somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়ে সতীত্ব প্রেম বনাম যৌনতা

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমাজে বিবাহের মতো একটা ভৌত ধারনার প্রচলন না থাকলে হয়তো আমরা পেতাম অন্যান্য প্রাণীদের মতো বিশ্রী যৌন স্বাধীনতা । আজকাল যৌনতা পন্যবাজারে ট্রামকার্ডরুপে ব্যাবহৃত হয় । কেউ নিজেকে স্বাধীনভেবে যদি যার তার সাথে যৌন সম্পর্ক গড়ার অধীকার দাবি করে সেখানে আমার মন্তব্য নেই তবে কেউ যদি নিজেকে পন্য মনে করে বা পন্য হিসেবে উপস্থাপন করে বা নিজের পন্যত্বের স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হয় তবে সেটা সত্যিই দুঃখজনক । সমাজচোখের একটা সমস্যা আছে , একটা ছেলে হাজারোবার সেক্স করলেও তাকে তেমন সামাজিক সমালচনার মুখোমখি হতে হয়না , এমনকি ধর্ষকরাও পার পেয়ে যায় সমাজের নাকের ডগা দিয়ে । (কিছু উঠতি ছেলেপেলে তাদের হিরোও মনে করে !) কিন্তু মেয়েদের দুচারবার 'লিটনের ফ্লাটে' বা 'বোট্যানিক্যাল গার্ডেনে'র মতো কোনো একটা যায়গায় যাওয়ার খবর ফাস হলেই সে সমাজের 'কলংক' । এমনকি সম্পূর্ণ নির্দোষ ধর্ষিতাকেও মাঝে মাঝে দোড়ড়া ত খেতেই হয়, এর চেয়ে বড় শাস্তি তাকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয় ।
ছেলেদের দুচারবার (পড়ুন শতবার) 'ফস্টিনস্টি' করা যদি লঘু অপরাধ হয় তবে তাদের সেই 'ফস্টিনস্টি'র সঙ্গিনীরা ক্যানো (এমনকি সেই সঙ্গীর চোখেও) বাজে মেয়ে হিসেবে বিবেচিত ?
অতঃপর সতীত্ব, সত্‍ এবং সতীত্বের মধ্যে আদৌ কোন সম্পর্ক আছে কিনা, এটা একটা উচ্চতর গবেষনার বিষয় হতে পারে । ছেলেরা শতবার সেক্স করার পরও তাদের 'সততা'র কোনো আংশিক ক্ষতিও হয় না, অথচ একবার সেক্স করার খবর প্রকাশ পেলেই মেয়ের 'সতীত্ব' নষ্ট হয়ে যায় ! প্রকাশ পাওয়া বলছি, কারন প্রকাশ না পেলে সতীত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠারই অবকাশ থাকে না ।
বিয়ের জন্য মোটামুটি সব ছেলেই সতী নারী খোঁজে অথচ তার হাতে 'সতীত্ব' হারানো মেয়েটির কথা একবারও ভাবে না ! যদিও অধিকাংশ কেসেই দেখা যায় ছেলের ইচ্ছায় বা জোরাজুরিতেই মেয়ের যৌন সম্পর্কে সম্মতি দেয় । অনেক ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্কে রাজী না হলে ধর্ষনের হুমকি, কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষনও করা হয় ।
যদি সব ছেলে নিজের জন্য সতী মেয়ে চায়, তাহলে অবশ্যয়ই সব মেয়েকে সতী হতে হবে । কোনো মেয়েরই বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা চলবে না । সেক্ষেত্রে কোনো ছেলেই 'অবৈধ' যৌন সম্পর্কের জন্য মেয়ে খুজে পাবে না ।
কিন্তু সেটা অসম্ভব ব্যাপার । নিজের বউকে সতী হিসেবে চাইলেও 'আধুনিক' ছেলেরা বিয়ের আগ পর্যন্ত নিজেকে কুমার রাখতে চাইবে না কখোনই ! সবার কথা বলছি না , তবে বেশিরভাগই । এদের একটা অংশ অবশ্য সুযোগের অভাবে সত্‍ ।
যেখানে একটা ছেলে নিজেকে 'কুমার' রাখতে পারছেনা (বা রাখতে পারছে না বা রাখছে না) সেখানে তার বিবাহের কনে হিসেবে একটা সতী মেয়ে চাওয়া হাস্যকর , অবান্তর ও এক ধরনের গোয়ার্তুমি ।
সতী মেয়ে চাইলে নিজেকে সত্‍ রাখতে হবে , আর নিজে সত্‍ না থাকতে পারলে 'সতীত্ব' শব্দটাকে অভিধান থেকে তুলে দিতে হবে ।
পতীতাবৃতি, সমাজের সবচেয়ে নিচু শ্রেণীর অপবিত্র প্রাণী । অথচ পতীতাদের সাথে সঙ্গম করলে তারা অপবিত্র হয় না । কি অদ্ভুদ । পুজিবাদি সমাজের নিষ্পেষনে একটা মেয়ে পতিতা পেষায় গেলে তার দায়িত্ব সমাজের প্রত্যেকটা স্তরের প্রতেকটা মানুষের । কিন্তু তার প্রতি যে সহানুভুতিতা দেখানো উচিত্‍ সেটা কেউই স্বীকার করে না । এমনকি তাকে অনুদান পাওয়ার যোগ্যও মনে করে না ! তাকে বা তার পরবর্তী প্রজন্মকে তাদের অবস্থান থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা ত অলীক কল্পনা মাত্র ! তাহলে সমাজ পতীতামুক্ত হবে কীভাবে ?
