সূচনা লগ্নটা কেমন ছিল সেই কথা এখন আর ওভাবে মনে নেই। তবু হৃদয়ের অনেকটা জুড়ে পুরার্কীতির মতো টিকে আছে সেইসব স্মৃতি মেঘ। নাগরিক নি:সঙতা আর শহুরে বারান্দার রেলিঙে বসা ঘুম চুরি যাওয়া রাতে দু:খিনী বাতাস একরাশ বিষাদ নিয়ে আসে- যান্ত্রিক শহর থেকে আড়াল খুঁজে বাতাসের কানে চুপি চুপি বলে যায় সে দু:খবতী সময়ের গল্প।
সময়টা ছিলো তুমুল বালক বেলা। তখন বুঝে ওঠতে না পারলেও এখন বুঝা যায়, মন শুধু প্রজাপতির মতো ছুটে যেত দ্বিগিদিক। পরীকে দেখার ব্যর্থ আস্ফালন আর ঠাকুর মার ঝুলির রাক্ষসের মরণ কবচ সিন্ধুকের ঠিকানা- সব কিছুর আয়োজন ছিলো তার পূর্ণাঙ্গ বালক বেলায়। একটি স্মৃতিময় বালক বেলা কিংবা দুরন্ত কৈশোরের ডানপিঠে স্বভাব নিয়ে কোনো কালে তার আক্ষেপ ছিলো না, হবেও না কখনও। মফস্বলের মেঠোপথে দামাল ধূলোর ঝড় তুলে হেঁটে যাওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিন। এভাবে চলতে চলতে পাশের সিটে বসা মেয়েটির সাথে আলাপ, সখ্যতা। তারপর দু’জন একসিটে বসা, একসাথে খেলা। কুতকুত, দৌড়ঝাপ, ধাপ্পা আর কতো কতো খেলা। কতটুকুই আর মনে করা যায়! সীমাবদ্ধতার একটা ব্যাপার আছে তো। এভাবেই বেড়ে ওঠা সুদীপ্তর, পাশাপাশি প্রজ্ঞারও। বন্ধুত্বের পরিধি বেড়ে যায়, বাড়তে থাকে ঝগড়া, এমনকি মারামারি পর্যন্ত হতে থাকে নিয়মমাফিক। এসব কিছুর সাথে বেড়ে যায় তাদের বয়স। এভাবে সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে এখন তারা প্রাইমারি থেকে উচ্চ বিদ্যালয় পেরিয়ে মহাবিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। এতোদিনে কতশত, সহস্র ঘটনার জন্ম হয়েছে সময়ের তরে। পরিবর্তন এসেছে পৃথিবীর গতিপথে, মানুষের জীবনে। সবটুকুই তার মহাকালের কাছে সঞ্চিত আছে। আর এখনও টিকে আছে তাদের বন্ধুত্বতা। কোনো নাম কি তারা দিয়েছিল তাদের বন্ধুত্বের। নাকি শুধু পেনসিল দিয়ে দিয়েই কেটে যাচ্ছে বন্ধুত্ববেলা। ছোটবেলা থেকে পেনসিল দেয়া নেয়ার প্রথা তারা ভাঙতে পারেনি কলেজের শেষদিকে চলে এসেও। আর কদিন পর তো কলেজ জীবনের অবসান। হালখাতার আয়োজন শেষ হলেই তো শুরু হবে বর্ণাঢ্য বিশ্ববিদ্যালয় জীবন।
প্রজ্ঞা বামা-মা’র একমাত্র সন্তান। প্রজ্ঞার জন্মের পর থেকেই বাবা থাকতেন কানাডায়। মা আর প্রজ্ঞা থাকতো এদেশে। মা-মেয়ের ছোট্ট পরিসরে প্রবাসী বাবার আর্থিক প্রকটতা ব্যাপক তীব্রতর। আর সবকিছুতেই বাবা ছিলো প্রজ্ঞার জীবনে প্রচ্ছন্ন একজন মানুষ। বাবার অভাব ছাড়া জীবনে আর কোনো প্রকার অপ্রাপ্তি প্রজ্ঞার ছিলো না। অথচ এই একটা অভাবই প্রজ্ঞাকে তাড়িয়ে বেড়াতো অহর্ণিশ। একটা চাপা কষ্ট আর কোনো কোনো মধ্যরাতে চোখের পানি উপচে পড়তো সীমানা পেরিয়ে। কেউ তা জানুক, বুঝতে পারুক প্রজ্ঞা কেন যেন তা চাইতো কোনোভাবেই। প্রজ্ঞা তা লুকিয়ে রাখতো নিজের ভিতর অভিন্ন হয়ে থাকা নিজ থেকেও। কতোটুকু সফল হয়েছিলো সে কিংবা ব্যর্থতা ছিলো কতটুকু- সে কথা পুরোটাই অজানা।
অন্যদিকে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাপোসা গন্ডিতে সুদীপ্তর সুদীপ্ত হওয়ার গল্প। এটাও সত্য কোনো অপ্রাপ্তি বাড়ির আদরের ছোট ছেলে সুদীপ্তকে ছুঁতে পারেনি কোনোভাবে। তবুও কৈশোরের কিছু অনিশ্চয়তা অথবা বেড়ে ওঠার কিছু মনোজাগতিক পরিবর্তন হয়তো কোনো নি:সঙ্গতা জন্ম দিয়েছিলো তার ভিতর। ঘুড়ি ওড়ানো বিকেল বেলা, কাশফুলের বনে ছুটে বেড়ানো, নদীতীরে পড়ন্ত বিকেল, দলবদ্ধ ঝাঁপাতে ঝাঁপাতে নদীকে উন্মত্ত করা- সবই তো ছিলো। তবুও কোথাও যেন কিছু একটা ছিলো না। সুদীপ্ত এখনও জানে না সেদিন তার কি ছিলো না। না কি বুঝতে পেরেও আড়াল করেছে?
