somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রারম্ভ ( পর্ব - ১ )

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ওয়ান, টু, থ্রি, ফোর বাঁ পা আগে , হাতে যেভাবে দেখিয়েছি ওয়েভ কর, এবার ডান পা আগে রিপিট সেম ওয়ান, টু, থ্রি, ফোর এন্ড টার্ন ব্যাক টু ফ্রন্ট! ও. কে? তিন্নি একটু পজ দিয়ে বলে এবারে লিরিক শুরু গলি মে মারে ফেরে, পাস আনে কো মেরে..... আর হ্যাঁ, অম্বরসরিয়া মুন্ডেভা...... গানটা ১৬বিট দিয়ে শুরু আমরা ৮টা বিট ছাড়ছি নাইনথ, নবম থেকে শুরু করছি। বোঝাতে পারলাম? ' ওরে, দারুণ বুঝিয়েছিস! এবার থাম! মামি এসে বোঝাবে নাহলে.... ' কথাগুলো বলতে বলতে ঘরে ঢোকে জিনিয়া। তবে সে আর কিছু বলার আগেই তিন্নি বলে ' আরে দিদিয়া তোর জন্যই তো এতো কান্ড! রাত ১ টায় নাচছি! ' নিধিও সাথে যোগ দেয় ' ঠিক বলেছিস তিন্নি! উফ! দিদিয়া একজন নন বেঙ্গলীকে কেনো বিয়ে করছিস? তাদের রিচুয়াল, সঙ্গীতে আমাদের কেনো নাচতে হবে? ' জিনিয়া হেসে এসে বলছি বলে কয়েকজন বান্ধবীকে নিয়ে সেঘর থেকে বেরিয়ে যায় । জিনিয়ার বিয়ে উপলক্ষে তার বড়ো ও ছোটো মামার মেয়েরা তিন্নি ও নিধি এবং সেই সাথে তারকিছু বান্ধবী এসেছে! সেরকম এক বান্ধবী মিতা । সেই ঘরে তার দুই বোন সহ বান্ধবী এই মিতা রয়ে যায় । এবারে সে বলে ওঠে ' ও আর বলেছে, তুই আর শুনেছিস! '

নিধি বলে জানি গো মিতাদি! পিসিমনি, জামাই হিসাবে বিজনেস ম্যাগনেটএর ছেলেকে পেয়ে একেবারে মুগ্ধ! যা বলছে তাই করছে! '

তিন্নি ' যাক বাদ দে! আমাদের পারফর্ম করতে বলেছে ট্রাই করবো ভালো করার! নিধি, অম্বর সরিয়াতে হাতের ওয়েভটা একটু ঠিক করে কর! তুই রুমালি রুটি বানানো দেখেছিস? রুটি বানাতে যেভাবে হাত ঘোরায় সেভাবে....... ' তার কথা শুনে বাকি দুজন হেসে উঠল! উফ, কী উদাহরণ!

জিনিয়া এবার ঘরে ঢুকে বলে মা আর বড় মামী ( তিন্নির মা) আসছে! বলতে বলতেই তাঁরা ঘরে ঢোকেন ও বলেন ' তোরা কি আজ রাত জাগবি? এই জিনিয়া তুই আলাদা ঘুমাবি! ' তিন্নি বলে ' সেই তো, দিদিয়ার তো স্প্যেশাল ব্যাপার! ' সাথে সাথে তার পিষি বলেন ' এবার তুমিও স্পেশাল হওয়ার জন্য রেডি হও ' তখন তার মা বলেন ' তোমার দাদা মেয়েকে যা স্পেশাল করে রেখেছে, তারজন্য পরে কতো কথা শুনতে হবে দেখো! সারাক্ষণ খালি বলবে শাড়ি পড়িস না মা, কেমন যেন বড় বড় লাগে! যেন উনি সারাজীবন মেয়েকে ছোটো করে রাখবেন! ' তিন্নি বিরক্তিভরা সুরে বলে ' আঃ মা, এই রাতে...... ' তখন পিসী বলেন ' আচ্ছা আমরা যাচ্ছি... '
নিধি বলে দিদিয়া জিজু পাঞ্জাবিতে কি গুডনাইট মেসেজ পাঠালো? মিতা হেসে বলে ' তেনু ম্যায় ( তোমায় আমি ) .... ' !

