somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারী সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত

১২ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবার কুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হল। আমি আমার ক্ষুদ্র কয়েকটি বছরের ছাত্রজীবনে অনেক কিছুই দেখলাম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল দেখলাম, তারপর আওয়ামী লীগের মহাজোটের সরকার। আগে কখনও এরকম ঝামেলা হয়নি। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকে যেন এই সহিংসতা, মারামারি একটু বেশীই বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই ঝামেলার পিছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে আমাদেরই কিছু স্যার তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার জন্য। আমি আমার কথাগুলোর স্বপক্ষে যুক্তিগুলো এখানে তুলে ধরছি।

আমি এখানে ভর্তি হওয়ার পর যতগুলো মারামারি সংঘটিত হয়েছে তার প্রত্যকেটা খুব কাছাকাছি দেখে দেখেছি। গতবছর ইলেকট্রিক্যাল এবং সিভিল ডিপার্টমেন্টের সাথে একটা মারামারি সংঘটিত হয়। এই ঘটনার কারন বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাব এখানে রাজনৈতিক একটা ব্যাপার অন্তর্ভুক্ত ছিল। সিভিল ডিপার্টমেন্টের এক স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে উনি একটি বিশেষ পদে বসার জন্য বিশেষ একটি দলের ছেলেদেরকে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য বিশেষ ইন্ধন যোগায়। আর একটা বিশেষ পদের অধিকারী স্যার এই কাজের সমর্থনে তার অবস্থান ইতিমধ্যেই বিতর্কিত করা ফেলেছেন।এবং কাজে নেতৃত্ব দেয় বিশেষ একটি দলের ছাত্র সংঘটনের নেতারা। কুয়েটে যে গ্যাঞ্জাম হবে তার মধ্যে তাদের অংশগ্রহণ থাকবেই। এইসব ছেলেরা গুটিকয়েক স্যারের ইন্ধনে এবং রাজনৈতিক সমর্থনে এত বেশী বাড়ছে যে স্যারদের গুলি করার হুমকি পর্যন্ত দেয়। মারামারি হয় দুই ডিপার্টমেন্টের মধ্যে অথচ কিছু সংবাদ মাধ্যমে তাৎক্ষনিকভাবে প্রচার করে ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ। এবং পুলিশ একটি বিশেষ হলকে নিরাপত্তা দেয় ওপরের মহলের নির্দেশে। পুলিশ প্রোটেকশনের পর তাদের হল থেকে অনেক বহিরাগরদের আমরা বের হয়ে যেতে দেখি। এখন প্রশ্ন জাগে এই রকঅম মুহুর্তে বাইরের ছেলেরা এখানে কি করছিল। আর তাদের কেনই বা তাদের আটক না করে বের হতে দেয়া হল। যা হোক কুয়েট বন্ধ দিয়ে এ যাত্রা ভি. সি তার পদ ধরে রাখল।

তারপর আরও ছোটখাট অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। আমি সর্বশেষ সংঘঠিত ঘটনার দিকে দৃষ্টিপাত করব।
প্রথমে ক্রিকেট খেলার সময় বল অন্য বাড়িতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকার লোকজনের সাথে সংঘর্ষ হয়। তখন ভিকটিম সহ অন্যান্য ছাত্ররা বিভিন্ন দাবি নিয়ে ছাত্রকল্যান পরিচালকের কাছে আসে। এই সময় নাকি একটি ছোট ঘটনা ঘটে। এই ঘঠনার পর থেকে ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রদলের কোন্দল হয়। ছাত্রলীগের এক সমর্থককে ছাত্রদল মারছে। তখন পরিস্থিতি বেষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ছাত্রলীগ তাৎক্ষণিক মিছিল বের করে। অন্যান্য সময় মিছিলটি হলের সামনে থেকে ঘুরে আবার চলে যায়। কিন্তু সেদিন ঘটে ভিন্ন ঘটনা। ছাত্রলীগ মিছিল নিয়ে পুরো হলের ভিতর ঢূকে পড়ে। তবে ভয়ংকর চিন্তার বিষয় যে তাদের সবাই ছিল সশস্ত্র আবস্থায়। কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে অস্ত্র ছিল। অর্থাৎ সরকার দলীয় ছাত্রসংঘটন যে কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তার প্রমাণ আমাদের এই শান্ত ক্যাম্পাসে ও অস্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। তার পর দিন বিকালে একজন স্যারের সামনেই একজনকে মারধর করেছে। এই ঘটনা ট্যাকল করার জন্য স্যারদের ভুমিকা আশানুরুপ ছিল না। কারন আমাদের ভার্সিটিতে একজন ছাত্র, তার শক্ত ব্যক আপ না থাকলে স্যারের সাথে এরকম আচরণ করতে পারে না। আবার এই ছাত্রদেরকে কিছু কিছু স্যার প্রোটেকশন দেয়। আর সেই কারনে তারা যাকে ইচ্ছা হচ্ছে তাকে হল থেকে ধরে নিয়ে হলের বাইরে নিয়ে এসে মারধর দিচ্ছে, রাস্তাঘাটে মারতেছে। তারপর অবশেষে শেষ পরিণতি হিসাবে হল ত্যাগ করার নির্দেশ এল এবং দুই ছাত্রকে বহিষ্কারের নোটিস আমরা পেলাম। এই দু ছাত্রের একজন ছাত্রলীগের সভাপতি আর একজন সেক্রেটারী। এই নোটিস দেখার পর সবার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ বলছে এটা একটা আইওয়াশ। এদের কিচ্ছু হবেনা। কারন উপরের ঘটনায়ও অন্যান্যদের সাথে এরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল কিন্তু কোন শাস্তি হয়নি। এবারও হয়ত এরকম হবে। আর না হলে তো অপরাধী হতে হবে না ভালই হবে।
আমি হয়ত স্যারদের ব্যাপারে অনেক কথা বললাম আজ। তবে এই পুরো লেখাটায় আমি একটা বিষয় তুলে ধরতে চাচ্ছি যে স্যারদের নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে স্যাররা আমাদেরকে ক্রীড়নক হিসেবে ব্যাবহার করছে। স্যাররা যদি দল মত নির্বিশেষে আমাদেরকে সহযোগিতা করেন তাহলে হয়ত কুয়েট তার আগের দিনে ফিরে আসবে।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৌলবাদ: ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ প্রযুক্তি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫১




মজার বিষয়—

আজকের মৌলবাদীরা রোকেয়া বেগমকে মুরতাদ ঘোষণা করে বুক ফুলিয়ে হাঁটে, অথচ নিজেদের অস্তিত্ব টিকেই আছে যাদের ঘৃণা করে— সেই “কাফেরদের” বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে। ইতিহাস পড়লে এদের বুকফুলা হাওয়া বের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×