somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতীয় পণ্য এমনভাবে এদেশের বাজার দখল করে আছে মনে হয় এদেশ ভারতের একটা প্রদেশ।

১৯ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৯:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা ঠেকাতে একদিকে নেই সরকারী প্রক্রিয়া
অপরদিকে নেই আলিম সমাজেরও ভূমিকা
অথচ যুগপৎভাবে তা দরকার।

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।
ভারত নতুন করে ২২৪টি পণ্যের শুল্ক মুক্ত প্রবেশের অনুমতি চেয়েছে। বিশেষ করে তালিকা দেখলে দেখা যায় এর মধ্যে অনেক শিল্প আমাদের দেশে সম্ভাবনাময়। সরকারের অতিরিক্ত ভারত প্রীতির কারণে এভাবে চলতে থাকলে এক সময় দেখা যাবে আমরা আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হারিয়ে ভারতের প্রদেশে পরিণত হয়েছি। (নাঊযুবিল্লাহ)
বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশি দেশ ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি দিন দিন আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় নি¤œমানের পণ্যে সয়লাব হয়ে গেছে দেশের বাজার। ভারতের পক্ষ থেকে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করতে অবদান রাখার আশ্বাস দেয়া হলেও বিভিন্ন ধরনের অশুল্ক বাধার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি না কমে বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে আগামী তিন বছরের জন্য ভারত শুল্ক মুক্ত আরো ২২৪টি পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করার অনুমতি চেয়েছে। এই পন্য রফতানি হলে বাণিজ্য ঘাটতি ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া চোরাইপথে প্রতিদিনই বাংলাদেশে ঢুকছে হাজার হাজার টন ভারতীয় পণ্য। অর্থের হিসাবে এসব পণ্যের মূল্য হাজার হাজার কোটি ডলার। চোরাইপথে আসা এসব পণ্যের আর্থিক হিসাব ধরা হলে ঘাটতির পরিমাণ আরো বাড়বে। এদিকে অননুমোদিত পথে আমদানিকৃত পণ্যের একটা বড় অংশই মাদক বা নেশার সামগ্রী। ভারতের নিম্নমানের ও অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আগ্রাসন কমাতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে কথা বলে এলেও কার্যত কিছুই হয়নি।
এবারে রমযান শুরুর আগেই সারাদেশের মার্কেটগুলোতে ভারতীয় পণ্যে ভরে গেছে। চোরাচালানের ট্র্ানজিট পয়েন্ট শুধু চট্টগ্রামে এবার প্রায় হাজার কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য এসেছে। ভারতীয় পণ্যের প্রতিযোগিতায় দেশীয় পণ্য মার খাচ্ছে। ফলে লোকসানের হিসাব গুণতে হচ্ছে দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে। সারা বছর অপেক্ষায় থেকে ঈদের বাজার ধরতে আশায় বুক বেঁধে থাকে দেশীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মালিক এবং শ্রমিকরা। কিন্তু চলতি ঈদ মওসুমে ক্ষুদ্রশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সেই আশার গুড়ে বালি পড়েছে। ঈদ মওসুমে ব্যবসা করে যারা সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছিলো, সেসব শিল্প মালিকরা এখন লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। এসব কারণেই ঈদ মওসুমে ব্যস্ততা বাড়লেও মনে আনন্দ নেই চট্টগ্রামের শতাধিক বুটিকপল্লীর সদস্যদের।
চট্টগ্রামে চোরাকারবারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাসের পর মাস বিদেশী আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য নগরীতে নিয়ে আসলেও আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে তাদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। এ উৎসবকে টার্গেট করে রীতিমত প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে পাচারকারী সিন্ডিকেট। শাড়ি, থান কাপড়, জুতা, ব্যাগসহ নানা ধরনের পণ্য নিয়ে আসছে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন গুদামে। সেখান থেকে এ সব পণ্য নগরীর টেরী বাজার, নিউ মার্কেট, স্যানমার ওসানসিটি, মুন্নিপ্লাজা, রেয়াজউদ্দিন বাজারসহ বিভিন্ন অভিজাত মার্কেটে তোলা হচ্ছে। এসব পণ্য নিয়ে এসে অনেকে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে ইতোমধ্যে।
