আল্লাগো! কি ভূমিকম্প রে!
আমি কম্পিউটারে বসে ছিলাম। একটা মুভি ডাউনলোড দিছিলাম। হঠাত দেখি চেয়ার-টেবিল সব কাঁপতেছে। ঢাকার মানুষ দেইখাই বুঝছি ভূমিকম্প। আমি বসে আছি। এমন সময় খটকা লাগলো কিরে ভাই এতক্ষণ ধরে তো ভূমিকম্প আগে কখনো দেখি নাই! আমি আজান দিতে দিতে দৌড়ায়ে ডাইনিং রুমে গেলাম। আম্মু, তৌসিফ ভাইয়া, নানা ভাইয়া-নানু আপু সবাই একসাথে জড়ো হয়েছে। বাইরে মানুষের আতঙ্কিত চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে। আমরাও সবাই লাইট-ফ্যান নিভিয়ে তাড়াতাড়ি বাইরে চলে আসলাম। পাশের বাসাগুলো থেকেও সবাই বের হয়ে এসেছে। সি ফ্ল্যাটের এক মহিলা যে কিনা খুব সাজুগুজু করে আর ছোট ছোট চুল নিয়ে ঘুরে সে দেখি সবার আগে দোয়ায় ইউনুস পড়া শুরু দিছে! তবে এত দ্রুত পড়ছে যে লায়েলাহা ছাড়া আর কিছু বোঝা যাচ্ছে না। আমরাও সবাই দোয়ায় ইউনুস পড়তে লাগলাম। আরেক আঙ্কেল জায়নামাজ টুপি সহ বের হয়ে এসেছেন। তিনি বললেন ভূমিকম্পের চোটে তাঁর এমন মনে হচ্ছিল যে তিনি আরেকটু হলেই জায়নামাজ থেকে পড়ে যাচ্ছেন! সবার মুখ শুকিয়ে গেছে নানান আশঙ্কায়। নানা ভাইয়াকে একটা চেয়ারে এনে বসানো হল। তিনি কাঁদছিলেন। এই ভূমিকম্প সবার মনে এত ভীতি সঞ্চার করেছিল যে বলার মত নয়। মনে হচ্ছিল একটা দৈত্য আমাদের বাসাটাকে দুই হাতে ধরে ঝাঁকাচ্ছে! এবং সবচেয়ে ভীতিকর ব্যাপারটা হল যে বিল্ডিংটা ভেঙ্গে পড়লেও আমাদের করার কিছু নেই! আমরা থাকি নয় তলায়। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে কাম খালাস! অতঃপর প্রায় মিনিটখানেক আমাদের শরীর মন দুটিই কাঁপায়ে ভূমিকম্প বিদায় নিল। টিভিতে দেখি সব চ্যানেলে সুপার ডুপার কুপার ব্রেকিং নিউজ নগরে ভূমিকম্প!
এখন চেয়ারে বসেও মনে হচ্ছে এই বুঝি হল ভূমিকম্প! হয়তো হবে, অথবা হবে না, কে জানে। সামুতে সবাই লিখছে ভুমিকম্প থেকে আল্লা বাঁচাইসে এইসব। কিন্তু এটা কি আমাদের আচরণে আদৌ কোন পরিবর্তন আনবে? আমরা কি সত্যি জীবনের সব ক্ষেত্রে ধর্মভীরুতা আর সততার সাথে চলব নাকি আগের মতই সব খারাপ কাজ বহাল রেখে কেবল আজাব আসলে চিল্লায় চিল্লায় আজান দেব আর বলব আল্লাহ এবারের মত মাফ কইরা দেন?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




