ভূতেরাও একা। নি:স্ব।
গভির রাতে ঘুমটা ভেঙে যায় প্রচন্ড আক্রোশ আর হতাশায়। ঘেমে একাকার শরীরটাকে কোনো রকম টেনে চুপচাপ বসে থাকলাম। নিজেকে সীমাহীন অসহায় মনে হলো। বুঝতে পারলাম, মানুষ বড় নি:স্ব। দু:স্বপ্ন দেখার সময় এলো বুঝি...। অবশ্য এরকম দু:স্বপ্ন মানুষ দেখে না। না দেখাই ভালো। আমি দেখলাম জীবনে এ-ই প্রথম।
দেখলাম, আমি মারা যাচ্ছি। ছটফট করতে থাকি ব্যকুল হয়ে। মৃত্যু যন্ত্রণা আমাকে তখনো ভাবায়নি। ভাবছিলাম, আমি মারা গেলে এতো এতো স্বপ্নের কি হবে? খুব চেষ্টা করলাম এ দু:স্বপ্ন থেকে জেগে উঠতে। পারলাম না। একেবারে শেষ সময়ে যখন বুঝতে পারলাম মৃত্যুটা অবধারিত, তখন চিৎকার করে যাকে ডাকতে থাকলাম, সে আর কেউ নয়। সে আমার মা। মা’কে এতো ভালোবাসি?
কখনো এ রাতের মতো এতোটা শূণ্যতা অনুভব করিনি।
মারা-ই যখন গেলাম তখন খুব হাস্যকর ঘটনা ঘটলো। মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে পৃথিবীর সব খারাপ ভাষা নিক্ষেপ করতে থাকলাম ঈশ্বরের প্রতি। পুরনো সব দেবতাদের বান নিক্ষেপের মতো। আমার সাধারণ জীবনে অসাধারণ কিছু স্বপ্নের মৃত্যু বা পতনের জন্য ঈশ্বরকে দায়ী করতে লাগলাম, প্রচন্ডরকম আক্রোশে অসাড় হয়ে থাকা শরীরটাকে টেনে তুলে নিলাম বিছানা থেকে। ঘেমে একাকার আমি বসে থাকলাম কিছুক্ষন। তারপর, বেসিনে গিয়ে মুখে পানি দিলাম। পানি খেলাম। খুউব একাকিত্ব পেয়ে বসলো তখনই। মানুষ নিদারুন একা। একা আর নি:স্ব।
ফোনটা নিলাম পিসি টেবিল থেকে। কি করবো বুঝতে পারছি না। এ মুহূর্তে দুজন মানুষকে ফোন দিতে ইচ্ছে করছে। একজনকে সম্ভবত ইহজীবনে আর সম্ভব না। বাকিজনকে ফোন দেয়া যেতে পারে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ইচ্ছেটা দমন করলাম। বেশি মায়া বাড়ানো ঠিক না। পিসি অন করে কিছুক্ষন ‘হাউজ অব ডেথ’ খেললাম। একে একে যখন ভূতদের গুলি করে মেরে যাচ্ছি তখন হঠাৎ মনে হলো- নাহ্ ভূতেরাও একা। নি:স্ব।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



