somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছ্যাঁকের প্রকারভেদসমূহ এবং ছ্যাঁক পরবর্তী ইফেক্টসমূহB-););):P:P

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টিভিতে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানীর এডে “বেস্ট ফ্রেন্ড” কিংবা “ইশপেশাল ফ্রেন্ড” অফার দেখে কিংবা মোবাইল কোম্পানীগুলোর চরম আকর্ষনীয় “বান্ডিল অফার” দেখে অথবা রাস্তাঘাটে লাটিমের মত ঘূর্নায়মান কপোত-কপোতীদের দেখে এ কথা নিশ্চিন্তভাবে বলা যায় ডিজিটাল যুগ হল প্রেমের যুগ। তাছাড়া চারপাশে একটু সুগভীর মনযোগ দিলে দেখা যাবে “একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি” অফার। আপনি প্রেম করবেন আর প্রেমের সাথে কিছু ফ্রি পাবেন না তা হবে না!B-)B-) আপনি নেন বা নেন সেটা কোন ব্যাপার না! তবে প্রেমের সাথে আপনি অবশ্যই ছ্যাঁক ফ্রি পাবেন। না নিতে চাইলেও আপনাকে জোড় করে দেওয়া হবে! আর যারা পাবেন না তাঁরা অতি অবশ্যই গুটিকয়েক সৌভাগ্যবানের মধ্যে পড়েন। অনেকটা লটারী সিস্টেমের মত লাকী মানুষ! বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে ছ্যাঁক যে শুধু প্রেমের সাথে ফ্রি পাবেন তা না! শীতকালে বরফের সাথে, সিগারেট খেলে ধোঁয়ার সাথে, পরীক্ষা দিলে স্যারের হাতের কাছে ছ্যাঁক আপনি পেতেই পারেন!:|:| এবারে আসুন দেখে নিই এযুগের ছেলেদের প্রেমের সাথে ফ্রি হিসেবে প্রাপ্ত ছ্যাঁকের প্রকারভেদ সমূহ।


সেলিব্রেটি ছ্যাঁকঃ এটা সাধারণ হিসেবে ছ্যাঁকের মধ্যে পড়ে না। তবে ইহাও এক প্রকার ছ্যাঁক! লুল ভাই-ব্রাদাররা সাধারণত মেগান ফক্স, মোনালিসা, রাতের রাণী সুহানা অথবা অন্যান্য আগুন সুন্দরী সেলিব্রেটি মডেলদের প্রেমে পড়ে যান! বিশেষ ভাবে মনে রাখবেন উহাদের প্রেমে পড়া মানেই ছ্যাঁক খাওয়া! তবে এই ছ্যাঁক কোন উষ্ণ ছ্যাঁক নহে। এই ছ্যাঁক পানির মতই তরল। এই ধরণের ছ্যাঁক যারা খান তারা সাধরণত একটার পর একটা সেলিব্রেটি মডেলদের প্রেমে পড়তে থাকেন! :P:P


প্রথম দর্শনে ছ্যাঁকঃ রাস্তা ঘাটে কিংবা মার্কেটে বিভিন্ন আগুন সুন্দরী মেয়ে দেখলেই প্রেমে পড়ে যাওয়া এ যুগের লুল ভাইয়াদের কমন স্বভাব! পহেলা দর্শনে এই সব ভাইয়ারা চিন্তা করতে থাকেন কিভাবে আপুকে প্রপোজ করবেন, গার্লফ্রেন্ড হলে তারা ওই সুন্দরী আপুকে নিয়ে কোথায় কোথায় ঘুরবেন কিংবা বিয়ের পর হানিমুনটা কোথায় করবেন।;);) তাদের সকল চিন্তার ইতি ঘটে যখন ওই সুন্দরী আপুর পাশে আপুর পেয়ারের বয়ফ্রেন্ড এসে হাজির হন!:|:| অতঃপর আপুকে নিয়া নানা রুমান্টিক রুমান্টিক কল্পনা করা তথা সামান্য ছ্যাঁক খাওয়া ভাইয়ারা বাসায় এসে তাহসান ভাইয়ের “আলো” গানখানা শুনতে থাকেন এবং ভাবেন গানখানা কেবল মাত্র তাদের জন্যই!:|


