
আজ ৪ঠা মার্চ ২০১৫ ইং-
১৯৭২ সালের এই দিনেই এক টাকার নোট প্রচলনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম নিজস্ব কাগজি মুদ্রা চালু হয়। বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত ছিল সেই নোট। এই নোট ছাপা হয় ইন্ডিয়ান সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেসে। পরে সুইজ্যারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ভারত, কোরিয়া, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশের নোট ছাপা হয়।
৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোটও চালু হয় ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ। এসব নোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত ছিল।


২ টাকার নোট চালু হয় ২৯ ডিসেম্বর ১৯৮৮ সালে। ১৯৭৬ সালের ১ মার্চ ৫০ টাকার নোট চালু করা হয়। আর একই বছর ১৫ ডিসেম্বর বাজারে ছাড়া হয় ৫০০ টাকার নোট।

২০ টাকার নোট প্রথম বাজারে আসে ১৯৭৯ সালের ২০ আগস্ট। আর ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই বাজারে আসে ১ হাজার টাকার নোট।


দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১ পয়সা, ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সার মুদ্রা বাজারে ছাড়া হয়। পরে পর্যায়ক্রমে ১ টাকা, ২ টাকা ও ৫ টাকার ধাতব মুদ্রাও ছাড়া হয়। বর্তমানে ৫, ১০, ২৫ ও ৫০ পয়সার মুদ্রার দেখা মেলে না বললেই চলে ।
টাকশাল ও টাকার ইতিহাস:
টাকা শব্দটি সংস্কৃত টঙ্ক শব্দ থেকে উদ্ভূত যার অর্থ রৌপ্যমুদ্রা। এক টাকার শতাংশ হচ্ছে পয়সা।
খ্রিস্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিশালাংশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজাদের রাজত্ব ছিল। তবে সে সময়ের মুদ্রা পাওয়া না যাওয়ায় তাদের টাকশাল সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না।
দ্বাদশ শতক থেকে ত্রয়োদশ শতক পর্যন্ত ব্রাহ্মণ ধর্মাবলম্বী সেনরাজারা বাংলাদেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে রাজত্ব করে। সেনযুগে পালযুগের মতো মুদ্রার পরিবর্তে কড়ির প্রচলন ছিল। ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজির সময় থেকে দেশে বিপুলসংখ্যক মুদ্রা প্রচলন হয়। সুলতানি আমলে বাংলাদেশ সম্পদশালী দেশ হিসেবে পরিচিতি পায়। সে সময়ের বাংলাদেশের বাগেরহাট এলাকার খলিফাতাবাদ টাকশাল, রাজশাহীর বারবাকাবাদ টাকশাল, সোনারগাঁওয়ের নিকটবর্তী মুয়াজ্জমাবাদ টাকশাল, ফখরুদ্দিন মুবারক শাহর রাজধানী সোনারগাঁওয়ের টাকশাল, চট্টগ্রাম টাকশালসহ প্রায় ৮০টি টাকশালের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
মুঘল আমলেও বাংলাদেশে টাকশালের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। মুঘল যুগের জাহাঙ্গীরনগর টাকশালে তৈরি মুদ্রার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। যার পাশাপাশি কাগুজে নোটেরও প্রচলন হয়। তবে তা আধুনিক মানের ছিল না।
স্বাধীন বাংলাদেশের একমাত্র ও আধুনিক টাকশালটি ১৯৮৯ সালে গাজীপুরে স্থাপিত হয় ।
টাকা জাদুঘর :
মিরপুর ২ নম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক টাকা জাদুঘর। প্রাচীন বাংলা থেকে এ সময়ের মুদ্রা ও ব্যাংক নোট স্থান পেয়েছে জাদুঘরে। এছাড়াও নানা দেশের মুদ্রা, নোট ও স্মারক মুদ্রাও রয়েছে।
২০১২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান টাকা জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। গত বছরের ৫ অক্টোবর এই জাদুঘর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
এ জাদুঘরের কিউরেটর ড. মো. রেজাউল করিম জানান, টাকা জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হলো প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে বর্তমানকাল পর্যন্ত যে সকল মুদ্রা ও কাগজী নোট বাংলাদেশে প্রচলিত ছিল এবং আছে; সেই সকল মুদ্রা ও নোট সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন, গবেষণা ও প্রকাশনা এবং এর মাধ্যমে মুদ্রার ইতিহাসকে তুলে ধরা।
এই জাদুঘর বিষয়ে না হয় আরেকদিন জানবো_
তথ্য ও ছবি সংগ্রহ : গুগল ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




