somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামীলীগ কার সাথে সংলাপে বসবে ? এই প্রশ্নের উত্তর কি ?

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে নিচ্ছি কোথাও হরতাল বা অবরোধ পালন হচ্ছে না। যা হচ্ছে, সেটা হলো ভয়তাল ও ভয়বোধ, পেট্রোল বোমার ভয়ে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে না ফলে যানবাহন নিয়মিত চলছে না, যাও কিছু পাবলিক যানবাহন চলাচল করছে ঠিক মত তাদের খরচা উঠিয়ে আনা খুব কষ্টকর হচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে যানবাহন চলাচন বন্ধ। চলমান নাশকত ও সহিংসতার মধ্যে দেশের প্রায় ১০ টা জেলায় নিজে চোখে দেখেছি এইসব দৃশ্য। পাবলিক রিএক্ট মোটেই আন্দোলন মুখি নয়। পাবলিক বাচতে চায়, তাই তারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘরে বসে ঝিমুচ্ছে।

বিএনপি-জামাতের দ্বাবী নিয়ে কিছুই বলার নেই। চলমান নাশকতা ও সহিংসতার সংকটের পথ উত্তরনের জন্য তথাকথিত সু-শীল একটা পক্ষ হতে সরকারের কাছে দ্বাবী উঠেছে সংলাপের জন্য। যতবার চেষ্টা করেছি তাদের কাছ থেকে একটা প্রশ্নের উত্তরের জন্য, কিন্তু কৌশলে তারা এড়িয়ে যাচ্ছে।

লক্ষ করেন ৫ জানুয়ারীর আগে দেশে কোন কোকটেল বোমাবাজি, পেট্রোল বোমাবাজি ছিল না, বেগম খালেদা জিয়া ৫ তারিখে গুলশানের অফিস থেকে চেষ্টা করেছিলেন সমাবেশে যোগ দিতে। কিন্তু সরকারের বাধার কারনে বেগম খালেদা জিয়া সমাবেশে যেতে পারেনি আরো অনেক কিছু যা সবারই জানা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। তারপরে রাগে ক্ষোভে বেগম খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে বক্তব্য দিতে শুরু করলেন, এক পর্যায়ে মিডিয়ার অতি উৎসাহী সাংবাদিকদের প্ররোচনায় অবরোধের ডাক দিলেন। ব্যস তারপরেই শুরু হয়ে গেল পেট্রোল বোমা আর ককটেল দিয়ে মানুষ হত্যা, বাসে আগুন ইত্যাদি।

এইবার আসুন ৫ তারিখে বেগম জিয়া কিসের জন্য অবরোধের ডাক দিলেন ? আমরা যতটুকু জানি ৫ জানুয়ারী বেগম খালেদা জিয়া মুলত সমাবেশ করার দ্বাবীতে অবরোধের ডাক দিয়েছিল।

তারপরে অবরোধ ও হরতাল চলাকালীন সময়ে বেশ কিছু মানুষ কে হত্যা করা হয়ে গেছে এক পর্যায়ে সরকার নমনীয় হয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে সমাবেশ করার ঘোষনা দিয়েছে।

বেগম জিয়া গুলশানের কার্যালয় থেকে বের হলেন না। অবরোধ প্রত্যাহার করেন নাই। অবরোধ চলতে থাকলো, সাথে হরতাল। সেই সাথে প্রতিদিন বাড়তে থাকলো লাশের সংখ্যা, আগ্নি দগ্ধ মানুষের সংখ্যা, জলে পুড়ে কংকাল হয়ে যাওয়া যানবাহনের সংখ্যা।

বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা গেল। সবাই ধারনা করেছিল কোকোর মৃত্যু হতে পারে নাশকতা ও সহিংসতা পরিহারের বেগম খালেদা জিয়ার এক্সিট পয়েন্ট। কিন্তু না, অবরোধ হরতাল, নাশকতা সহিংসতা প্রত্যাহার তো দুরের কথা আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী উনাকে সমবেদনা জানাতে গেলেন, বেগম খালেদা জিয়া ঘরের ছিটাকারী খুললেন না। ইনজেকশন নিয়ে ঘুমালেন।

যাই হোক, এটা বেগম জিয়ার পারসোনাল মেটার, উনি কিভাবে ঘুমাবেন বাজেগে থাকবেন সেটা নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।

কোকোর লাশ দাফন হলো, বেগম জিয়া বিবৃতি দিলেন, নাশকতা ও সহিগসতার সাথে বিএনপির আন্দোলনের কোন যোগসুত্রতা নেই। সরকার পরিকল্পিত ভাবে নাশকতা ও সহিংসতা চালিয়ে মুলত বিএনপির গনতান্ত্রিক আন্দোলন কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে। বিবৃতি তে আরো নতুন দ্বাবী যোগ হলো, সংলাপের ডাক দিলেই কেবল অবরোধ হরতাল প্রত্যাহার হবে। এরা আগে নয়, অবরোধ হরতাল চলবেই।

