somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজয় আহমেদের বই থেকে কয়েকটি কবিতা

২২ শে এপ্রিল, ২০০৮ সকাল ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিজয় আহমেদ কখনোই আমার বন্ধু নয় (কবিতে কবিতে বন্ধুত্ব অসম্ভব)। কারো কবিতা ভাল লাগতে হলে বন্ধু হবার দরকার পড়ে না। বিজয়ের প্রথম বই ‌`সার্কাস-তাঁবুর গান' প্রকাশিত হয়েছে গত বই মেলায়। সে বই থেকে আমার কিছু ভাল লাগা কবিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করা যায় বলে মনে হলো।



ভাষা

আর কতো যাদু যে দেখাবে, বলো?
আমি তো ঘাসফুল হয়ে আছি, এ নীলচে পৃথিবীতে!
আমার বুককে বানিয়েছি ধাঁধার শশ্মান, যেখানে
অজস্র ঘাসের হুল্লোড়;
আর যেসব ঘাসফুল দেখে, তুমি
বোকা পর্যটক হয়ে যাও,
তা আমার ইশারাহাসি,
তা আমার শৈশবের উদভ্রান্ত নীলিমা,

আর যে নদীটাকে দেখো তুমি,
সোনার খনির পাশ দিয়েই বয়ে গেছে, রোমহর্ষক জ্বরে ভুগে ভুগে
কোল্ডড্রিঙ্কস হাতে,
সে আমার স্বপ্ন, সন্তান, আর সম্ভাবনা!

আমি তাকে মুনিয়া পাখির মতো পুষেছি
তুমি কি বোঝো তার ভাষা, গুপ্ত-ইঙ্গিত, বলো?

ধান

পাখি তাড়াই বলে আমার বন্ধুটি গ্রামপুলিশ হয়ে যায়!
তখন সে হেসে উঠলে বলি, দোস্ত হাসিস না,
আমার বাবা ভয় পেয়ে যাবে!
কেননা এক ধানের দিনে, তোর মতই এক পুলিশ
তার চতুর ভাষায়, সোনালী বাঁশির ভূতগ্রস্ত সুরধ্বনির মায়ায়,
শুনিয়েছিল জিপসীদের গান

পাখি তাড়াই বলে, দোস্ত, তুই যতই
গ্রামপুলিশ হয়ে উঠছিস, ততই আমি ভুলে যাচ্ছি গান, আর ভুলে যাচ্ছি
আজ ইভনিং-এ সিনেমা দেখার কথা ছিলো?

পাখি তাড়ানো বন্ধু আমার, জানি না
তোর চোখের ভাষায়, ইঙ্গিতে, কেন এতো বিদেশ-বিদেশ?



ফড়িং ও আমি

আমি আসলে ফড়িং পছন্দ করি;
ছোট্টবেলায় অনেকগুলো দুপুর ও সূর্য কাটিয়েছি আমি
ফড়িংয়ের পিছু দৌড়ে

কিন্তু কেন যেন ওরা আমাকে একদম পছন্দ করতো না!
ওরা কথা বলতো ঝোঁপঝাড়ের সাথে,
ফলে আমি, ঈর্ষা করতাম ফড়িং ও তার বন্ধুদের!

আর ভাবতাম বড় হয়ে যখন আমি
লাল রঙের টাইমফেল রেলগাড়ি হবো
তখন ওদের পাত্তাই দেবো না!

আনন্দ

জবাফুলই নাকি আনন্দ!
এমনটাই বললো এক লাল-মোরগ; বলেই,
সে কী হাসাহাসি গো!
আর কী লুটোপুটি মার্বেল-ধুলোয়, ৬ ফুট ১ ইঞ্চি দাদাবাবুর ছায়ায়?
তাই দেখে মনে হলো
এক্ষুনি হই তবে জবাফুলের ছেলে?

আমার মা হবে আনন্দ তখন
আর আমি হবো সরলা হাসাহাসি গো!

হাসাহাসির গল্প

দাদা, আজ বড়ো বেশি হাসাহাসি হলো!
আমরা বললাম, প্রেম হবে। অথবা সমুদ্র-ভ্রমণে যাবো।
মেয়ে-হলের সামনে দাঁড়ানো আমার বন্ধুটি
একটা আর্টফিল্মে দেখা বনভোজনের গল্প শোনালো।
শুধুই শুনলাম আর ভাবলাম, আজো
বাইসাইকেল থিফ দেখা হলো না, অথচ বাবা ও ছেলের মধ্যে
যে বৃষ্টিময় গুহাগুলো চিরদিন লুকানো থাকে,
তাদের ইশারাহাসিও কি দেখেছি কোনোদিন?
ইশারাহাসি, অথবা এইসব অদ্ভুত রসায়নের কথাও নাই-বা বললাম;
বলি, বন্ধু নষ্ট হয়ে যাচ্ছি। হাসতে পারছি না
আগের মতো। বাসে উঠে নিরীহ মানুষজনকে
জোকসও শোনাতে পারছি না!
অথবা বলতে পারছি না,
আর কতদিন পরে,
বাঁকের ভিতর হারিয়ে যাওয়া নির্জন গ্রামে যাবো?
অথবা একটা পাখির নীলচে ডিমের ভিতর
উত্তুঙ্গ নৃত্যের ধাঁধায় পথ হারাবো?


সার্কাস-তাঁবুর গান

সার্কাসের অতিকায় তাঁবু দেখে আমার ভিতর
বিষাদ জেগে ওঠে;
মনে হয়, এই বুঝি অখণ্ড ভারতবর্ষ,
যেখানে একদল কাকতাড়–য়ার সাথে
একটা পা-খোঁড়া বাঘ ও বামনের সম্পর্ক;

যা খুবই রহস্যময়,
আর এই রহস্যের চূড়ায় ওঠার জন্যেই, কতগুলো মানুষ
বৃষ্টিময় টিকিট কাটছে।

আর এই সম্পর্কের যাদুর কারণেই,
কয়েকজন মানুষ আজ ব্ল্যাকার;

তারা টিকিট টিকিট বলে চিৎকার করে উঠছে
সিনেমার ভিলেনের মতো

১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×