বয়সন্ধিক্ষণের দু’জন বালক-বালিকার কিছু চাপা আর্তনাদই তাদের আরও কাছে এনে দেয়। বেড়ে যায় পারষ্পরিক নির্ভরতা। সেই নির্ভরতা তারা বাঁচিয়ে রাখার আয়োজন করে স্বপ্ন দেখার অসীম সাহসে। সেকি অসীম সাহস! তখন তারা শেষ করে ফেলে কলেজ জীবন। আর শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে পথ হাঁটার সূচনা।
সে সময়টাতেই আসে একটি ঝড়। ঝড় বলা হয়তো উচিত হয় নি। তবুও তা ঝড় ছিল তাদের বিচারে। একজন যোগ্যতর মানুষ, আর পৃথিবীতে সফলভাবে গড়ে তোলার প্রয়োজনেই কানাডাতে প্রবাসী বাবা প্রজ্ঞা আর তার মার জন্য সব আয়োজন শেষ করে ফেলে। প্রজ্ঞার যেমন দেশ ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করেনি তেমনি শক্তভাবে কানাডা যাওয়ার আয়োজনকে উপেক্ষা করতেও পারেনি। কারণও ছিল অনেক। কতোদিন সে তার বাবাকে দেখেনি। কতোদিন পরম মমতায় বাবাকে জড়িয়ে ধরার উষ্ণতা থেকে বঞ্চিত সে। আর তাছাড়া তার মাঝবয়েসী মা, যিনি এতোদিন পর্যন্ত পায়নি স্বামীর সাথে ঐকান্তিক সময়ের প্রয়োজন। সব মিলিয়ে প্রজ্ঞা রাজি হয়ে যায় কানাডা যেতে। তার মনে ছিল একদিন সে ফিরে আসবে। তথ্যপ্রযুক্তির সভ্যতায় সুদীপ্তর সাথে যোগাযোগও হবে নিয়মিত। তবুও ভারাক্রান্ত মন আর কানাডা গমনের বাসনা ছাড়তে না পারার অযোগ্যতা নিয়ে প্রজ্ঞা একদিন চলে যায়।
সময়ের ছোবল অনেক কঠিন হলেও তা মেনে নিতে হয় সুদীপ্তকে। সময়ের জড়ো করা সিদ্ধান্তকে সে মেনে নেয়, মেনে নিতে হয় অবলীলায়। তাছাড়া আর কোনো পথই যে তার খোলা ছিল না। তাই হয়তো সে একটি ছেলে আর একটি মেয়ের আদলে কেনা পেনসিল জোড়া এখনও সযতেœ আগলে রেখেছে প্রজ্ঞার হাতে দিতে না পারার সুতীব্র অক্ষমতায়। ভাগ্যকে পুন: পুনশ্চ দোষারূপ করতে করতে সুদীপ্ত নিজেকে আবিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ নামক উচ্চ ফলনশীল বিষয়ে। বিশ্বায়নের এ যুগে বিবিএ ডিগ্রী বড্ড বেশিমাত্রায় উপযোগী। তবুও কেন যেন মাঝে মাঝে নিজেকে বিশ্বায়নের ক্রীতদাস মনে হয়। সুদীপ্ত ভাবে সফল হওয়ার বাসনা তাকে ক্রীতদাসে পরিণত করবে। তবুও জীবনের প্রয়োজনের কাছে নতজানু হওয়া মনে উকিঁ মারে একটি বিপ্লবের আশ্বাস। বদলে যাবে সমাজ, মুছে যাবে ভেদাভেদ মানুষে মানুষে।
