somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বারিক্কা টিলা: বাংলাদেশের মানচিত্রে যেন ছোট্ট একটি ভূ-স্বর্গ

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকাগুলোতে যতবার গিয়েছি, একটা দীর্ঘশ্বাস পড়েছে। কারণ, সিলেট-নেত্রকোণা বেল্ট সহ প্রায় সীমান্ত এলাকাগুলোতেই সব পাহাড়গুলো ভারতীয়দের দখলে।

আজকে আপনাদের শোনাবো সুনামগঞ্জের পর্যটনের অপার সম্তাবনাময় এলাকা তাহিরপুরের একটি জায়গা - বারিক্কা টিলা। তাহিরপুর নিয়ে আমার আগের পোস্টটিতে জানিয়েছিলাম টাঙ্গুয়ার হাওড়ের কথা। বারিক্কা টিলাতেও গিয়েছিলাম ওই একই সময়। বছরের যে কোন সময় য়েতে পারেন আপনারা। তবে এপ্রিল থেকে অক্টোবর - এ সময়টাতে ওইসব এলাকায় পানি থাকে বলে ট্রলার ইঞ্জিনে যাওয়াটা উপভোগ করতে পারবেন।

বারিক্কা টিলা যাবার পথে মোটরসাইকেল থেকে তোলা ছবি

বারিক্কা টিলা যাবার পথে

বারিক্কা টিলা যাবার পথে

বারিক্কা টিলা যাবার পথে

বারিক্কা টিলা যাবার পথে

বারিক্কা টিলা যাবার পথে

তাহিরপুর থেকে ইঞ্জিন বোটে সেই আলী নূর ভাই আমাদের নিয়ে গেলেন সীমান্ত এলাকা টেকেরঘাটে। ট্রলারে তাহিরপুর থেকে যাওয়া-আসা বাবদ ১০০০-১২০০ টাকা লাগবে। আর আলীনূরকে পেলেতো কথাই নাই। অত্যন্ত অমায়িক একজন ভদ্রলোক।

টেকেরঘাটের সুপেয় হ্রদ

টেকেরঘাট

টেকেরঘাটের ব্রিটিশ আমলের রেলের রাস্তা

টেকেরঘাটের ব্রিটিশ আমলের রেলের রাস্তা

টেকেরঘাট

টেকেরঘাট

টেকেরঘাট

যাইহোক, মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। টেকেরঘাট থেকেও বারিক্কা টিলা যাওয়া যায়, আবার বসোরা নামের সীমান্তবর্তী আরেকটা জায়গা আছে, সেখান থেকেও যেতে পারেন। দু'জায়গা থেকেই মোটরসাইকেল পাবেন। একটি মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া দুইজন। টেকেরঘাট থেকে রিজার্ভ যাওয়া-আসা ৩০০ টাকা পড়বে। তবে মোটরসাইকেল জার্নিটা একটু কষ্টের বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে। টেকেরঘাট থেকে মোটরসাইকেলে লাউরেরগড় হয়ে বারিক্কা টিলা যাওয়া-আসা বাবদ প্রায় দেড় ঘন্টা সময় লাগবে। যাবার সময় হাতের বাম দিকে তাকালে ভারতীয় সীমান্তবর্তী পাহাড়ের সৌন্দর্য সত্যিই উপভোগ্য।

বারিক্কা টিলা যাবার পথে

বারিক্কা টিলায় পৌঁছানেরা পর ওই টিলার উপরে উঠে নিচের দিকে তাকালাম। দেখলাম, 'জাদুকাটা' নদীতে শ'য়ে শ'য়ে নৌকা পাথর তুলছে, যে পাথর ভেসে আসছে ভারত থেকে। ওই এলাকার মানুষের প্রধান জীবিকা নির্বাহ হয় এই পাথর ব্যবসায়। স্থানীয় একজনের সাথে কথা বলে জানলাম, একজন পাথর উত্তোলনকারী প্রতি ঘনফুট পাথর তুলে ৫০ টাকা পায়। ছোট নৌকাগুলোতে পাথর তুলে দেয় তারা। পরবর্তীতে বড় নৌকাতে করে সে পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানগুলোতে চলে যায়। বারিক্কা টিলার মূল সৌন্দর্য চারদিকের নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলি, দু'চোখ ভরে দেখেও যেন মন ভরেনা। একটি যায়গা আমরা যেতে পারিনি, যেটি হিন্দুদের একটি বিখ্যাত তীর্থস্থান - 'পোনাতীর্থ', লাউরেরগড় থেকে কাছেই অবস্থিত।

বারিক্কা টিলার উপর থেকে তোলা ছবি, নিচে জাদুকাটা নদী

বারিক্কা টিলার উপর থেকে তোলা ছবি

বারিক্কা টিলার উপর থেকে তোলা ছবি

বারিক্কা টিলার উপর থেকে তোলা ছবি

বারিক্কা টিলার উপর থেকে তোলা ছবি

বারিক্কা টিলার উপর থেকে তোলা ছবি

বারিক্কা টিলার সামান্য কিছু অংশ বাংলাদেশের মধ্যে পড়েছে, বাকী অংশ ভারতের। আর ভারতীয় বি.এস.এফ কে বিশ্বাস নেই, সীমান্ত এলাকায় তাই পিলারগুলোর একদম কাছে না যাওয়াই ভাল। টিলার উপর থেকে নিচে নামলাম। যে নদীটা ভারত থেকে পাথর নিয়ে আসছে, সেখানে পা ভিজালাম। ইচ্ছে হলে নৌকা ভাড়া করেও নদীতে ভ্রমণ করে নিতে পারেন যে কেউ।

বারিক্কা টিলা

ফেরার পথে বারিক্কা টিলার উপরে খ্রীস্টানদের একটি ছোট চার্চ দেখলাম।

সন্ধ্যার আগে আগেই আমরা ফিরে এলাম টেকেরঘাটে। তারপর আলী নূরের ইঞ্জিন বোটে তাহিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

একটা ব্যাপার না বলে পারছিনা, সেটা হলো, বাংলাদেশের যতগুলো ট্যুরিস্ট এলাকায় আমি গিয়েছি, সব জায়গাই আমরা বাংলাদেশীরা শব্দ দূষণ করে ওইসব এলাকার বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছি। কিন্ত তাহিরপুরের এইসব নয়নাভিরাম এলাকা এখনও দূষিত হয়নি। প্রত্যন্ত এলাকা বলেই এসকল দর্শনীয় এলাকার কথা মানুষ-জন এখনও তেমন জানেনা । তবে আমি মনে করি, সরকার উদ্যোগ নিলে তাহিরপুর হতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম একটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট, যেখান থেকে আমাদের রাজস্ব আয়ও আসতে পারে প্রচুর।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে থাকতে হলে:
১. উপজেলা ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার কৃপেশ দাস: 01724968161
২. উপজেলা গেস্টহাউজের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আনিসুল হক কে অনুরোধ করতে হবে: 01715172238

ট্রলার ভাড়া করতে হলে আলী নূরকে ফোন দিন: ০১৯২২০৫৬৭৩০

আরও ভ্রমণ কাহিনী:

টাঙ্গুয়ার হাওড়: যার সৌন্দর্যের তুলনা সে নিজেই

সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি বিজড়িত মসূয়া

কালিমপং-লাভা-লোলেগাঁও: যেন পৃথিবীর বুকে একটুকরো স্বর্গ
পর্ব-১
পর্ব-২
পর্ব-৩
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১১:১৪
৩৩টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×