somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিরোধপূর্ণ দ্বীপপুঞ্জঃ স্প্রাটলি আইল্যান্ডস

১৭ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীতে বিরোধপূর্ণ জায়গার কোনো শেষ নেই। এই বিরোধপূর্ণ জায়গার দাবি থেকে হিংসা-দ্বেষ হতে শুরু করে যুদ্ধ-বিগ্রহ কিছুই বাদ যায়না। আজকের পর্বে এই রকম আরেকটি বিরোধপূর্ণ দ্বীপের কথা জানা যাক!


দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জটি দুইটি দেশের মধ্যে নয়, ছয়টি দেশের মধ্যে বিরোধের উৎস! মাত্র ৫ কি.মি. এর চেয়েও কম ভূখন্ড নিয়ে গঠিত স্প্রাটলি আইল্যান্ডস (Spratly Islands )! কিন্তু এই আগ্নেয় দ্বীপপুঞ্জ সমুদ্র বক্ষে ৪,১০,০০০ বর্গ কি.মি.ব্যাপী প্রসারিত। অন্তর্গত দ্বীপ ও কোরাল রিফ এর সংখ্যা একশত এর বেশি ।



বিরোধঃ
এই দ্বীপপুঞ্জগুলোতে কোনো কালেই কোনো আদিবাসী বসবাস করেনি। তাই বলে দাবির ক্ষেত্রে কেউই পিছিয়ে নেই।

সমগ্র দ্বীপপুঞ্জের দাবিদার হলোঃ
১.চীন (পিপলস রিপাব্লিক অব চায়না)
২.তাইওয়ান(রিপাব্লিক অব চায়না)
৩.ভিয়েতনাম
আর আংশিক দাবিদার'রা হলোঃ
৪.মালয়েশিয়া
৫.ফিলিপাইন
আর এক্সক্লুসিভ ইকোনোমিক জোনের দাবিদারঃ
৬.ব্রুনেই!

চীনের দাবির মূল যুক্তি হচ্ছে প্রাচীন আমল থেকেই চৈনিক মানচিত্রগুলোতে এই দ্বীপপুঞ্জগুলো দেখানো আছে। Wanli Shitang নামে দেখানো দ্বীপপুঞ্জগুলোই বর্তমান কালের স্প্রাটলি আইল্যান্ডস । আর যারা পিপলস রিপাব্লিক অব চায়না এবং রিপাব্লিক অব চায়না এই দুইয়ের ইতিহাস জানেন, তারা ইতোমধ্যেই বুঝে ফেলেছেন চীন কোনো ভূখন্ডে নিজেদের মালিকানা দাবি করলে, সেটা দাবি করা তাইওয়ানের জন্য ফরয হয়ে যায়!

সমস্যা সৃষ্টি হলো ভিয়েতনামকে নিয়ে, কারণ ১৭ ও ১৮ শতকের ভিয়েতনামিজ মানচিত্রগুলোতে এই দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দেখানো হয়েছে ভিয়েতনামকেই। আর চীনের মানচিত্রের ব্যাপারে তাহলে কি হলো? চীনের তৈরি করা মানচিত্রে যা দেখানো হবে, তার সবই যে চীনের তা কে বলেছে? ঐ মানচিত্রে চীন এবং তার আশেপাশের জানা ভূখন্ডের চিত্রায়ন করা হয়েছে। আরো আছে, ঐ মানচিত্রে যে সাগরে Wanli Shitang অবস্থিত, তার নাম দেওয়া ছিল Sea of Jiaozhi, আর উত্তর ভিয়েতনামের পূর্বের নাম ছিল ঐটি। তাহলে ভিয়েতনাম নিজেদেরকে দাবিদার বলতেই পারে!একইভাবে অন্যদের দাবির পক্ষেও নানা রকম যুক্তি-তর্ক আছে।

কথা হলো কেন এই দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে টানাটানি? ১৯৬৮ সালে চীনা সরকারের করা এক মূল্যায়নে জানা গেছে, তেল এবং গ্যাসের বিশাল রিজার্ভ এই দ্বীপপুঞ্জ, এতোটাই বেশি যে তা কুয়েতকেও হার মানাবে! এর পরে ১৯৭৬ সালে ফিলিপাইনতো তেল আবিষ্কার করে এর প্রমাণ দিয়ে দিলো।

১৯৮৮ সালে এই দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে বিরোধে চীন ও ভিয়েতনামের মধ্যে এক যুদ্ধে অনেকগুলো ভিয়েতনামিজ নৌযান ডুবে যায় ও অনেক সৈন্য হতাহত যায়।


বর্তমান অবস্থাঃ
এই দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড় দ্বীপ ইতু আবা (Itu Aba ) রয়েছে তাইওয়ানের দখলে। আর স্প্রাটলি আইল্যান্ড(দ্বীপপুঞ্জের নামেই দ্বীপটির নাম) নামক চতুর্থ বড় দ্বীপটি রয়েছে ভিয়েতনামের অধীনে। বর্তমানে ৪৫ টি দ্বীপ চীন, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন এর সামরিক দখলে আছে। বাকিগুলোতে এখনো সামরিক উপায়ে দখলদারিত্ব কায়েম হয়নি। ২০০৫ সালে চীন,ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের সরকারি তেল কোম্পানিগুলো স্প্রাটলি আইল্যান্ডস এ সিসমিক জরিপ চালানোর জন্য এক যৌথ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এর মধ্যেও দাবি পাল্টা দাবি অব্যাহত আছে। ২০০৯ সালেই মালিকানা সংক্রান্ত অনেকগুলো দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।


আগের পর্বঃ বিরোধপূর্ণ দ্বীপপুঞ্জঃ কিউরিল আইল্যান্ডস

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১১:২১
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×