তাদের হাসাহাসির মধ্যে গম্ভীর কন্ঠে তিন্নি বলে ' দিদিয়া, কিগান কি জানে? '
জিনিয়ার আগেই নিধি বলে ' আবার কি গান রে? ' তিন্নি ' গান না নাম! '
মিতা - হুম নাম, কিগান মিত্র!
নিধি ' সে কে রে? ইশ আমাকে তোরা কতকিছু জানাস না! কিগান! নাম! ' বলেই সে হাসতে থাকে!
তিন্নি বলে ওঠে - কিগান একটা আইরিশ নেম! মানে nymph. '
জিনিয়া তার কথা শেষ না হতেই ঝংকার দিয়ে ওঠে ' বাহ, দেখ ও নামের ঠিকুজিকোষ্ঠী জানে। আমিও এতো জানতাম না! কিগান! ফালতু ছেলে একটা! ফিজিক্স অনার্স নিয়ে ড্রপ দিয়ে যাচ্ছে! নাটক নিয়ে যতো মাথাব্যাথা! '
তিন্নি গম্ভীর স্বরে বলে - 'দিদিয়া, তুই কিন্তু বলেছিলি যে তুই .... '
এবারেও জিনিয়া তিক্ষ্ণ কন্ঠে বলে ' হ্যাঁ, আমিই ও' কে প্রথম মেসেজ করি! ইংরাজিতে । তার উত্তর কি দিয়েছিল, শোন! জিনিয়া, তুমি দেখে স্পেলিং ভুল লিখেছ! সেন্টেনেসেও গন্ডোগোল! ভালোলাগার কথা, ভালোবাসার কথা, মাতৃ ভাষায় , বাংলায় কেনো লিখলে না? জানিস , যদিও আমি ভালোবাসার কথা স্পষ্ট করে বলিইনি! দ্য গ্রেট আঁতেল! '
মৃদু হাসির সাথে এবার মিতা বলে - তো ভালোবাসার উপর কবিতা থুড়ি পোয়েট্রি লিখে পাঠিয়েছিলি! এই আঁতেলকেই দশবার মেসেজ পাঠাতিস খেয়েছে কিনা জানতে! আর ওর ভাষাজ্ঞান ভালো! সেটা তুইও জানিস! তোকেও অনেক হেল্প করেছে
জিনিয়া - তারজন্য কৃতজ্ঞ! আর কি করবো?
মিতা - অন্তত অপমান করিস না!
জিনিয়া - তোরা কি বলতে চাস বলতো? আমি কি কোনো কমিটমেন্ট করেছিলাম নাকি?
মিতা - শব্দটাই হাস্যকর!
জিনিয়া - ও. কে! আমি টায়ার্ড শুতে গেলাম। তোদের কিছু লাগলে বলিস! গুড নাইট! '


নিধি ' সরি! মিতাদি! আমি দিদিয়ার হয়ে তোমার কাছে....
মিতা ' আরে আমি জিনিয়াকে ভালো করে জানি। আমি ওর ফ্রেন্ডএর থেকে বড়ো কথা আমাদের বাবাদের বন্ধুত্ব। তাই এসেছি। নাহলে.... কিগানের সাথে সম্পর্ক থাকতেই এটাকে জুটিয়েছে। এটা পজিটিভ হতেই কিগানকে হার্ট করা শুরু করেছে! অন্য কোনো ছেলে হলে দেখতিস কি করতো....
তিন্নি মৃদু স্বরে বলে ' মিতাদি , মানুষ এতো কি করে বদলায় বলো তো? '
মিতা হেসে বলে ' ধ্যেৎ বদলায় কোথায়? এরা প্রথমে বলে - আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ! পরে বলে - আই কান্ট লিভ উইথ ইউ! তাই এতো না, ছোট্ট একটা প্রিপোজিসন শুধু বদলায়! '
একথায় নিধি একটু হেসে ওঠে ! তারপর বলে ' অনেক হোলো!
চল এবার আমরা ঘুমাই!

দিদিয়ার হোটাস্যাপে একবারই দেখেছিল সে পিকটা! আলুথালু চুল। অযত্নের স্টাবল্ড বিয়ার্ড আর উদাসী দুটো চোখ! তিন্নিকে ঘুমাতে দেয় না! জাগিয়ে রাখে .........
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৩১
৩২টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×