somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসম প্রেম অথবা বাসন্তী ছ্যাঁকা

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুনিয়াতে আমি যেসব যায়গা সবচেয়ে বেশী অপছন্দ করি, হাসপাতাল তার মধ্যে অন্যতম । যদিও বাবার চাকরীর কারনে গত ১২ বছর একটা হাসপাতাল এরিয়াতেই থাকি । কোন আত্মীয় বা বন্ধুর সাথে তো যাই ই না, নিজের অসুখের জন্যও আমার হাসপাতালে যেতে ভাল লাগে না । কিন্তু গতকাল কোনভাবেই বাচতে পারলাম না । ছোট ভাইয়ের অসুখ, বাবা যাইতে পারবে না । তাই আমাকেই যাইতে হল । হাসপাতালের অবস্থান ধোলাইখালে । আমি আবার ঢাকার জ্যামের হিসাব করে অনেক আগেই রওনা দিছি । ভাগ্যদেবী যে হঠাত্‍ আমার প্রতি এত সদয় হবে সেইটাতো আগে জানতাম না । রাস্তায় নামার পরে দেখি গাড়ির পিছে যেন জেট ইঞ্জিন লাগাইয়া দিছে । ফাঁকা রাস্তা আর পিছে জেট ইঞ্জিন, ড্রাইভারের আর কি লাগে !

ডাক্তার আসার দুইঘন্টা আগেই আমি হাসপাতালে উপস্থিত । নতুন টেনশন । এই দুইঘন্টা আমি কিভাবে খরচ করি ! আমার কোন গার্লফ্রেন্ডও নাই যে মোবাইলে লুতুপুতু মার্কা কথা বলে টাইম পাস করব । আবার ঐ এলাকায় এমন কোন পরিচিতও নাই যে আড্ডা দিব । ভাবলাম নিচে গিয়া দুইটা সুখটান মাইরা আসি ।

এত বড় হাসপাতালের সিড়ি দুইহাত চওড়া । আমি আবার দৈর্ঘ্য প্রস্থে একটু বেশী, তাই দুইহাত সিড়ির সোয়া একহাত আমার দখলে । উঠা নামায় তিনজনের সাথে ধাক্কা খাইছি আর প্রতিবারই লোকগুলা ঘাড় ঘুরিয়ে যেন এলিয়েন দেখছে এমনভাবে তাকাইছে আমার দিকে । মনে মনে এই সিড়ির কারিগর আর বিল্ডিং এর মালিকরে কয়েকটা চ-বর্গীয় গালি দিলাম ।

ভাগ্যদেবীর নজর কালকে আমার উপর ভালভাবেই পড়ছিল । সিড়িতে দেখলাম দুইটা মেয়ে, বসন্তের শাড়ী পড়া আর বেসম্বভ রকমের সুন্দর সাথে অসাম টাইপের .......... । ( ;) ) আমি নিচে নামতেছি, তারা উপরে উঠতেছে । দুই জোড়া চোখ আমার উপর, আর আমার চোখ এলোপাথারি ঘুরতেছে । তাদের দিকে তাকাইতে পারতেছি না । তবে এইবার চিপা সিড়ির কারিগরকে আগে দেওয়া সকল গালি উইথড্রো করে কয়েকবার ধন্যবাদ দিলাম । কারণ ? বেসম্বভ সুন্দর টু দি পাওয়ার ফোরের সাথে হালকা একটা ধাক্কা যে খাইছিলাম । ( :!> )

সুখটান শেষে তিন তলায় উঠছি । দেখি যে সেই দুই মেয়ে আমার ছোট ভাইয়ের পাশে বসা । আহা ! কপাল আমার এত ভালো ! আমিও চুপচাপ আরেক সাইডে বসছি । তারা আমার ভাইয়ের সাথে কথা বলতেছে, আমি গম্ভীর মুখে মোবাইল টেপার ভান করে তাদের কথা শুনতেছি । কী সুমধুর কন্ঠস্বর ! যাক দুই ঘন্টা সময় ভালই কাটবে । একটু পরপর আড়চোখে তাদের দিকে তাকাই, তারাও আমার দিকে তাকায় । ছয় চোখের মিলনে রোমান্টিক পরিবেশ । হঠাত্‍ শুনি একজন আমাকে ডাক দিল । ভাগ্যদেবী ! তুমি এতদিন কোথায় ছিলে ? ( :(( )

নামধাম পরিচয় শেষে জানলাম তারাও একই ডাক্তারের কাছেই আসছে । উতলা মন কি করি এখন ! কথা খুঁজে পাইনা । ঝোপ বুঝে কোঁপ মারলাম, 'শাড়ীতে আপনাদেরকে অনেক সুন্দর লাগতেছে । তবে কপালে একটা টিপ থাকলে আরও সুন্দর লাগত ।' ( ;) ) দুইজনেই দেখলাম একটু লজ্জা পাইল । আরও কিছুক্ষণ এমন রোমান্টিক কথা বলার পর বরফ গলছে । চারিদিকে খালি রোমান্টিকতা । একঘন্টা পাস করছি । তবে মেয়ে জাতি বাচাল, একবার শুরু করলে থামতে চায় না । থাক, সুন্দরীদের দোষ ধরতে হয় না । তাদের সবকিছুই সুন্দর । শুরুটা আমি করছি, শেষ করাটা তাদের হাতে । শেষ না করুক, আমার আপত্তি নাই । অলরেডী আপনি থেকে তুমিতে নাইমা গেছি । তবে ছোট ভাই যেন একটু বিরক্ত । মোবাইল নাম্বার চাইব কিনা ভাবতেছি, এর মধ্যে একজন নিজ থেকেই আমার নম্বর চাইল । ওরেএএ ! এতো দেখি মেঘ না চাইতেই জল । প্রেম বুঝি হয়েই গেল । যাক এইবারের ভ্যালেন্টাইনে আমিও লুতুপুতু মার্কা ষ্ট্যাটাস দিব । কোলবালিশ এর দিন শেষ । ( ;) ) তবে ভাবতেছি কোনজনেরে প্রপোজ করব । এরমধ্যেই একজন জিজ্ঞেস করল, 'আচ্ছা তুমি কিসে পড় ?' আমারও কনফিডেন্ট উত্তর, 'এইবার অনার্স ফার্ষ্ট ইয়ারে, তোমরা ?' 'তাই নাকি ? আমরাতো তাইলে তোমার সিনিয়র । আমরা এইবার সেকেন্ড ইয়ারে ।' ( :(( :(( :(( :(( :(( )

হায় ভাগ্যদেবী ! এই ছিল তোমার মনে ? এখন আমাকে কে দেবে আশা, কে দেবে ভরসা ? গত একঘন্টার সব স্বপ্ন এক কথাতেই ধূলিসাত্‍ হয়ে গেল । ধরণী তুমি দ্বিধা হও, এই মুখ আমি কই লুকাই!

গত ভ্যালেন্টাইনে ষ্ট্যাটাস দিছিলাম "সবার আছে গার্লফ্রেন্ড, আমার আছে কোলবালিশ । আজকে সারাদিন তারে বুকে নিয়া ঘুমাব ।" আজকে সেই কোলবালিশও ছোট ভাই দখল করে নিছে । নিষ্ঠুর এ পৃথিবীতে আমার জন্য কিছুই নাই । ( :(( :(( )
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৪৯
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×