়ানদের থেকে শুরু করে বস পর্যন্ত কারো কথার স্টাইলের সাথে লোকটার কথা মেলেনা।তাই কেউ সরাসরি নিজে এসব করছে না তা নিশ্চিত।

শ্রাবণী প্রায় মাস ছয়েক ধরে ব্যাপারটা সহ্য করছিল।লোকটি আবার নতুন নাম্বার থেকে ফোন দিলে শ্রাবণী রাগে ফেটে পড়ল।খুব কঠিন ভাষায় তাকে মানা করে দিল।এরপর থেকে শুরু হলো আরেক যন্ত্রনা। নানা নাম্বার থেকে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ফোন দিয়ে তাকে কুৎসিত সব কথা বলতে শুরু করল।

শ্রাবণী এই পর্যায়ে তুষারের কাছে সে সাহায্য চায়।তাকে ফোন নাম্বারগুলো দিয়ে বলে এগুলো কারা করছে তা বের করে দিতে। তুষার তাকে অবাক করে দিয়ে উল্টা তাকেই দোষারোপ করে বসে।তার ভুলের কারনেই নাকি বারবার এমন হয়।সে তাকে বলে অফিসে জানাতে।

ব্যক্তিগত সমস্যা অফিসে জানাতে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।সে যদি শিওর হতো কার কাছ থেকে লোকটা ইনফরমেশন নেয় তাহলেও একটা কথা ছিল।আন্দাজে একটা কথা বললে বরং পাগলের সাঁকো ঝাঁকানো হবে।একথা সে কিছুতেই তুষারকে বোঝাতে পারেনা।শেষে সে বাধ্য হয় বাসায় জানাতে।শ্রাবণীর নয় বছরের ছোট খালাতো ভাই ব্যাপারটা খুব সুন্দর করে হ্যান্ডেল করে।লোকটি পরে আর ফোন দেয়নি কখনো।তবে রেগে অস্থির হয়ে শ্রাবণী তুষারের বাকি নাম্বারটাও ব্লক করে দিল।

এর কিছুদিন পর তুষার অন্য নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে এমন একটি কথা বলল যা আগের সবকিছুর সীমা অতিক্রম করে ফেলল।সে বলল শ্রাবনীর নাকি স্বভাব খারাপ।তার কথার সারমর্ম হচ্ছে শ্রাবনীর চরিত্রটি তেমন ভাল না।সে বারবার নিজের স্বভাবের কারনেই হ্যারেসমেন্ট এর শিকার হয়।অনেক অতীতের একটা কথা তুলেও তুষার তার চরিত্র কতটা খারাপ তা বুঝিয়ে দিল।

শ্রাবণী তুষারকে পরম নির্ভরশীল বন্ধুর মত ভাবত।কোনো বন্ধুকেও যে কথা বলা হয়নি সে কথাও সে তুষারকে বলত।এই দীর্ঘ জীবনের পথে ছোট বড় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর নির্যাতনের কথা শ্রাবণী তুষারকে বলেছে।তুষারের সাথে পরিচয়ের আগে শ্রাবনীর এক বন্ধু হঠাৎ করে উন্মাদ একতরফা প্রেমিকে পরিনত হয়েছিল।তার পিছু ছাড়ানো ছিল অসম্ভব কঠিন।তুষারের সাথে পরিচয় হওয়ার পর সেটা জানতে পেরে ছেলেটি তাকে ফোন দিয়ে বাড়িয়ে বাড়িয়ে যা নয় তা কথা বলেছিল।শ্রাবণীও তুষারের কাছে কথাগুলোতে সাঁই দিয়েছিল।ভেবেছিল এতে প্রমাণ হয়ে যাবে তুষারের মনটি কতটা উদার।সেইসাথে তুষার যদি এই জঘন্য অভিযোগের পরও তার সাথে থাকার ব্যাপারে শক্ত থাকে তবে এই আপদটিকে চিরতরে বিদায় করা সম্ভব হবে।এটাও বোঝা যাবে সে আসলেই তাকে ভালবাসে কিনা।অল্প বয়েসের পাগলামি। কম বুদ্ধির পরিচয়।

