
গত কয়েক মাস আগে উপরের এই ইমেজটি কোনো এক রাস্তার পাশ থেকে আমার মোবাইলের ফালতু ক্যামেরায় তুলেছিলাম। এটি একটি জুসের বিজ্ঞাপন। " যে জুস পান করিলে রক্ত চোষা হইয়া যায় রক্ত দাতা " বিজ্ঞাপনের মূল বিষয় বস্তু মূলত এটিই।
সত্যি সত্যিই যদি এমন একটি জুস পাওয়া যেতো যেটি খেলে পরে মানুষ রক্তদাতা হয়ে যায়, তবে আমি সৃস্টিকর্তার নিকট হাজারো শুকরিয়া আদায় করতাম।
আমাদের দেশে বছরে ৪ লক্ষ ইউনিট রক্ত দরকার হয় এর মধ্যে মাত্র ১লক্ষ ১৫ হাজার সংগ্রহ করা হয় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর মাধ্যমে। বাকী গুলো সংগ্রীহিত হয় পেশাদার রক্তদাতাদের কাছ থেকে যে রক্ত মান সম্পন্ন নয় এবং মারাত্মক ঝুঁকিপূর্নও বটে।
সংক্ষেপে বলি, ১৮ থেকে ৬০ বছররের মধ্যে যে কোনো সুস্হ্য ব্যক্তি রক্ত দান করতে পারেন। ৯০দিন পর পর আমাদের শরীরে নতুন রক্ত কোষ তৈরী হয়। রক্ত দিলে শরীরের উপকার ছাড়া ক্ষতি হয় না।
বিস্তারিত পড়ুন
তবে কেনো একটি সুঁইয়ের খোঁচার ভয়ে নিজেকে এই মহান উদ্যোগ থেকে গুটিয়ে রাখা কেনো?

উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে কোয়ান্টাম থেকে পাওয়া আমার আজীবন রক্তদাতার স্মারক। সেখানে তিন মাস মানে ৯০ দিন পর পর আমার ডাক পড়ে। ২০০৫ সাল থেকে আমি সেখানে নিয়মিত ডোনার। এস, এস, সি পরীক্ষার পর থেকে আমি যেখানেই সুযোগ পাই রক্ত দিয়ে আসছি। এ পর্যন্ত ২০ বারের মতো রক্ত দিয়েছি। ঢাকার বাইরে গিয়েও রক্ত দেবার অভিজ্ঞতা আমার আছে।
একটা মজার ঘটনা বলি, একবার কোনো এক ক্যাম্পেইনে রক্ত দিচ্ছি, রক্ত নেবার পর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করার সময় দেখলাম অনেকেই সন্ধিহান, আবার পরীক্ষা করলো, শেষ পর্যন্ত আমাকে বলল, ভাইয়া আপনি কি জানেন আপনার রক্তের গ্রুপ "এবি-" ? আমি বললাম আমি জানি। তারা অবাক হয়েছিলো একই কারনে যে তারা সবাই মেডিকেলের নতুন স্টুডেন্ট এবং এখন পর্যন্ত তারা "এবি-" ডোনার দেখেনি।
বাংলাদেশী "এবি-" ডোনারদের নিয়ে ফেসবুকে আমার একটি গ্রুপও আছে, AB Negatives in Bangladesh । আপনাদের পরিচিত কারও রক্তের গ্রুপ "এবি-" থাকলে অনুগ্রহ করে বলবেন এই গ্রুপে জয়েন করতে।
যে প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু করেছিলাম, আমাদের বিশুদ্ধ রক্তের খুবই দরকার, ছোট বেলায় সন্ধানীর একটা বিজ্ঞাপন প্রায়ই টিভিতে প্রচার হতো যেখানে ছোট্ট মেয়েটি বলছে, "আমার মায়েরে রক্ত দিব কে?" । এরকম হাজার হাজার রোগী রক্তের অভাবে হাহাকার করছে।
আপনার একটু সদিচ্ছাই পারে তাদের চোখের জল মুছতে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




