﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا قُمۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ فَٱغۡسِلُواْ وُجُوهَكُمۡ وَأَيۡدِيَكُمۡ إِلَى ٱلۡمَرَافِقِ وَٱمۡسَحُواْ بِرُءُوسِكُمۡ وَأَرۡجُلَكُمۡ إِلَى ٱلۡكَعۡبَيۡنِۚ وَإِن كُنتُمۡ جُنُبٗا فَٱطَّهَّرُواْۚ وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰٓ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَآءَ أَحَدٞ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَآئِطِ أَوۡ لَٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدٗا طَيِّبٗا فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَيۡدِيكُم مِّنۡهُۚ مَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيَجۡعَلَ عَلَيۡكُم مِّنۡ حَرَجٖ وَلَٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمۡ وَلِيُتِمَّ نِعۡمَتَهُۥ عَلَيۡكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ٦﴾ [سورة المائدة: 6]
“হে মুমিগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাকনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর) ; আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে ভালোভাবে পবিত্র হও । আর যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর । সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত দ্বারা মাসেহ কর । আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না, বরং তিনি চান তোমাদের পবিত্র করতে এবং তার নিআমত তোমাদের উপর পূর্ণ করতে, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর”(আল মায়েদাঃ আয়াত ৬)
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لا تقبل صلاة بغير طهور، ولا صدقة من غلول»
পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কুবল করা হয় না, এবং খিয়ানতের সদকাও কবুল করা হয় না(মুসলিম:২২৪)
মেছওয়াক করা সুন্নত । রাসুল (সাঃ) বলেন, যদি আমার উম্মতের উপর কষ্ট মনে না করতাম তাহলে তাদেরকে আমি এশার নামায দেরী করে এবং প্রত্যেক নামাযের সময় মিসওয়াক করার হুকুম করতাম (বুখারী, মুসলিম, তাহক্বীকুল মেশকাত ১২১ পৃঃ; আহম্মাদ ইবনে মাযাহ বাংলা ইঃ ফাঃ ১৪৫ পৃঃ)
গোসলঃ ফরজ গোসল না করলে নামায পড়া, বাইতুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করা, কুরআন মাজিদ স্পর্শ করে পড়া, মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না (ফিকহুস সুন্নাহ ১ম খন্ড ৬১, ৬২, ৬৩ পৃঃ)
গোসলের পদ্ধতিঃ ফরয গোসলের জন্য প্রথমে মনে মনে নিয়ত করবে । তারপর দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করবে ও পরে ডান হাত দ্বারা বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জা স্থান ও উভয় রান ভাল করে ধৌত করবে । অতঃপর উভয় হাত মাটি কিংবা সাবান দ্বারা উত্তমরূপে ঘষে, মেজে নামাযের অযুর ন্যায় অযু করবে । তবে পা ধুতে হবে না । আর অযুর শুরুতে নাকের ভিতরে তিনবার পানি দিয়ে নাক ভাল করে ঝাড়বে এবং তিনবার ভাল করে কুলি করবে তবে রোযা অবস্থায় গোসল করলে সাবধানে কুলি করবে যাতে পানি পেটের ভিতরে না যায় । তারপর তিনবার মাথায় পানি ঢেলে হাতের আঙ্গুলি দ্বারা চুলের গোড়া খিলাল করে ভালভাবে পানি পৌঁছাবে । অতঃপর সমস্ত শরীর পানি ঢেলে ঘষে মেজে গোসল সম্পন্ন করবে । এভাবে গোসল শেষ করে, গোসলের স্থান হতে একটু সরে গিয়ে পা ধৌত করবে (বুখারী, মুসলিম, ফিকহুস সুন্নাহ ১ম খন্ড ৬৯ পৃঃ)
গোসলের পর পুনরায় অযু করার প্রয়োজন নাই । তবে লজ্জাস্থানে হাত, কাম উত্তেজনার সহিত বিনা পর্দায় স্পর্শ করলে অথবা অযু ভঙ্গের যে কোন কারণ সংঘটিত হলে পুনরায় অযু করে নামায পড়তে হবে (আহমাদ, তিরমিযী, নাসায়ী, তাহক্বীকুল মেশকাত ১০৪ পৃঃ)
উপরোল্লিখিত নিয়মে মহিলারাও ফরয গোসল করবে । তাদের চুল বেনী গাঁথা বা খুফা বাঁধা থাকলে খোলার প্রয়োজন নাই । মাথায় তিন বার পানি ঢেলে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোর চেষ্টা করবে (আহমাদ, তিরমি্যী, মুসলিম, ফিকহুস সুন্নাহ ৭০ পৃঃ)
অযুঃ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«إذا قمت إلى الصلاة فأسبغ الوضوء ثم استقبل القبلة...».