সেসময় তুষার অবশ্য সবকিছু সুন্দরভাবে সামলেছিল।সেসব নিয়ে কখনো কিছু বলেনি।এজন্যে খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখতো সে তুষারকে। কিন্ত এতদিন পর পুষে রাখা সম্পূর্ণ ক্ষোভ সে শ্রাবণীর উপরে ঢেলে দিল।তার কথা শুনে শ্রাবণীর মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো।তার কাছে মনে হলো তুষার হয়ত বরাবরই তাকে খারাপ মেয়ে ভেবে এসেছে।এইজন্যই শেষ পর্যন্ত বিয়ে করতে চায়নি।তবে কাওকে খারাপ মনে করলে তা সাথে না মেশাই তো ভাল।মনে এক জিনিস রেখে কারো জীবন নিয়ে খেলা তো ভাল কথা নয়।

কিন্ত শুধুমাত্র তুষারের সাথে থাকতে চাওয়ার জন্য শ্রাবণীকে অনেক অপমান অপদস্ত হতে হয়েছে।তার জন্য অপেক্ষা করে থাকার জন্যেই অনেকগুলো নোংরা হাত তার দিকে এগিয়ে এসেছে।অগনিত নোংরা কথা তাকে প্রতিনিয়ত শুনতে হচ্ছে।যার জন্য এতকিছু সহ্য করেছে সেই কিনা আজ তার স্বভাব চরিত্র নিয়ে কথা তুলছে!একবারও ব্যাপারগুলো সে ভেবে দেখলো না!কি অবলীলায় তুষার বলছিল শ্রাবণী নাকি তার জন্য কিছুই করেনি।বলছিল সব তার নিজের দোষ!

হায়! এমনও কি হয় মানুষের জীবনে?অনেকদিন পর শ্রাবণী কাঁদল।অথচ সে ভাবত তার সমস্ত কান্না শেষ হয়ে গেছে।পাষাণের বুকেও তাহলে কোথাও একটু জল লুকিয়ে ছিল!



চব্বিশ

মাঝে মাঝে শ্রাবণী ভাবে সম্পূর্ণভাবে এতিম হওয়া হয়ত একদিক দিয়ে ভাল।তাতে অনেকখানি স্বাধীন আর মুক্ত থাকা যায়।আত্মীয়স্বজনের স্নেহ অনেকটা জালের মত।তাতে আটকে গিয়ে দম আটকে আসছে তার।এ সমাজে লালন পালন আর স্নেহের প্রতিদান দিতে হয় পরিবার বা আত্মীয়দের পছন্দে বিয়ে করে।নিজের পছন্দটিকে বিসর্জন দিয়ে।


তুষারকে সে খুবই পছন্দ করত একসময়।তুষারের মিথ্যাটা ধরা পরার পর নিজের চেয়ে পরিবারের সম্মানের কথাটি ভেবেই সে কষ্ট পেয়েছিল বেশি।যদি চাকরিতে ঢোকার পরপরই তাকে বিয়ে করত তবে তার এতদিনের কষ্টকর একাকিত্বের অভিজ্ঞতার স্থানটি ভরে উঠতো নব দাম্পত্যের মাধুর্য্যে।হয়ত তুষার তাহলে এতটা বেপরোয়া আর দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়ে উঠতো না।প্রাথমিক অপমানের ধাক্কা কেটে গেলে হয়ত সম্মানটাও একদিন ফিরে আসত।এখানেও তো পরিবারের কথা ভেবে বিরত থেকেছে সে।সেই সাথে ভেবেছে তুষারের সম্মানের কথাটিও।


তার আত্মীয়রা যদি তুষারের ব্যাপারে আগে খোঁজ নিত তাহলেও সে আগেভাগে নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারত।একটা সুন্দর স্বাভাবিক জীবন গড়তে পারত সে অন্য কারো সাথে।একদিকে তার পরিবার অন্যদিকে তুষার।সকলে মিলে যেন তাকে নিয়ে লোফালুফি খেলছে।একটা অশুভ চক্রের মধ্যে আটকা পরে যায় সে বারবার।পরিবারে নিয়ে আসা একটা ছেলের সাথে কিছুদিন কথা বলতে হয়।সেটা কোনো না কোনো কারনে ভেঙে গেলেই তুষারের আবির্ভাব হয়।তার আগ্রহ আর উচ্ছাস থাকে কিছুদিন তারপর সে এমন কিছু করে যাতে আঘাত পেয়ে শ্রাবনী পিছিয়ে আসে।যখন নিজেকে গুছিয়ে উঠে দাঁড়াতে চায় তখনি নতুন একটা ছেলেকে এনে তার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়।