ফেসবুকে ছ্যাঁকঃ এই যুগের ছেলেপেলেরা ফেসবুককে তাদের জীবনের অপর নাম বানিয়ে ফেলেছে! এখন এ কথা অনস্বীকার্য যে জীবনের অপর নাম ফেসবুক! আর এই ফেসবুকে এসে প্রেমে পড়া এখন একটা কমন ব্যাপার। কথিত আছে, গার্লফ্রেন্ড যা চায় সবই দেওয়া যাবে তবে ফেসবুকের পাসোয়ার্ড দেওয়া যাবে না!B-)B-) যা হোক, ফেসবুকে ম্যাসেজিং করতে করতে কিভাবে যেন ভাইয়ারা অচেনা মেয়েদেরও প্রেমে পড়ে যান। এ পর্যন্ত কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হল যখন কিছুদিন পর ওই সব অচেনা মেয়েদের প্রপোজ করেন এবং অচেনা তরুণীরা ভাইয়াদের প্রস্তাব সসম্মানে নাকোচ করে দেন!:|:| অতঃপর ভাইয়ারা “চলে গেছ তাতে কি” গানখানা শুনতে থাকেন এবং নতুন উদ্যমে ছ্যাঁক খাওয়ার জন্য রেডি হন!;);)


মোবাইল ছ্যাঁকঃ এ যুগে মোবাইল ফোনের সস্তা কলরেটের কারণে যুবক সম্প্রদায় গণহারে তরুনীদের সাথে মোবাইলে গপ-শপ করতে থাকেন! তরুনীদের মধ্যে কেউ কেউ ভাইয়াদের সামনাসামনি না দেখেই ভাইয়াদের প্রেমে দিওয়ানা হয়ে যান। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের সামনাসামনি দেখা হলে একজন অন্যজনকে পছন্দ করেন না! কাজেই অবধারিত ফল “ব্রেক আপ”!:|:| অতঃপর ভাইয়ারা নতুন উদ্যমে অন্য মেয়েদের সাথে ফোনে গল্প করতে থাকেন! তবে যতক্ষণ না পান ততক্ষণ তাদের সঙ্গী হয় অর্থহীনের “রাত কাটে নির্ঘুম” গানখানা! :P:P


প্রপোজে ছ্যাঁকঃ কার্যত ইহাই ছ্যাঁকের প্রথম ধাপ! এ ধরণের ছ্যাঁকের ক্ষেত্রে ভাইয়ারা অনেক রং-রস মিশিয়ে আপুদের প্রেম প্রস্তাব করেন এবং আপুরা অত্যন্ত ধীর সুস্থে প্রস্তাব বয়কট করে দেন!/:):| যেসব ভাইয়ারা প্রচন্ড ভালবাসেন, সাধারণত তারাই প্রচন্ড ছ্যাঁকটা খান!! সম্প্রতি আমার এধরনের ছ্যাঁক খাওয়ার পরম সৌভাগ্য হয়েছে!:|:| সে গল্প অন্যদিন বলব! এ ধরণের ছ্যাঁক খাওয়ার পর অন্য ভাইয়ারা কোন গান শুনেন তা আমি জানি না তবে আমি ক্রমাগত সোলসের “আমি ভুলে যাই তুমি আমার নও” শুনছি! :|