“যখন তুমি সালাতের জন্য দণ্ডায়মান হও, পরিপূর্ণরূপে অযু কর অতঃপর কিবলা মুখী হও...”(বুখারি: ৭৯৩; মুসলিম: ৩৯৭)
দুই হাতের কব্জী ধোয়া (বোখারি, মুসলিম, নাইলুল আওতার ১ম খন্ড ২০৬ পৃঃ)
আঙ্গুল খেলাল করা (বোখারী, মুসলিম, মেশকাত হাঃ নং ৪০৫);
আংটি থাকলে নড়া চড়া করে সেখানে পানি পৌঁছান (দারা কুতনি, ইবনে মাযাহ, নাইলুল আওতার ১ম খন্ড ২৩১ পৃঃ);
কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া (নাসাঈ, নাইলুল আওতার হাঃ নং ৪১১);
পুরা মুখমন্ডল ধৌত করা (বোখারী, মুসলিম, মেশকাত ৬৪৩ পৃঃ);
ডান ও বাম হাতের কনুইসহ ধৌত করা (বোখারি, নাইলুল আওতার ১ম খন্ড ২২৩ পৃঃ);
সম্পূর্ণ মাথা মাসেহ করা (বোখারী, মুসলিম, মেশকাত হাঃ নং ৩৯৪);
শাহাদৎ আঙ্গুল কানের ভিতর এবং বুড়ো আঙ্গুল দ্বারা কানের পিছনে মাসাহ করা (আবু দাউদ, তিরমিযী, নাইলুল আওতার ১ম খন্ড ২৪২৪ পৃঃ);
ডান ও বাম পা টাকনু সহ ধৌত করা (বোখারী, মুসলিম, মেশকাত হাঃ নং ৩৯৪ পৃঃ);
সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ করার আরও দলিল (মেশকাত ২য় খন্ড হাঃ ৩৬২ বাংলা অনুবাদঃ মাওলানা নুর মোহাম্মাদ আযমী এমদাদিয়া লাইব্রেরি-চক বাজার ঢাকা; সহীহ আল বোখারী আঃ প্রঃ ১ম খন্ড হা ১৮০, ১৮১; মুসলিম শরীফ ইঃ ফাঃ ২য় খন্ড হাঃ ৪৪৮, ৪৪৯; জামে তিরমিযী মাওলানা আব্দুন নুর সালাফী ১ম খন্ড হাঃ ৩০; মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ ইঃ ফাঃ হাঃ ১);
অজুতে নবী (সঃ) ঘাড় মাসাহ করেন নাই (বোখারী, মুসলিম, মেশকাত হাঃ নং ৩৯৪)
রাসুল (সাঃ) বলেন- তোমাদের যে কেউ ভাল করে অযু করবে । তারপর নিচের দু’আটি পড়বে তার জন্য জান্নাতে আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে । তন্মধ্যে যে দরজা দিয়ে সে বেহেস্তে ঢুকতে চায় ঢুকতে পারবে (মুসলিম, মেশকাত ৩৯ পৃঃ)
দু’আঃ আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ্ ।
তায়াম্মুম
...... অতঃপর পানি না পাও তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও অর্থৎ স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল (মায়েদাঃ আয়াত ৬);
পবিত্র মাটির উপর দু’হাত মেরে তাতে ফু দিয়ে মুখমন্ডল ও হাতের কব্জী পর্যন্ত একবার বোলাতে হয় (বোখারী, মুসলিম, মেশকাত হাঃ নং ৫৬০);
দুই হাত একবার মাটিতে মেরে ফুক দিয়ে তা দ্বারা মুখমন্ডল ও দুই হাতের কব্জী পর্যন্ত মাসাহ করতে হয় (বোখারী ১ম খন্ড ৩৩৮ পৃঃ)
জানাতে পারেনঃ-
৪) অযুতে এক তৃতীয়াংশ বা এক চতুর্থাংশ পরিমান মাথা মাসাহ করতে হবে এর কুরআন ও সহিহ হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল জানাবেন ।
৫) ঘাড় মাসাহ করতে হয় এর কুরআন ও সহিহ হাদিসের পূর্ণাঙ্গ দলিল জানাবেন ।
(চলবে)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