অত্যন্ত শক্ত মনের হওয়ার কারনেই সে এখনো পাগল হয়ে যায়নি।কিংবা কে জানে ভেতরে ভেতরে হয়ত পুরোটাই পাগল হয়ে আছে সে।বিয়ে হয়নি কেন?মোটা কেন?এটা করোনা কেন ওটা করোনা কেন?এইসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সে ক্লান্ত।তার আত্মীয়রা তাকে যেকোনো ভাবে পার করিয়ে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।তুষারকে নিয়ে তাদের এত আপত্তি কিন্ত তাদের আনা বেশিরভাগ পাত্র যোগ্যতায় তার চেয়ে কম।পরিবারের অবস্থাও তাদের তেমন ভাল নয়।সবদিক দিয়ে ভাল পাত্রগুলো বয়স্কা স্থুল মেয়ে বিয়ে করবে না।শ্রাবণীর জিদ চেপে যায়,সে ঝগড়া করে। মনে মনে বলে তুষার তাহলে কি দোষ করেছে।সে কিছুতেই তুষারের চেয়ে কম যোগ্যতার কাওকে বিয়ে করতে চায় না।

এবারের প্রস্তাবটা শ্রাবণীর বেশ পছন্দ হলো।ছেলের হাইট কম কিন্ত পড়ালেখা বা চাকরির ব্যাপারটা ঠিক আছে।কিছুদিন কথা বলেই শ্রাবণী বুঝতে পারলো ছেলেটি সম্ভবত হাইপার অ্যাকটিভ সেক্সুয়্যালিটি সম্পন্ন একজন মানুষ।শ্রাবণীর তার কিছু কথা বা আচরণ ভাল লাগছিল না তবুও সে ভাবল সব কিছু সে সহ্য করে নেবে।তবুও সব কূল রক্ষার জন্য তাকে ভাল একটা বিয়ে করতে হবে।একমাস দুমাস করে তিন মাস পেড়িয়ে গেল।ছেলেটি মাঝে মাঝে ফোন দেয়।কথাবার্তার মধ্যে বেশিরভাগ জুড়ে থাকে এডাল্ট কথা।শ্রাবণীর এসব কোনোকালেই ভাল লাগে না। তুষারের কথা সে জানতো।তুষারের সাথে শ্রাবণীর সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে তার খুবই কৌতুহল। এই ছেলেটির শুরুতে এমন ভাব করত যেন আজকালের মধ্যেই বিয়ে করে ফেলবে কিন্ত শেষদিকে চাপাচাপি করলে একদিন বলল তার সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে।শ্রাবণী ধরে নিল সে বিয়ে করবে না।এর পরপরই সে শ্রাবণীকে যখন তার সাথে কক্সবাজারে হোটেলে যাওয়ার প্রস্তাব দিল তখন তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে পড়লো। সে খুব কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করতেই ছেলেটি অতি কুৎসিত ভাষায় তাকে অপমান করতে থাকলো। একপর্যায়ে শ্রাবণী ফোন কেটে দিয়ে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলো।

আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে আবার ব্যার্থ আশা মানুষকে ডুবিয়ে দেয় অতল গহব্বরে।শ্রাবণী ভাবেনি এত শিক্ষিত মানুষের মধ্যে এত অন্ধকার লুকিয়ে আছে।সে মনে মনে এই লোকটিকে গ্রহন করার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিল।আশাটা বেশিই করেছিল সে। লোকটির নিষ্ঠুর প্রতারণায় তার বুকের মধ্যে আরেকটি মৃত নদী সৃষ্টি হলো।

সামনে আবার সেই চক্র।শ্রাবনীর কোথাও বিয়ের কথা চলতে থাকলে তুষার কিভাবে যেন টের পেয়ে যায়।তখন সে সামনে এসে উথাল-পাথাল শুরু করে।শ্রাবণী তাতে দ্বিধায় পরে যায়।এবারও তুষার একই কাজ করছে।এবারের তীব্রতা টা অন্যবারের চেয়ে বেশি।কিন্ত শ্রাবণী সে ফাঁদে পা দিল না।কারন সে জানে সে যখনই তুষারের দিকে এগিয়ে যাবে তখনই সে পিছিয়ে যাবে।নির্লজ্জ বেহায়ার মত বলবে তুই আমাকে জোর করে বিয়ে করে ফেললেই পারতি।এক সময় অমানুষের মত ব্যবহার করে তার বুকটা ছিন্নভিন্ন করে দিতে থাকবে।কাওকে গ্রহন না করা পর্যন্ত সে পিছু ছাড়বে না।তাকে নিয়ে খেলতেই থাকবে আর বলবে-তুমি তো আমার জন্য কিছুই করোনি।