এই এক মাসের মধ্যে প্রজ্ঞা কেমন ছিল, কানাডার কোথায় আছে- কোন শহর, কতো নম্বর গলি আর বাড়ি নম্বরই বা কতো?- কিছুই জানতো না সুদীপ্ত। তবুও দিন প্রতিদিন, বেলা অবেলায় প্রজ্ঞা ছিল সুদীপ্তর সাথে- ভাবনায়, কথোপকথনে। সে খবর আর কে রেখেছে? হয়তো শুধুই সুদীপ্ত।
এক মাসেরও বেশি কিছু সময় পর, সবকিছু ছাপিয়ে এলো প্রজ্ঞার ফোন। আবেগের সেকি উৎক্ষেপণ। যেন তারা ফোনের মধ্যে নেই- সেই কলেজের বটতলার নীচে একান্ত নির্জন সময়ে। যেন তারা কখনও পৃথক ছিলো না, হবেও না। এখন তারা বুঝতে পারে একে অপরের যুগের কাছে কতোটা প্রয়োজনীয় ছিলো। তবু সত্য তো এই কথা এক সময় শেষ হয়ে যায়। শেষ মানেই তো আর শেষ নয়, প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো সময় মোবাইলটি ইথার থেকে ছিনিয়ে নেয় প্রজ্ঞার কথা, উদ্বেলতা। মাঝে মাঝে প্রজ্ঞা সুদীপ্তকে বলতো- “সুদীপ্ত, তুমি কানাডা চলে আসো। আমরা একসাথে পড়ালেখা করি, তারপর একসাথে ফিরে যাব দেশে।” কিন্তু দেশ ছেড়ে যাওয়ার কথা কোনোভাবেই ভাবতে পারতো না সুদীপ্ত। ভুল করেও ভাবতে পারেনি।
এভাবেই চলতে থাকে তাদের কথামালা। সময়ের কোন মাপকাঠি নেই, যখন তখন। তারপর একদিন প্রজ্ঞা কেমন যেন ফ্যাকাসে গলায় ফোন করে সুদীপ্তকে। প্রজ্ঞা জানিয়ে দেয় একটি নির্মম সত্য- বাবা-মা’র মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেছে। সুদীপ্তর বুকের ভিতর ব্যাথার মতো মনে হয়, কেঁপেও ওঠে সে অজানা ভীতিতে। একটি আজন্ম নি:সঙ্গ মেয়ে পুনরায় নি:সঙ্গ হয়ে যায়। তাই প্রজ্ঞা আরও বেশি আবেগ মিশ্রিত গলায় বলে কানাডা চলে আসার কথা। সুদীপ্ত ঠিক বুঝে ওঠেনা কি করা উচিত আর কোনটাই বা অনুচিত।
একদিকে বিপ্লবী চিন্তাধারা অন্যদিকে ভালোবাসার প্রগাঢ় আহবান সিদ্ধান্তহীনতার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে ভীষণ নিমগ্ন সুদীপ্ত। কখনও কি মিছিলের শ্লোগাণে ভুল হয়েছিলো তার আবেগের তাড়নায়? বড্ড বেশি পোড়ায় তাকে সিদ্ধান্তের অবিন্যস্ততা। একদিন সে ঠিকই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে আর যাই হোক দেশ ছাড়া তার পক্ষে সম্ভব হবে না কিছুতেই, কোনো প্রলোভনেই। তারপর ... ... ...