এর পরে চলতেই থাকলো লাশের সংখা বাড়ার তালিকা, চারদিকে প্রশ্ন কে করছে ? সোজা ভাবেই বিএনপির মুখপাত্র রিজভী, বিএনপির বুদ্ধিজীবি সমাজ টেলিভিশন টক শোয়ে বলছে এইসব নাশকতা ও সহিংসতা সরকারের এজেন্ট রা করছে। তো সরকার কে তো তার দ্বায় বদ্ধতার স্থান থেকে পাবলিকের কাছে জবাব দিতেই হবে। সরকার কি করলো ? ঘোষনা দিয়ে, শব্দ বোমার মাধ্যমে সহিংসতা ও নাশকতার বিরুদ্ধে শক্ত একটা অবস্থান নিল, পেট্রোল বোমা হাতে দেখা মাত্র অবস্থায় গুলির নির্দেশ দিয়ে।
আমরা কি দেখলাম ?

সরকারের এই ঘোষনায়ও বিএনপি তীব্র রিএক্ট দেখিয়েছে। এক বিবৃতিতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে রুহুল কবির রিজভি বলে উঠলো, আওয়ামীলীগ এজেন্টের মাধ্যমে নাশকতা ও সহিংসতা চালাচ্ছে, একই বিবৃতে পরের লাইন ছিল সরকার পরিকল্পিত ভাবে নাশকতা ও সহিংসতা বন্ধের চক্তান্ত করছে। অর্থ্যাত নাশকতার দ্বায় চাপিয়ে দেওয়া হলো আওয়ামীলীগের ঘাড়ে, আবার নাশকতা ও সহিংসতা বন্ধ করলেও সমস্যা।

সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারী তারিখে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন বললেন সরকারকে পদত্যাগ করে সংলাপের আয়োজন করতে হবে তারপরে অবরোধ প্রত্যাহার করার বিষয়ে উনারা চিন্তা করবেন। আর এই নাশকতা সহিংসতার সাথে বিএনপির কোন সম্পর্ক নাই। ক্লোজ এনাফ।


এবার বলছি মুল ভাষ্য ওকে ফাইন,

ধরেন তর্কের খাতিরে ধরেই নিলাম শেখ হাসিনার সরকার সংলাপ মেনে নিল, ঘোষনা দিল সংলাপ হবে

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে
বিএনপি বলছে নাশকতা-সহিংসতা চালাচ্ছে আওয়ামীলীগ, নাশকতা ও সহিংসতার দ্বায় বিএনপি-জামাতের নয়।

অপরদিকে ভিবিন্ন টক শো বা আলোচনায় বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবিরা সংলাপের বিকল্প নাই উল্লেখ করে বলছে সংলাপের ডাক দিন দেশ ভালো হয়ে যাবে, কিন্তু নাশকতা ও সহিংসতার দ্বায় কোন ভাবেই বিএনপির নয়।

তাইলে এই মুহুর্তে যারা সরকারের কাছে সংলাপের জন্য দ্বাবী জানাচ্ছে,
এখন তাদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছেঃ
সংলাপ কার সাথে হবে ?
নাশকতা ও সহিংসতাকারীর সাথে ?
নাকি বিএনপির সাথে ?

উত্তর যদি হয়, বিএনপির সাথে সংলাপে বসার ঘোষনা দিলেই নাশকতা বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে বিএনপি-জামাত নাশকতা ও সহিংসতার দ্বায় নিচ্ছে না কেন ? বিএনপি কেন বলছে না নাশকতা ও সহিংসতা আমরাই চালিয়েছিলাম, কেন বলছে না, যে আমরাই নিরিহ ৬০ জন মানুষ হত্যা করেছি সংলাপের জন্য।

আর সংলাপে বসার ঘোষনা দিলে যদি নাশকতা ও সহিংসতা বন্ধ হয় তাহলে বিএনপির সাথে সরকারের সংলাপের দরকার কি ? আন্দোলন তো দেখছি না, যা হচ্ছে তা হচ্ছে নাশকতা ও সহিংসতা। আর এইগুলো যারা করছে তারা হচ্ছে সন্ত্রাসী, জঙ্গী, চোরাগোপ্তা কারী। দেশের চলমান সমস্যার সমাধানের জন্য নাশকতা ও সহিংসতা কমানোর জন্য যদি সন্ত্রাসীদের দমন করেই সম্ভব হয় তাহলে খালেদা জিয়ার সাথে সংলাপ করে অযথা সময় নষ্ট করে লাভ কি ?
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×