তুষারের প্রতি তার অসীম ভালবাসা ছিল।আরও অসীম ভালোবাসা সে তাকে দিতে পারত।কিন্ত তুষার তা বুঝলোনা, তার কদর করলোনা।শ্রাবণী বারবার অন্যদিকে না গিয়ে তুষারকেই গ্রহন করতে পারত।সে বহুবার ভেবেছে কেন সে তাকে পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারেনা।আসলে তাকে এটা করতে বাধা দিয়েছে তুষারের বাজে আচরণ।সেইসাথে নিজের পরিবারের প্রতি ভালবাসার বিষয়টি তো ছিলই।বিশ্বাসটা এমন ভাবেই ভেঙেছে যে আর জোড়া লাগেনি।তুষারও তো বদলায়নি এতটুকু,বরং আরোও অবিবেচক আর নিষ্ঠুর হয়েছে।ভরসা করতে পারেনি সে ছেলেটিকে শেষ পর্যন্ত। হয়ত এটাও শ্রাবণীর নিজেরই দোষ।সবই তো তার দোষ!

সে জানে বারবার এমন ফিরে ফিরে আসা থামাবে না তুষার।কিংবা কে জানে একদিন সে থামবে।শ্রাবণী বয়স যখন আরও বেড়ে যাবে,আর অন্য কোনোদিকে যাওয়ার উপায় থাকবে না।পরিবারের মানুষ গুলো যখন হাল ছেড়ে দেবে তখন তুষার নিজেও আর তাকে গ্রহণ করতে চাইবে না।বলবে যাও তোমায় মুক্ত করে দিলাম।অন্য কাওকে বিয়ে করে ফেল।অন্য কাওকে নিয়ে সুখি হও।

অথচ এই ছেলেটির মায়ায়,দ্বিধায় সে বহুবার বহু পুরুষকে ফিরিয়ে দিয়েছে।এই ছেলেটি সর্বদা তার পথের সামনে না থাকলে একটুখানি কম্প্রোমাইজ করে সে সহজেই স্বাভাবিক একটা জীবন গড়ে নিতো। বহু রকমের লোকের কাছে এতভাবে অপমানিত হতে হতোটা শুধুমাত্র একটা বিয়ে করার জন্যে।

আজকাল শ্রাবণীর নিজের জন্য খুব মায়া হয়।জীবনটা বুঝি তার শুধু শুধুই নষ্ট হলো।যার জন্য এত কিছু সেও নিজ মুখে তাকে চরিত্রহীন আখ্যা দিল।অথচ শ্রাবণী জানে কত ভাবেই না কত স্রোতে ভেসে যাওয়া যেত।কত কষ্ট করে সে ধরে রেখেছে সবকিছু।কতদিন ধরে রাখতে পারবে।কেমন হয় জীবনটা এখানেই শেষ করে দিলে?

এখন নিজের নিটোল মুখের এখানে ওখানে পড়তে থাকা সূক্ষ্ম বয়সের রেখাগুলো আয়নায় দেখে সে আপন মনে বলে ওঠে আহারে!বুদ্ধিদীপ্ত ক্লান্ত চোখের কোনের কালিতে হাত বুলিয়ে বলে আহারে! গভীর রাতে বুকের গহীনে ধাক্কার মত লেগে ঘুম ভেঙে গেলে সে বলে ওঠে আহারে!একা বিছানায় গুটিশুটি হয়ে শুয়ে আকুল হয়ে কাঁদতে থাকা নিজেকে দেখে তার বুকের মধ্যে থেকে কে যেন বলে ওঠে আহারে!

শ্রাবণীর বুকের মধ্যে মানুষের নিষ্ঠুরতায় সৃষ্টি হওয়া অসংখ্য মৃত নদীর দিকে তাকিয়ে অবচেতনে কে যেন ক্রমাগত বলতে থাকে আহারে!আহারে! আহারে!