তারও অনেক অনেক দিন পর যখন এদেশের আকাশে বিরাজ করছিল আষাঢ়ের কালো মেঘ, বেজে ওঠে সুদীপ্তর মোবাইল। প্রথম থেকেই প্রজ্ঞাকে কেমন যেন উদাসীন শোনাচ্ছিল সেদিন। কেমন যেন ঘোরের মধ্যে বসবাস করছিল প্রজ্ঞা। কিসের ঘোর? ধরা গলায় বারবার আকুতি যেন সুদীপ্ত এসে প্রজ্ঞাকে নিয়ে যায় স্বপ্নের দেশে। সুদীপ্ত দেশ ত্যাগের মিথ্যে আশ্বাস দিতে পারে না কোনোভাবেই। তবুও প্রজ্ঞার গলায় আকুতির অবিরাম প্রবাহ। প্রজ্ঞার চলমান গাড়ি থেকে ভেসে আসছিলো লোনলি শেফার্ড নামক সেই কষ্ট জাগানিয়া সুরের যান্ত্রিক কারুকাজ। সুরের মূর্চ্ছনায় ভিজে যায় দুটি মানবিক হৃদয়। তবুও যে যার অবস্থানে অনড়। সড়ে আসা হয় না এক চুলের দূরত্ব পর্যন্ত। বিষ্ণু দের কবিতার মতো দুর্ভোদ্য হয়ে ওঠে তাদের যুক্তি, কথামালা একে অপরের কাছে। একসময় ফোন লাইনে চিড় ধরলে শেষ হয় তাদের যান্ত্রিক আলাপন।
অস্থিরতা, অসহনীয়তার যাঁতাকলে জীবনের সীমারেখা হতে শেষ হয়ে যায় সুদীপ্তর আরও দুটি দিন। এর মধ্যে আকাশে নীল ভেসেছিল অনেক- যদিও আষাঢ়ে মেঘে আকাশ ঢাকা ছিল। চাঁদ তারা সবই দ্যুতি ছড়ায় যে যার আপন স্বকীয়তায়। যদিও চোখ মেলে দেখা হয় নি সুদীপ্তর। তৃতীয় দিনে মিছিলের মাঝেই বেজে ওঠে সুদীপ্তর ফোন। চেনা কোনো নম্বর না হলেও তার বুঝতে দেরি হয় না এটি কাঙ্খিত ফোন। তার মানেই ...
শ্লোগানিষ্ট সুদীপ্ত আরেক জনের মুখে শ্লোগাণ ধরিয়ে বিচ্যুত হয় মিছিল থেকে। কিন্তু ফোন রিসিভ করলে আশাভঙ্গ হয়, কারণ ফোনটি ছিলো ভরাট গলার কোনো এক মহিলার। জিঘাংসা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতেই আলাপচারিতায় জানা হয় ফোনটি প্রজ্ঞার মার। কিন্তু সুদীপ্ত কোনোভাবেই ভাবেনি প্রজ্ঞার মা তাকে শোনাবে এক নিষ্ঠুর সত্য। কি সেই সত্য? সেদিন, যেদিন প্রজ্ঞার সাথে শেষ কথা হয়েছিলো সুদীপ্তর। সেদিন, যেদিন আকাশে ছিলো বর্ষাবেলার নিগূঢ় কালো আষাঢ়ে মেঘ। সেদিন, যেদিন আকাশের চাঁদ-তারা প্রস্ফুটিত হয়েছিলো কিনা সে খবর কেউই রাখেনি। সেদিন, যেদিন প্রজ্ঞার গাড়িতে একটানা বেজে যাচ্ছিল কষ্ট জাগানিয়া ‘লোনলি শেফার্ড’ নামক সুর। আর সেদিন, যেদিন স্টিয়ারিং সিটে বসা নিয়ন্ত্রণ হারানো প্রজ্ঞা রোড অ্যাক্সিডেন্টে নির্বাসনে যায় পৃথিবী ছেড়ে।
সুদীপ্তর আকাশ টলতে থাকে। মনে হয় মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকবার এতটুকু জায়গার বড্ড বেশি অভাব। কোথায় পাবে সে এতটুকু আশ্রয়, এইটুকু নির্ভরতা। কাকে ভাগ দিবে তার যাপিত জীবনের অপাঙক্তেয় গদ্যকথা। মহাকাল কতটুকু নি:স্ব হলে একজন প্রজ্ঞাকে ফিরিয়ে নিতে হয় তার গহীন গহ্বরে?- মেলে না সেই প্রশ্নের জবাব। প্রজ্ঞার মৃত্যু অপরাধী করে দেয় সুদীপ্তকে। দু:খবতী সময়ের অপরাধবোধ তাকে তাড়া করে ফেরে ভীষণ রকম। এই সীমাহীন অপরাধবোধ নিয়ে কতদূর যাওয়া যায়- রেললাইন তখনও সমান্তরাল বয়ে যায় তার নিজস্ব সূত্রধরে। সমান্তরাল রেল লাইনের সামন্তরিক সূত্র চলতেই থাকে, চলতেই থাকবে।
এখন শুধু প্রতীক্ষা সময় কোথায় নিয়ে যায় ... সময়ের ধুলোর কতটুকু প্রলেপ পড়ে সম্পর্কের ওপর, স্মৃতির ওপর, যা আর কখনও পাওয়া হবে না সেই সব ফেলে আসা দিন, ক্ষণ, মুহুর্তের ওপর ...
তারপরেও যা হয়নি, যা হতে পারতো কিংবা দূর্বল মানুষের মতো নিয়তিকে মেনে নিয়ে বেঁচে থাকার সেকি অবিরাম প্রচেষ্টা এখন ...

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



