ঘটনাঃ ০১
আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমাদের বাড়ি গ্রামে, যৌথ পরিবার। দাদা দাদী আমাদের সাথে থাকেন। আমার এক চাচা বছর পাঁচ আগে আমেরিকা গেছে। দাদীর মুখে সবসময় সেই চাচার সুনাম। কথায় কথায় সেই চাচার প্রসঙ্গ উঠে। বছরে একবার দেশে আসেন। যা হোক মুল ঘটনায় আসি। এক সময় শোনা যেতে লাগল, চাচা নাকি বিয়ে করেছেন। একথা শুনে দাদী সে কি কান্না। কোন ভাবেই তাকে থামাতে পারা গেল না। চোখে পানি নাই কিন্তু সবসময় প্যানপ্যানানি। চাচা বিয়ে করেছেন এক আমেরিকান মেয়েকে। আমাদের কত যল্পনা কল্পনা চাচী দেখতে কেমন হবে? আমাদের সকল চিন্তার অবসান ঘটল চাচার চিঠি পেয়ে। চাচা নাকি সামনের মাসের তিন তারিখে আসছেন। দাদীর একটাই বক্তব্য “হারামিটারে ঝাঁটা পিটা করব” । আমরা অপেক্ষা করে থাকলাম কবে তিন তারিখ আসবে। চাচা আসবে, বিদেশী চাচী আসবে। অবশেষে চাচারা এল। আমার দাদীর ছেলের উপর থেকে সকল রাগ মুছে গেল। চাচা দাদীকে সালাম করলেন। দাদী বললেন “ওই স্বপন তোর বউ কই? তোর পাশে এটা কে? তোর শশুর নাকি?’’ চাচা বললেন ‘এটায় তোমার বউ মা।’ দাদী তো উল্টে পড়ে গেলেন, আমাদেরও মাথা নষ্ট হবার যোগাড়, কারণ যাকে চাচী বলে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন তিনি পরে আছেন শার্ট প্যান্ট, তার চুল ছোট করে কাটা এবং সবচেয়ে হতবাক করার মতন বিষয় হল তার মাথার চুলের রঙ আমার দাদার চুলের মত সাদা।
ঘটনাঃ২
এবারকার ঘটনা ক্লাস টেনের। নিউ টেনে উঠেছি, স্কুলের সবচেয়ে বড় ক্লাসের ছাত্র এটা ভাবতেই অন্যরকম লাগত। আমাদের হেডস্যার একটি মাত্র ক্লাস নেন সেটা টেনের ইংরেজি ক্লাস। এমনিতেই স্যার এর অনেক নাম ডাক, তিনি সুনিপুণ ভাবে ছাত্র পেটাতে পারেন। কাজেই এবার হেডস্যারের ক্লাস পাব। কেমন যে স্যার পড়াবে সেটা নিয়ে প্রায় বন্ধুরা মিলে আলোচনা করতাম। স্যার প্রথম দিন ক্লাসে আসলেন, বিশাল এক বেত হাতে নিয়ে। আমাদের তো সিগন্যাল যুম আলট্রা বরাবর আপ-ডাউন করছে। স্যারের ক্লাসে ঢুকে প্রথম কথা, ‘ফাস্ট বয় কে?’ তিনি এমন ভাবে কথাটা বললেন যেন তাকে শাস্তি দিবেন। খারাপ নসিব, আমি ছিলাম তখনকার ফাস্ট বয়
ঘটনাঃ ০৩
এটা ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ এর ঘটনা। সেদিন টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের বাংলাদেশের বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার খেলা। আমার আব্বা পড়াশোনা জানেনা। কিন্তু তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের বিশাল ফ্যান। প্রতিটি খেলা দেখেন। আমি, আব্বা ও আমার ছোট ভাই একসাথে খেলা দেখছি।বাংলাদেশের সেদিনের পারফমেন্স দেখে আব্বার উক্তি- ‘বান্দর দ্যুটা খেলবে কিভাবে? একজন ব্যাট করতে নেমেছে স্নো ম্যাখ্যা, আর একজন বিস্কুট খইয়া।’ তামিম এবং সাকিব সম্পর্কে এই উক্তির কারন হল, খেলা দেখছিলাম বিটিভি তে সেদিন ব্রিটল বিস্কিট আর ফেয়ার অ্যান্ড লাভলীর বিজ্ঞাপন বেশি দেখাচ্ছিল।
ঘটনাঃ ০৪
আমার দাদীর ভাই আমেরিকাতে থাকেন। অনেকদিন পর দেশে এসেছেন। আমাদের বাড়িতে এসেছেন দাদীর সাথে দেখা করতে। সবার সাথে দেখা করার পর সবাইকে একটা করে ছোট্ট প্যাকেট দিয়ে বললেন এটা খাবে। দাদারা চলে গেলেন। আমরা সবাই প্যাকেট ছিঁড়লাম গোল একটা বস্তু বের হল। খুব সুন্দর গন্ধ, ভাবলাম মিষ্টি টিস্টি হবে। সেটা মুখে পুরে চিবাতেই আছি শেষ আর হয় না। কি ব্যাপার? বাড়িতে তো পুরা হুলুস্থল কাণ্ড। সেই বস্তু না যাচ্ছে খেয়ে শেষ করা আর না পারছি গিলতে। আসলে বস্তুটি ছিল চুইং গাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ১০:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




