somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রথম ভৌতিক অভিজ্ঞতা

২৭ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগের কথা। আমি এস এস সি পরীক্ষা শেষ করেছি। আম্মাকে বললাম অনেকদিন মামা বাড়ি যায় না চলো এবার ঘুরে আসি। আম্মা বললেন ঠিক আছে চল কিন্তু বেশিদিন থাকা যাবে না। আমি আমার মা ও ছোট ভাই মিলে মামার বাড়িতে গেলাম। তখন এপ্রিল মাস। আমরা প্রায় দুই বছর পর মামা বাড়ি গিয়েছিলাম বলে আমাদেরকে নিয়ে অনেক হৈচৈ শুরু হয়। সব খালারা আসে। মামাদের বাড়িটা দেখলেই ভয় লাগে বলতে গেলে বাড়িটা কবরস্থানের মধ্যেই, বাড়ির উত্তর ও পূর্ব দেওয়াল ঘিশেই গোরস্থান দক্ষিনে বড় পুকুর এবং পশ্চিমে পাকা রাস্তা, রাস্তার ধারেই বড় একটা তেঁতুল গাছ। প্রথমে ভয় ভয় লাগলেও পরে ‍অবশ্য সেরকম ভয় লাগছিল না।
মামার বাড়ি হতে দুই কিমি দূরে নওদাপাড়া নামক স্থানে একটি ইসলামিক মহাফিল হচ্ছিল। মামা আমাদেরকে ঐ মহাফিল শুনতে যাবার প্রস্তাব দিলেন, আমি রাজি কারণ বাইরে যেতে পারব বলে। আমি, বড়মামা, ছোটমামা, বড়খালা এবং মামার এক বন্ধু মিলে রওনা দিলাম। আপনারা জানেন যে ইসলামিক মহাফিল অনুষ্ঠান গুলো রাতে শুরু হয় এবং গভীর রাতে শেষ হয়। আমরা ঐ স্থানে পৌঁছুলাম রাত আট টার সময়। মহাফিল শেষ হতে প্রা য় রাত দেড়টা বেজে যায়। আমরা ওখানে গিয়ে ছিলাম ভ্যানে চড়ে কিন্তু আসার সময় কোন ভ্যান বা রিকশা না পেয়ে আমরা পায়ে হেঁটে বাড়িতে আসতে লাগলাম। আমরা যে রাস্তাটা দিয়ে যাচ্ছিলাম তার একটু বিবরণ দিই, রাজশাহী তো আমের জায়গা মামাদের এলাকায় প্রচুর আমআগান রয়েছে। যেগুলো আনেক বড় বড় রাতের বেলা এগুলোকে দেখতে রীতিমত দৈত্যের মত দেখায়। আমগাছের ফাঁক দিয়ে এঁকে বেঁকে গেছে চিকন রাস্তাটা। চারিদিক খুবই নীরব ছিল কোন প্রকার শব্দ হচ্ছিল না এক অস্বস্তিকর নীরবতা বিরাজ করছিল। আমরা পাশাপাশি হাঁটছিলাম। আমি মোটামুটি সাহসী একটা ছেলে তারপরও ঐসময় প্রচন্ড ভয় লাগছিল। সে সময় আমার আম্মা আমাকে ফোন দিলেন, বললেন- তুই তাড়াতাড়ি বাড়ি আয় আমার শরীর প্রচন্ড খারাপ। বলে তিনি ফোন রেখে দিলেন। আমি মামাদেরকে বললাম এবং বাড়ির দিকে দৌড় দিলাম। সে সময় আমার মধ্যে কোন ভয় কাজ করছিলনা মায়ের কাছে যাবার প্রচন্ড ঘোর কাজ করছিল। আসতে আসতে এক সময় আমার মনে হলো আমার পেছনে কে যেন দৌড়ে আসছে আমি মনে করলাম মামারা মনে হয় আসছে। এক সময় আমি কোন কিছুর সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে গেলাম। দেখলাম আমি এক বাঁশ ঝাড়ের নিকট পড়ে আছি আর বাঁশ গুলো সব রাস্তার উপর শুয়ে আছে কোন ভাবেই তা পার হওয়া যাবেনা। আমার শরীর তখন অবশ হয়ে গেছে। আমি উঠে দঁড়াতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। মনে হচেছ আমি কোন পুরানো স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে দাঁড়িয়ে আছি ঠিক মত দাঁড়াতেও পারছিনা পড়ে যাচ্ছি কার মেঝেটা অসম্ভব রকমের পিচ্ছিল। কিন্তু আমি তখনও সেই রেডের উপর দঁড়িয়ে আছি। তারপর সবচেয়ে ভয়ংকর জিনিষটা দেখলাম। দেখলাম যে, আমার চারদিকে চারটি কাল রংয়ের কুকুর দাঁড়িয়ে আছে যাদের চোখ গুলি জ্বল জ্বল করছিল। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হল, কুকুর গুলোর আকার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপর আমার ঘাড়ের কাছে একটা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করলাম। চোখে ঝাপসা দেখতে লাগলাম। মনে হলো আমি জ্ঞান হারাচ্ছি কিংবা মারা যাচ্ছি। জ্ঞান ফিরে আমি দেখি আমি মামার বিছনায়। পরে জানতে পারলাম মামারা আমাকে ঐ স্থান হতে নিয়ে এসেছে। তবে তারা নাকি দেখেছে আমার মাথার কাছে একটা সাদা রংয়ের বিড়লি বসে আছে। এই ছিল আমার ঘটনা। এটা ভৌতিক বা এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখা আছে কি না সেই তর্কে যাব না। এটা ভৌতিক ব্যাপারও হতে পারে আবার হ্যালুসিলেশনও হতে পারে। তবে এটা অত্যান্ত ভয়ংকর অভিজ্ঞতা কেও যেন এরকম পরিস্থিতির স্বীকার না হন। আল্লাহ্ হাফিজ।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×