প্রেমের মাঝে ছ্যাঁকঃ এটা হল আসল ছ্যাঁক! গার্লফ্রেন্ড তার বয়ফ্রেন্ডকে প্রচন্ড ভালবাসে, বয়ফ্রেন্ডও তার গার্লফ্রেন্ডকে প্রচন্ড ভালবাসে! কিন্তু হঠাত করে কন্যা বলল তার বাবা তার বিয়ে ঠিক করেছে! সেইক্ষেত্রে তার বয়ফ্রেন্ড যেই ছ্যাঁক খায় তা সাধারণত রিখটার স্কেলে পরিমাপ করা যায় না!:|:| প্রচন্ড ভালবাসা থাকলে এ সময় বয়ফ্রেন্ড অনেকটা দেবদাস হয়ে যায়। সান্তনা একটাই এটা ডিজিটাল যুগ!;);) এ যুগে এত্ত এত্ত অপশন থাকার কারণে আত্মহত্যার মত নিকৃষ্ট চিন্তা ভাবনা করে না! তবে অনেক ভাইয়াকে মাদকে আসক্ত হতে দেখা যায়। প্রায় সময়ই ছ্যাঁক খাওয়ার পর ভাইয়ারা মন মরা হয়ে বহুদিন পড়ে থাকে। বেশিরভাগ সময়ই ভাইয়ারা জগতটাকে “পিকুলিয়ার” বলে ধরে নেয়! পরবর্তী গার্লফ্রেন্ড না আসা পর্যন্ত অথবা বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা চলতেই থাকে! এসময় ভাইয়াদের একমাত্র সঙ্গী হয় আর্টসেলের “নোনা স্বপ্নে গড়া” গানটি।:|


আগুন ছ্যাঁকঃ এই ছ্যাঁকটা সাধারণত আসে ব্রেক আপ হওয়ার পরে! এমনেতেই রিলেশন ব্রেক আপ হওয়ার পর ভাইয়ারা চরম আপসেট হয়ে পড়েন। তখন যদি দেখেন তার এক্স গার্লফ্রেন্ড নতুন একজন হ্যান্ডসাম ছেলের হাত ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে- জিনিসটা তখন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার চেয়েও জঘন্য মনে হয়।:|:| বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ সময় প্রাপ্ত ছ্যাঁককে আগুনের চেয়ে বেশি গরম বলে মনে হয়! এসময় সঙ্গী হয় আমাদের তাহসান ভাইয়ের “ঈর্ষা” গানখানা!!


হারিকেন ছ্যাঁকঃ এটা সবচেয়ে তীব্র ছ্যাঁক! এর অপর নাম ডিভোর্স!:-/:-* সাধারণত বিয়ের পর তুমুল ঝগড়া ঝাটির মাধ্যমে এ ছ্যাঁকের প্রাপ্তি ঘটে। বিয়ের যতদিন পর ছ্যাঁক প্রাপ্তি ঘটে তথা যতদিন পর ডিভোর্স হয় হারিকেনের এফেক্ট তত বৃদ্ধি পায়! সাধারণত এ ধরণের ছ্যাঁক প্রাপ্তির পর গান শোনার কোন মুড থাকে না! :|:|





এ ছাড়া আরও অনেক ধরণের ছ্যাঁক এ যুগে বিদ্যমান। তবে ছ্যাঁক খাওয়ার পর অধিকাংশ লোক যা করে তা হচ্ছে কবিতা লিখে! কাজেই বলিতেই হয়,

ছ্যাঁক থেকে যদি ভাল কিছু হয় তবে ছ্যাঁকই ভাল!:P;);)


ছ্যাঁক খাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি যা করা হয় তা হচ্ছে গান শোনা! গান সব সময়ই শোনা হয়, তবে ছ্যাঁক খাওয়ার পর গানের লিরিক্সগুলো ভাল মত শোনা হয় এবং ছ্যাঁক খাওয়া ব্যাক্তিবর্গ লিরিক্সগুলোকে তাদের নিজেদের জন্যই বলে ধরে নেয়! ছ্যাঁক খাওয়ার পরে সবচেয়ে বেশি শোনা হয় সাধারণত আর্টসেলের "তোমরা কেউ কি দিতে পার প্রেমিকার ভালবাসা" গানখানা। ;);):P
২১টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×