পল্লী কবির নক্সী কাঁথার মাঠটি ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছি---- তারই ধারাবাহিকতায় আজ ৩য় কিস্তি দিলাম আপনাদের ভাল লাগলে পরের কিস্তি গুলো লিখবো-----
তিন
চন্দনের বিন্দু বিন্দু কাজলের ফেঁটা,
কালিয়া মেঘের আড়ে বিজলীর ছটা।
---- মুর্শিদা গান
ওই গাঁখানি কালো কালো, তারি হেলান দিয়ে,
ঘরখানি যে দাঁড়িয়ে হাসে ছোনের ছানি নিয়ে;
সেইখানি এক চাষীর মেয়ে নামটি তাহার সোনা,
সাজু বলেই ডাকে সবে, নাম নিতে যে গোনা।
লাল মোরগের পাখার মত ওড়ে তাহার শাড়ী,
ভোরের হাওয়া যায় যেন গো প্রভাতী মেঘ নাড়ি।
মুখখানি তার ঢলঢল ঢলেই যেত পড়ে,
রাঙা ঠোঁটর লাল বাঁধনে না রাখলে তার ধরে।
ফুল ঝর-ঝর জন্তি গাছে জড়িয়ে কেবা শাড়ী,
আদও করে রেখেছে আজ চাষীদেও ওই বাড়ী।
যে ফুল ফোটে সোনের খেতে, ফোটে কদম গাছে,
সকল ফুলের ঝলমল গা-ভরি তার নাচে।
কচি কচি হাত পা সাজুর, সোনায় সোনার খেলা,
তুলসী-তলায় প্রদীপ যেন জ্বলছে সাঁঝের বেলা।
গাঁদাফুলের রঙ দেখেছি, আর যে চাঁপার কলি,
চাষী মেয়ের রূপ দেখে আজ তাই কেবল বলি ?
রামধুকে না দেখিলে কি-ই বা ছিল ক্ষোভ,
পাটের বনের বউ-টুবাণী, নাইক দেখার লোভ।
দেখেছি এই চাষীর মেয়ের সহজ গেঁয়ো রূপ,
তুলসী-ফুলের মঞ্জরী কি দেব-দেউলের ধূপ !
দু-একখানা গয়না গায়না গায়ে, সোনার দেবালয়ে,
জ্বলছে সোনার পঞ্চ প্রদীপ কার বা পূজা বয়ে!
পড়শীরা কয়---- মেয়ে ত নয়, হলদে পাখির ছা,
ডানা পেলেই পালিয়ে যেত ছেড়ে তাদেও গাঁ।
এমন মেয়ে --- বাবা ত নাইরে , কেবল আছেন মা,
গাঁওবাসীরা তাই বলে তায় কম জানিত না।
তাহার মতন চেকন, নেওই, কে কাটিতে পারে,
নক্শী করা, পাকন পিঠায়, সবাই তারে হারে।
হাঁড়ির উপর চিত্র করা শিকেয় তোলা ফুল,
এই গাঁয়েতে তাহার মত নাইক সমতুল।
বিয়ের গানে ওরই সুরে সবারই সুর কাঁদে,
সাজু গাঁয়ের লক্ষী মেয়ে,--- বলে কি লোকে সাধে ?
সাজু গাঁয়ের লক্ষী মেয়ে,--- বলে কি লোকে সাধে ?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
অপরূপের সাথে হলো দেখা
আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন