আর তখনই .... প্রচন্ড শব্দের সাথে মিলানের বাংলোটি কেপেঁ উঠে । হঠাৎ করে এই ঘটনা ঘটায় রুয়ানা মূর্ছা(জ্ঞান হারায়) যায় । এলিনা পেশায় ডাক্তার সে জানে তার কি করা উচিত ! তখন বাচ্চাদের কথা মনে পড়তেই, মিলান দৌড়ে বাচ্চাদের কক্ষে যায় । বাচ্চারাও অনেক ভয় পেয়েছে, তাদের চেহারা দেখে স্পষ্ট বুঝা যায় । এদিকে মিলান বাইরে এসে ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করে । ব্যাপারটা অনেকটা ভয়ানক রূপই বলা যেতে পারে । একটি ছোট বিমান(সাধারণত সখের বসে যে বিমান চালানো হয়, সে ধরনের) তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় এসে আছড়েঁ পড়েছে । ব্যাপারটা লক্ষ্য করতেই মিলান প্লেনের আরোহীদেরকে খোজঁ করার চেষ্টা করে । না, তাদের কাউকেই সে পায়নি । আশেপাশের ঝোপ ঝাড়েও সে তন্ন তন্ন করে খুজেঁও নিরাশ হয়েছে । রুয়ানা ইতিমধ্যে জ্ঞান ফিরে পেয়েছে আর সাথে সাথে বাচ্চাদের খোজেঁ তাদের ডাকঁতে থাকে । এলিনা বুঝতে পেরেছে যে, জ্ঞান ফিরে পেলেও এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে নি । মিলান ওয়াকিটকিতে এই দ্্বীপের শেরিফকে এই ঘটনা জানিয়ে দেয় । কিছুক্ষনের মধ্যেই শেরিফ তার গাড়ি নিয়ে হাজির হয় । তাছাড়া শেরিফ এই আশেপাশেই কোথাও টহল দিচ্ছিলেন, তাই আসতে বেশী দেরী হয় নি । শেরিফ এসেই বিমানের আরোহীদের খুজঁতে শুরু করেন । যদিও মিলান আগেই জানিয়ে দিয়েছে, এর উত্তর ! কিন্তু শেরিফ তার দায়িত্ব পূরণ করতে বধ্য পরিকর । এলিনা তার স্বামীকে এখানে উপস্থিত দেখে অবাক হয়নি । কারণ সে জানত যে, মিলান তাকে অবশ্যই ডাকবে, কারণ সে এই দ্্বীপের শেরিফ ।
হারভি(শেরিফ) সন্ধ্যা পর্যন্ত লোকবল নিয়ে আশপাশ তন্নতন্ন করে খুজেঁও কিছু পেল না । সন্ধ্যার দিকেই এলিনা মিলানকে বিদায় জানিয়ে চলে যায় । মিলান রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ব্যাপারটা নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবে । কিন্তুকোন কূল কিনারা বের করতে না পারায় অনেকটা অন্ধকারের মধ্যে থেকে যায় সে । বিমানটা কোন কিছুর আঘাতেই হোক বা নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই হোক কিংবা ইঞ্জিনের গন্ডগোলের কারণেই হোক, পাইলট তো উধাও হয়ে যেতে পারে না । এমনও তো হতে পারে পাইলট আগেই বিমান থেকে নেমে গেছে, কিন্তু পাইলটের প্যারাসুট তো বিমানের ভিতরেই পোড়া(আগুনে পোড়া) অবস্থায় পাওয়া যায় । এমনকি পাইলট লাফিয়েও বিমান থেকে পড়ে যেতে পারে অথবা বিমানের ভিতরে আরোহীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির কারণেও হতে পারে । এমনই হাজারো কল্পনার রেখা মিলান বুনে যেতে লাগল । কখন যে ভোর হয়ে গেল সে টেরই পায় নি ।
আজ বাসার গবেষণাগারে তেমন মন বসাতে পারে নি । চোখে ঘুম ঘুম ভাব ! এলিনা মাঝে একবার ফোন করেছে । রুয়ানার অবস্থার উন্নতি হয়েছে । আজ মিলানের এক জায়গাল টারমিন আছে, দেখা করতে যেতে হবে । এর আগে সে এই ঘটনার ব্যাপারে একটা আর্টিকেল ছাপানোর চিন্তা করল এখানকার পত্রিকা অফিসে(উল্লেখ্য যে, এই দ্্বীপে তখনও পত্রিকার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি না পাওয়া কারণে সাপ্তাহিক পত্রিকা চালু ছিল) । কিন্তু যাওয়ার ইচ্ছা তার করছে না । এরপর মিলান ঐ পত্রিকা অফিসের সম্পাদকের কাছে ফোন করে, জানিয়ে দিল যে, সে আজ একটি সংবাদ ইমেইলে পাঠিয়ে দেওয়া দিবে এবং তা যেন আগামী সপ্তাহের পত্রিকায় ছাপানো হয় । লেখাটি শেষ করতে বেশীক্ষণ দেরী করল না ।
বারান্দায় আসার পর খেয়াল করল যে, তাদের বাংলোর প্রধান ফটকের এর একপাশ খোলা । সাধারণত এরকমটি হওয়ার কথা না । আজ রাতে বৃষ্টি হয়েছিল, তাই পথ-ঘাট ঘাট স্যাতঁস্যাতেঁ । এরই সুবাদে কিছু অস্পষ্ট ছাপ দেখতে পেল বাংলোর ফটক থেকে বাংলোর মূল অংশ বরাবর । ব্যাপারটা খেয়াল করার পরই মিলানের ভ্রু কুচঁকে আসে । পরমূহুর্তেই রুয়ানার কথা মনে আসে । যতটুকু দ্রুত পেরেছে দৌড়ে রুয়ানার ঘরে যায় । না, রিয়ানাকে নিয়ে তো রুয়ানা ঘুমিয়ে আছে, এই অবস্থায় রুয়ানাকে খুব সুন্দর লাগছে । কিন্তু পরমুহূর্তেই অদৃশ্য আগুন্তুক এর কথা মনে পড়তেই, দ্রুত পদে সদর দরজার সামনে গিয়ে দেখে যে, দরজা সম্পূর্ণ খোলা ! সাথে সাথে তার সারা ইন্দ্রিয় সবের্াচ্চ সর্তকে সর্তকিত হয় । তীক্ষণ নজর চারিদিকে, ....
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০০৬ সকাল ১০:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



