somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি বাংলাদেশ বলছি

২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রিয় দেশবাসী,
কিছুদিন যাবত অত্যন্ত বেদনা নিয়ে লক্ষ্য করছি ভাস্কর্য বনাম মূর্তি নিয়ে সবাই আলোচনা করছেন সমালোচনা করছেন। কেউ ধর্মের পক্ষ নিচ্ছেন, কেউ আধুনিকাতার পক্ষ নিচ্ছেন, কেউ হয়তো শিল্পমনার পরিচয় দিয়ে শিল্পের পক্ষ নিচ্ছেন। তবে পক্ষ নিচ্ছেন এ কথা সত্যি এখানে কোনো দ্বিমত নেই। কেউ কি দয়াকরে আমার পক্ষ নিয়েছেন? জ্বী আমি বলছি - আমি বাংলাদেশ

কেউ কি রাষ্ট্রপক্ষ নিয়েছেন? কেনো রাষ্ট্রপক্ষ নিতে পারেন নি? রাষ্ট্রপক্ষ নেওয়া কি বড় ধরনের অপরাধ! রাষ্ট্রপক্ষ নিতে হলে কি আপনাদের শিল্প শিক্ষা জ্ঞান ধুয়ে মুছে চলে যাবে? আপনারা কথায় কথায় শিল্পের অহংকার করেন, শিক্ষার অহংকার করেন, জ্ঞানের অহংকার করেন। রাষ্ট্র নিয়ে অহংকার করার মতো কোনো কাজ কি আপনাদের জ্ঞান শিক্ষা শিল্পে নেই!

আমি ভাস্কর্য মূর্তির বিরোধিতায় নেই। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমার বুকে সবার স্থান হয়েছে। আপনারা কিছুদিন পরপর কেনো ভাগাভাগি করে দাঙ্গা হাঙ্গামা তৈরি করে রক্তপাত করেন - আর কতো কাল! আর কতো কাল এমন হবে? নাকি চলতে থাকবে অনাদি অনন্তকাল! আপনাদের আলোচনা সমালোচনায় কেনো মূর্তি প্রসঙ্গ আসবে? - একটি ধর্মের অত্যন্ত সম্মানিত দেব দেবীর কল্পিত অবয়বে তৈরি হয়ে থাকে মূর্তি। ভাস্কর্যের সাথে মূর্তি প্রসঙ্গ কেনো আসবে। মানুষ ভক্তি ভরে মূর্তি পূজা প্রার্থনা করেন, মূর্তির কাছে মানুষ নিজেদের দুঃখ দুর্দশা কষ্টের কথা বলেন - তাতে করে মনে তৃপ্তি খুঁজে পান। মূর্তি হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ বছরের পুরোনো বিষয় যা অত্যন্ত সম্মানিত দেব দেবীর আদলে তৈরি আর ভাস্কর্য যে কোনো ব্যক্তির আদলে হতে পারে। মূর্তি প্রসঙ্গ এখানেই সমাপ্ত।

ব্লগ ফেসবুক টু্ইটার সয়লাব হয়ে গেছে আপনাদের ভাস্কর্য সমালোচনায়! নানা দেশের বিশ্ব বিখ্যাত ভাস্কর্য উদাহরণ দিয়েছেন! আপনার নিজ দেশে বিশ্ব বিখ্যাত এমন ভাস্কর্য কয়টি আছে? আপনার দেশে এখন পর্যন্ত ভাস্কর্য নামে যা হয়েছে এগুলো ভাস্কর্য! যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আপনারা যেমন মিশর তুরস্ক সৌদি আরবের ভাস্কর্য উদাহরণ টেনে এনেছেন, মিশর সৌদি আরবের নাগরিক আপনার দেশের ভাস্কর্যের উদাহরণ দেওয়া তো দুরের কথা - তারা আপনাদের ভাস্কর্য না চিনে, না জানে, না দেখেছে, না কখনো দেখার সম্ভবনা আছে! কারণ কি? কারণ আপনারা ভাস্কর্য নামে যা তৈরি করেছেন তা না হয়েছে শিল্প না হয়েছে ভাস্কর্য! এগুলো নিছক নির্মান বলা হলেও আমি রাষ্ট্রের ভুল বিনিয়োগ। জ্বী আমিই রাষ্ট্র! আমিই বাংলাদেশ।

আমি হতদরিদ্র দুঃখী একটি দেশ। সমগ্র বিশ্বে আমার নামের পাশে হতদরিদ্র একটি চিত্র আঁকা হয়। আপনাদের যেমন লাভ লোকসান আছে আমারও লাভ লোকসান আছে। প্রিয় দেশবাসী আপনাদের দেশে প্রবাসের কয়জন নাগরিক ভাস্কর্য দেখতে আসেন! সেই ভাস্কর্যের ছবি তুলে কতোজন ফেসবুক টুইটার ইন্সটাগ্রাম পিন্টারেস্টে শেয়ার করেন? প্রবাসিরা কয়জন আপনার দেশের নাম ও দেশের ভাস্কর্যের ছবি প্রচার করেন? কিন্তু আপনারা গত কয়েকদিনে ভাস্কর্যের নামে নানা দেশের - নানা দেশের ভাস্কর্যের সুনাম ও প্রচার করেছেন? এই প্রচারে টাকা কি আপনাদের সৌদি আরব, মিশর, তুরস্ক দিয়েছেন - নাকি টাকা আপনার হতদরিদ্র এই দেশটির?

আপনারা কি এমন ভাস্কর্য তৈরি করতে পারেন যা দেখতে ভিনদেশীরা ছুটে আসবেন ছবি তুলে নিয়ে যাবেন, নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগে ভাস্কর্য প্রাঙ্গণ হতে ছোট একটি ভাস্কর্যের সুভেনিয়র কিনে নিয়ে যাবেন! আপনাদের এই হতদরিদ্র দেশটি এই ভাস্কর্য বিনিয়োগে আয় করতে পারবেন, সম্ভব কি?


ইতি

আপনাদের হতদরিদ্র জনম দুঃখী দেশ
বাংলাদেশ


========================================================================
উপসংহার: ভাস্কর্য হতে হবে দেশের গৌরব, দেশের ইতিহাস, দেশের সৌন্দর্য, দেশের পর্যটন, সর্বোপরি দেশের ভালোবাসা। ভাস্কর্য যদি দেশের ভুল বিনিয়োগ হয় তাহলে এই ক্ষতি দেশের সমগ্র দেশবাসীর।
========================================================================

উৎসর্গ: আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন ব্লগার। প্রিয় ব্লগার - বিদ্রোহী ভৃগু ভাই।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষ।







সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০৬
২৯টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×