কুমিল্লা, লাকসাম, ফেনী, চৌদ্দগ্রাম, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, রামগড়সহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ঈদ ও উপলক্ষে ভারতীয় পণ্য বানের মতো বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্সসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তৎপরতার মাঝেও থেমে নেই তারা। যার ফলে নগরীর অধিকাংশ ঈদ বাজার ভরে গেছে চোরাচালান পণ্যে। বিক্রিও হচ্ছে দেদারছে।
শুধু চট্টগ্রাম নয় রাজধানীসহ সারা দেশের বিপণিবিতানগুলো ভারী হয়ে ওঠেছে ভারতীয় পণ্যে। ঈদকে সামনে রেখে বৈধ-অবৈধ উপায়ে আসা শাড়ি-থ্রি-পিস ও প্রসাধন সামগ্রিসহ ভারতীয় বিভিন্ন পণ্যে ভরেগেছে মার্কেটগুলো। এতে কঠিন প্রতিযোগিতায় পড়ে গেছে দেশীয় পণ্যের বাজার।
অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত বিদেশী পণ্য বর্জন করে দেশীয় পণ্য গ্রহণ করে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেছে অনেক দূর। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতকে তারা নিয়ে এসেছে অনেক সামনে। অথচ আমাদের দেশে দেখা যায় তার উল্টো চিত্র। ক্রেতা বিক্রেতা সবাই ঝুঁকে পড়ে বিদেশী পণ্যের দিকে। বিশেষ করে ঈদ আসলেই বাজার ভরে উঠে ভারতীয় পণ্যে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজধানীর বেশ কয়েকটি অভিজাত মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে এরই মধ্যে বিপণি বিতানগুলো ভরে উঠেছে ভারতীয় শাড়ি, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও কসমেটিক্স সামগ্রিসহ নানান ধরনের পণ্যে। ক্রেতাদের আকর্ষণ করার জন্য কোন কোন দোকানে আবার ঝুলতে দেখা গেছে, এসব পণ্যের নাম যুক্ত বড় বড় স্ট্রিকার্ড। দোকানিদের কাছ থেকে জানা গেছে এসব পণ্যের বেশ কিছু নামও। এদের মধ্যে রয়েছে শাকিরা, মধুচন্দ্রিমা, সানিয়া, আনারকলি, মাসাককলি ইত্যাদি নামের থ্রি-পিস। এছাড়া শাহরুখ খান, কারিনা নামের পাঞ্জাবি। রাজধানীর মৌচাক, নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে দেখা গেছে, দেদারসে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। তবে ভারতীয় পণ্যের মধ্যে বাজারে এখন শাড়ির প্রভাবটিই বেশি দেখা যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে ইন্ডিয়ান কাতান, ব্রা-শো, ব্যাঙ্গালোরু শিপন ইত্যাদি নামে এসব শাড়ি বাজারে পাওয়া যায়।
আর এসব কারণে দেশীয় পণ্যে বাজার কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে আমাদের দেশীয় তাত, জামদানি, মসলিন, সিল্ক ও বেনারসি শাড়ির মার্কেট হুমকির মধ্যে আছে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছে। আসলে বাংলাদেশ এখন ভারতেরই একটা বাজার হয়ে গেছে। অথচ ভারত নিজে আইন করে বিদেশি পণ্যের উপর বেশি করে শুল্ক ধার্য ও দেশীয় পণ্যের উপর কর ছাড় দিয়ে জনগণকে তাদের দেশীয় পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। যা বঙ্গবন্ধুর সময়ে আমাদের দেশেও করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা করা হচ্ছেনা। আমাদের যা আছে সেটা বস্ত্র কিংবা অন্য যে কোন খাত হোক তাই দিয়ে আমরা চাইলে আমাদের চাহিদাকে মিটাতে পারি। দেশীয় শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে আসতে পারি। বিদেশী পণ্যের উপর বেশি করে ট্যাক্স ধরে সেই সঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর থেকে কর হ্রাস করে আমাদের দেশীয় শিল্প খাতকে আবার চাঙ্গা করতে পারি। তবে এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সাধারণ মানুষের মানসিকতাকেও পরিবর্তন করতে হবে। দেশীয় পণ্য ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই ভারতসহ অন্যান্য বিদেশি পণ্যের প্রভাব কমবে। আমাদের দেশীয় উৎপাদিত পণ্য এখন অনেক মান সম্মত। তারপরেও পোশাক-আশাকই নয় ভারতীয় প্রসাধনী সামগ্রীরও বেশ প্রভাব পড়েছে বাজারে। যা আমাদের দেশীয় শিল্প বাজারকে ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে। আমাদের আমদানি নির্ভর করে তুলছে আগের চেয়ে অনেক বেশি করে। সরকার অতি শীঘ্রই এটা বন্ধের উদ্যোগ নিবে এটাই কাঙ্খিত ও বাঞ্ছিত। পাশাপাশি এক্ষেত্রে আলিম সমাজেরও বিরাট ভূমিকা রাখা দরকার। কারণ হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, ‘স্বদেশ মুহব্বত ঈমানের অঙ্গ।’ কাজেই বিদেশী জিনিস বাদ দিয়ে স্বদেশী পণ্য কিনে ধন্য হওয়াও ঈমানের অঙ্গ। এ ঈমানী বোধ জনজীবনের সর্বস্তরে জোরদারভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×