হওয়ারই বা কি দরকার ! তাহলে পুরুষরা তাদের লালসা মেটাবে কোথায় ?
অবশ্য উচ্চাভীলাসী হয়ে যেসব মেয়ে নিজেকে পন্য বানিয়ে উপার্জন করে সেইসব সেলেব্রিটিদের কথা আলাদা ! তারা ত সেলেব্রিটি ! তাদের স্বাধীনতাটা একটু বেশীই !
প্রেম, ধর্মগ্রন্থে বড় বড় প্রেমের উপাখ্যান মোটা কালিতে লেখা থাকবে, সেইসব শ্রুতিমধুর প্রেমকাব্য শুনে নারিপুরুষ পুলকিত হবে , পর্দায় প্রেম দেখে পাত্রপাত্রিদের সবাই মিলে বাহবা দেবে অথচ নিজের ছেলে মেয়ের প্রেমের কথা শুনলেই মহাভারত আর শুদ্ধ থাকে না ! তখনই প্রেমের পাসে 'পবিত্র' শব্দটা আর বসানো যায় না ! তখন প্রেম হয়ে যায় অবৈধ ! উচ্চমার্গীয় অপরাধ !
কিছু কিছু ছেলে প্রেমের জন্যও বিবাহের মতো 'আনকোরা' মেয়ে খোঁজে নিজে কয়েকহালি প্রেম করার পরও ! অবশ্য হালের প্রেম একটা ফ্যাশান হয়ে দাড়িয়েছে । এরসাথে মানসিক ভালোলাগা বা সত্যিকারে ভালোবাসার কাকতালীয় সম্পর্কও নেই ।
মেয়েদের সম্পর্কে সমাজে বহুত ধারনা প্রচলিত আছে । এগুলোর অর্থ একত্র করলে মোটামুটি যা দাড়ায়, তার অর্থ মেয়েরা ভিন্ন প্রজাতীর একটা প্রাণী , এদের মেধাকে ব্যাবহার করে সমাজকে এগিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই , এরা সমাজের নষ্টের মুল ইত্যাদি আরো অনেক ।
আমরা যারা সমাজকে পাল্টাতে চাই তাদের জন্য সবচেয়ে দুঃখজনক খবর হলো অনেক মেয়েই নিজের সম্পর্কে অনুরুপ ধারনা পোষন করে ।
ব্লগ কমিউনিটিতে যারা আছেন তারা হয়তো উপরোক্ত অনেক পরিস্থিতির সাথে পরিচিত নন, কিন্তু বাস্তবতা হলো শহরের হাতে গোনা কিছু অংশ ছারা দেশের অধিকংশের অবস্থাই অনুরুপ !
আসলে আমাদের পুরো সমাজটাকে নিযে একটা ইউনিভার্সিটি ভর্তি করতে হবে । শতভাগ না হলেও শিক্ষার হারটাকে এর কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে । আর শিক্ষা পদ্ধতি থেকে অপশিক্ষাগুলো দূর করতে হবে যাতে ভার্সিটিগুলো থেকে অন্তত কোনো 'শিক্ষিত-কীট' না বেড় হয় ।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×