পরিশিষ্ট

বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল।আবার শুরু হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোর হয়ে যাবে।শ্রাবণী তার নীল ডাইরিটা বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালো। এক কাপ চা নিয়ে সে বারান্দায় গিয়ে বসবে।ভোর হওয়া দেখবে।

তার বাসা খুব এলোমেলো হয়ে আছে।চাকরিতে জয়েন করার পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে গত মাসে।আর একটা সপ্তাহ, তারপর এই বাসাটা ছেড়ে দেবে সে।সে জন্যেই প্যাকেজিং চলছে কয়েক দিন ধরে।

বেশ ভালো একটা স্কলারশিপ পেয়ে জাপানে চলে যাওয়ার কথা ছিল শ্রাবণীর সামনের মার্চে।বিশ্বব্যাপী মহামারী ছড়িয়ে পড়ার কারনে বিষয়টা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।তবে এটা না হলেও অন্য কোনো স্কলারশিপ সে ঠিকই জোগাড় করে ফেলবে।

এর মধ্যেই সিলেটের চা বাগানে বাচ্চাদের স্কুলে শিক্ষক চেয়ে একটা সার্কুলার চোখে পড়ে তার।আবেদন করতেই চাকরিটা পেয়ে যায় সে।সামনের সপ্তাহে জয়েনিং। স্যালারি বর্তমান পদের চেয়ে কম।কিন্ত সমস্ত তিক্ততা থেকে দূরে ছিমছাম শান্ত একটা জায়গাতে কিছুদিন কাটানোর লোভ সামলাতে পারেনি শ্রাবণী। গত কয়েক মাসে সে নিজের মনকে শান্ত করেছে।শুধুমাত্র নিজের কথা ভেবেছে।নিজের যত্ন নিয়েছে।মানুষ অনেক সময় ভুলে যায় যে সে নিজেই নিজের সবচেয়ে কাছের জন।অন্যর কথা শুনে নিজের সাথেই নিজের সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলে।নিজেকে অযথা কষ্ট দেয়।

সে তো সবার কথা ভেবেছে চিরকাল।নিজের আগে অন্যদের প্রাধান্য দিয়েছে।এমন করতে গিয়ে একসময় ভুলেই গিয়েছে সে নিজে কি এবং জীবন থেকে সে কি চায়।দেরিতে হলেও উপলব্ধি করেছে নিজে ভাল না থাকলে অন্যকে ভাল রাখা যায় না। আর সংসার সবাইকে করতে হবে এমন কথা নেই।সবার জীবন একরকম হতে হবে এমনও কথা নেই।বৈচিত্র্য আছে বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর।

মহামারীর কারনে তুষার খুব একা হয়ে পড়েছে।এই প্রথম হয়ত শ্রাবণীর যন্ত্রণা কিছুটা বুঝতে পেরেছে সে।বারবার ক্ষমা চেয়েছে,ফিরে আসতে চেয়েছে।তুষারের অবস্থা দেখে তার খুব মায়া হয়েছে।সে বুঝেছে এইবার সত্যিই খুব কষ্টে আছে ছেলেটি।তবে সেই পুরনো চক্রের মধ্যে আর ঢুকতে চায়নি শ্রাবণী। সংসারের আশাটিকে বিসর্জন দিয়েছে অকাতরে।এখন সে সবকিছু থেকে দূরে নিশ্চুপ চা বাগানের শান্তিতে কিছুদিন কাটাবে।

এর পর যখন ডাক আসবে তখন সে পাড়ি জমাবে সূদুরে।নিজের পড়াশোনার স্বপ্ন, গবেষনার ইচ্ছা পূরণ করবে।পৃথিবীটা ঘুরেফিরে দেখবে।চেষ্টা করবে মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করার।এই চলার পথে যদি কোনো সঙ্গী জুটে যায় তাহলে মন্দ কি?তবে একটাই আশা, কর্মময় আর অর্থবহ একটি জীবন শেষ করে মৃত্যু উপস্থিত হলে পরিতৃপ্তির সাথে যেন ভাবতে পারে--জীবনটা তো বেশ কাটালাম!

না,শ্রাবণী হারিয়ে যায় নি কারন সে হারিয়ে যেতে চায়নি।জীবন শুধু মাত্র খেয়েদেয়ে, জন্ম দিয়ে মরে যাওয়ার জন্য এটা তার কখনো মনে হয়নি।সে তার জীবনটাকে অর্থবহ করতে চেয়েছে।অনেক চেষ্টা করেও একদিকের পূর্নতা অর্জন করতে না পেরে সেই পথ ছেড়ে দিয়েছে।তখন তার সামনে উন্মুক্ত হয়েছে নতুন পথ।কখনো কখনো হাল ছেড়ে দিতে হয় নতুন করে হাল ধরার জন্য।রাত যত বড়ই হোক ভোরের আলো একসময় দেখে দেবেই।

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×